ধর্ম ডেস্ক
গত পর্বের পর-
যাদেরকে জাকাত দেওয়া যায়-
মাসআলা- গরীব ফকির লোককে জাকাত দিতে হবে। ধনী লোককে জাকাত দেওয়া যাবে না। ধনী দুই প্রকার। এক. যার জাকাতের নেসাব পরিমান মাল রয়েছে। এমন লোক জাকাত আদায় করবে। দুই. যার উপর জাকাত ওয়াজিব হয়নি বটে তবে তার প্রয়োজন অতিরিক্ত এমন সম্পদ রয়েছে যার মুল্য জাকাতের নেসাবের মুল্য সমপরিমান। এমন লোকের উপর জাকাত ওয়াজিব নয় তবে ছদকায়ে ফেতর ও কুরবানী ওয়াজিব। উপরোক্ত দুই প্রকার ধনীকেই জাকাত দেওয়া জায়েয নেই।
মাসআলা- অমুসলিমকে জাকাত দিলে তা আদায় হবে না।
মাসআলা- ঋনী ব্যক্তিকে জাকাত দেওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হল ঐ ঋনী ব্যক্তির ধন আদায়ের পরে যেন নেসাব পরিমান সম্পদ না থাকে। যদি তার ঋণ আদায়ের পরেও তার নিকট নেসাব পরিমান সম্পদ থাকে তবে তাকে জাকাত দেওয়া জায়েয নেই।
মাসআলা- যার নিকট নেসাব পরিমান সম্পদ আছে তাকে জাকাত দিলে আদায় হবে না।
মাসআলা- উসূল ও ফুরু কে জাকাত দেওয়া যায় না। উসুল বলতে বুঝায় যাদের মাধ্যমে সে দুনিয়াতে এসেছে। যেমন মা-বাবা, দাদা-দাদী, নানা-নানী পরদাদা-পরদাদী এভাবে যত উপরে উঠবে। ফুরু বলতে বুঝায় ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনী, পোত-পুতনী এভাবে যত নিচে নামবে। অর্থাৎ তার মাধ্যমে যারা দুনিয়াতে এসেছে।
মাসআলা- দুধ-মা, দুধ-সন্তান ও দুধ-পিতাকে জাকাত দেওয়া যায়।
মাসআলা- সৎ মা, সৎ পিতা ও সৎ সন্তানকে জাকাত দেওয়া জায়েয আছে। তারা উসুল বা ফুরুর মধ্য গণ্য হয় না।
মাসআলা- মুসাফির ভিনদেশে যখন নিরুপায় হয়ে পড়ে, বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছাতে অক্ষম তখন তাকে জাকাত দেওয়া যায় যদিও সে বাড়ীতে খুব ধনী হয়।
মাসআলা- জাকাতের অর্থ কোনো গরীবকে মালিক বানিয়ে দেওয়া জরুরী। কাজেই জাকাতের অর্থ দিয়ে মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ করে দিলে বা তার কোন আসবাব ক্রয় করে দিলে বা যে কোন প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে দিলে বা মাদ্রাসায় কিতাব ক্রয় করে ওয়াক্ফ করে দিলে বা মৃত বাক্তির ঋন আদায় করলে বা তার কাফনে খরচ করলে জাকাত আদায় হবে না।
আগের পর্ব পড়তে : জাকাত সম্পর্কে যাবতীয় যা কিছু (পর্ব- ১)
মাসআলা- মসজিদের ইমাম, মুআযযিন মাদ্রাসার শিক্ষক বা যে কোন চাকুরীজীবীকে জাকাতের অর্থ প্রদান করলে জাকাত আদায় হবে না। তবে তারা গরীব হলে ভিন্নভাবে তাদেরকে জাকাত দেওয়া যাবে।
মাসআলা- জাকাতের অর্থ দ্বারা বাড়ি বানিয়ে গরীব লোককে মালিক না বানিয়ে বিনা ভাড়ায় ঐ বাড়িতে বসবাস করতে দেওয়ায় জাকাত আদায় হবে না।
মাসআলা- জনকল্যাণমূলক কোন কাজে জাকাতের অর্থ ব্যয় করলে জাকাত আদায় হবে না। যেমন- রাস্তা বা পুল নির্মাণ,কূপ স্থাপন ইত্যাদি।
মাসআলা- ভাই-বোন, চাচা-চাচী, মামা-মামী, খালা-খালু, ফুপা-ফুপী, শ্বশুর-শাশুড়ি, জামাই, ভাতিজা-ভাগিনা যদি গরীব হয় তবে তাদেরকে জাকাত দেওয়া যায়।
মাসআলা- স্বামী স্ত্রীকে এবং স্ত্রী স্বামীকে জাকাত দিতে পারবে না।
মাসআলা- যারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে লিপ্ত তাদেরকে জাকাত দেওয়া যায়।
মাসআলা- নাবালেগ সন্তানের পিতা ধনী হলে ঐ নাবালেগকে জাকাত দেওয়া জায়েয নয়। তবে বালেগ সন্তান যদি গরীব হয় তাহলে তার পিতা ধনী হলেও তাকে জাকাত দেওয়া যাবে।
মাসআলা- সরকার যদি জাকাতের অর্থ মাসআলা জেনে সঠিক খাতে ব্যয় করে তবে সরকারকে জাকাত দেওয়া যায়। অন্যথায় সরকারী ফান্ডে জাকাত দেওয়া যাবে না।
চলবে...
তথ্যসূত্র : মুফতী আবুল হুসাইন।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড