মুরাদ বিন আমজাদ
প্রশ্ন : কী কী কারণে সিয়াম ভঙ্গ হয়?
উত্তর-
নিম্নোক্ত যে কোনো কারণ দেখা গেলে সিয়াম ভঙ্গ হয়ে যাবে :
১. ইচ্ছা পূর্বক পানাহার ও ধুমপান করা। ২. স্বেচ্ছায় বমি করা। ৩. স্বামী স্ত্রীর মিলন। ৪. বৈধ অবৈধ যে কোনো প্রকার যৌনক্রিয়া। ৫. পানাহারের বিকল্প কিছু গ্রহণ করা। যেমন- ইনজেকশন বা রক্ত গ্রহণ করা। আর তা এমন ইনজেকশন যার মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করা হয়। ৬. মাসিক স্রাব ও প্রসবোত্তর স্রাব।
প্রশ্ন : সিয়ামের নিয়ত কখন করতে হবে?
উত্তর-
ফজর উদয় হওয়ার আগেই অর্থাৎ রাতের মধ্যেই নিয়ত করে ফেলতে হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
مَنْ لَمْ يُجْمِعْ الصِّيَامَ قَبْلَ الْفَجْرِ فَلاَ صِيَامَ لَهُ
১. যে ব্যক্তি ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগেই সিয়াম পালনের নিয়ত করল না তার সিয়াম শুদ্ধ হলো না। (আবূ দাঊদ : ২৪৫৪)
مَنْ لَمْ يَبِيْتِ الصِّيَامَ مِنَ اللَّيْلِ فَلاَ صِيَامَ لَهُ
২. যে ব্যক্তি রাতের মধ্যেই সিয়ামের নিয়ত করল না তার সিয়াম শুদ্ধ হলো না। (এ নির্দেশ শুধুমাত্র ফরজ রোজার ক্ষেত্রে) (নাসাঈ : ৪/১৯৬
প্রশ্ন : গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারীণী সিয়াম রাখবে কি?
উত্তর-
গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারীণী সিয়াম পালন করলে নিজের বা সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা থাকুক বা না থাকুক উভয় অবস্থায় তাদের সিয়াম ভঙ্গ করা জায়েজ আছে এবং পরে তা কাজা করে নেবে। পরে করলে তারা সিয়াম পালনও করতে পারে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
إِنَّ اللهَ تَعَالَى وَضَعَ عَنْ الْمُسَافِرِ الصَّوْمَ وَشَطْرَ الصَّلاَةِ وَعَنْ الْحَامِلِ أَوْ الْمُرْضِعِ الصَّوْمَ أَوْ الصِّيَامَ
‘‘আল্লাহ রববুল ‘আলামীন মুসাফিরদের সালাত অর্ধেক কমিয়ে দিয়েছেন এবং গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীদের সিয়াম না রেখে পরে আদায় করার অবকাশ দিয়েছেন। (তিরমিযী : ৭১৫)
তাদের বিষয়টি সাধারণ রোগী ও মুসাফিরের সিয়ামের মাসআলার অনুরূপ।
তাছাড়া মহিলা শারীরিকভবে যদি শক্তিশালী হয় এবং সন্তানের কোনো ক্ষতির আশঙ্কা না করে তাহলে সিয়াম পালন করতে পারে। আর যদি সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে তাহলে সিয়াম ভেঙে ফেলা ওয়াজিব।
প্রশ্ন : কতটা অসুস্থ হলে সিয়াম ছাড়া বৈধ?
উত্তর-
রোগের কারণে যদি স্বাভাবিক সুস্থতা হারিয়ে ফেলে, ডাক্তার যদি বলে যে- এ সিয়ামের কারণে রোগের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে বা রোগীর ক্ষতি হতে পারে বা সুস্থতা বিলম্বিত হতে পারে তবেই রোজা ভাঙবে। কিন্তু সামান্য অসুখ যেমন মাথা ব্যথা, শর্দি, কাশি অনুরূপ কোনো সাধারণ রোগ বালাইয়ের কারণে সিয়াম ভঙ্গ করা জায়েজ হবে না। মনে রাখতে হবে যে, রোগের কারণে যেসব সিয়াম ভঙ্গ হবে ঠিক অনুরূপ সংখ্যক সিয়াম পরে কাজা করতে হবে।
প্রশ্ন : সিয়ামের কাজা ও কাফফারা কী?
উত্তর-
অনিচ্ছাকৃত বা উজরবশত ছুটে যাওয়া সাওমের বদলে কাজা, আর উজরছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেয়া সাওমের বদলে দিতে হয় কাফফারা। কাজা হলে সম পরিমাণ সাওম আদায় করতে হয়। আর কাফফারা হলে, সাওম না রাখার কারণে সুনির্দিষ্ট কিছু কর্তব্য পালন করতে হয়। কাফফারা তিন ধরনের-
(১) গোলাম আজাদ করা, আর তা সম্ভব না হলে, (২) একাধারে ৬০টি রোজা রাখা, আর সেটিও সম্ভব না হলে, (৩) ৬০ জন মিসকিনকে এক বেলা খানা খাওয়ানো।
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক : মুসলিম উম্মাহ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড