ধর্ম ডেস্ক
ওলি আরবি শব্দ যার অর্থ অভিভাবক বা মুরুব্বি, বন্ধু। আরবি ভাষায় “আউলিয়া” শব্দটি ওলির বহুবচন। 'ওলি' অর্থ বন্ধু, মিত্র বা অনুসারী। কখনো শব্দটির অর্থ হয় শাসক, অভিভাবক বা কর্তা। (তথ্যসূত্র- আরবি-বাংলা অভিধান, প্রকাশনায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ)।
প্রসিদ্ধ আরবি-ইংরেজি অভিধান “আল-মাওয়ারিদ” অনুসারে ওলি শব্দের অর্থ- guardian, patron, friend, companion ইত্যাদি।
পবিত্র কোরআনে “ওলি” এবং “আউলিয়া” এ উভয় শব্দটির ব্যবহার হয়েছে অসংখ্যবার। আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন- "আলা ইন্না আওলিয়া আল্লাহি লা খাওফুন আ’লাইহিম ওয়া লাহুম ইয়াহ্ঝানুন। আল্লাযীনা আ ’মানূ ওয়া কানূ ইয়াত্তাকানূন।"
অর্থ- জেনে রাখো নিশ্চয়ই আল্লাহর ওলিদের (বন্ধুদের) কোন ভয় নাই এবং তাহারা দুঃখিতও হবে না। যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে। (সূরা ইউনুস ১০ : ৬২- ৬৩ )
এখানে আল্লাহ তাআলা ওলীদের দুটি গুণ বর্ণনা করেছেন-
(১) যারা ঈমান আনয়ন করেছে। শিরকমুক্ত মুসলমান যারা।
(২) ‘তাকওয়া’ অর্থাৎ, সর্বক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহকে ভয় করে তার নিষিদ্ধ সকল প্রকার হারাম কাজ বর্জন করে চলা।
নিশ্চয়ই তোমাদের ওলি হলেন আল্লাহ এবং তাঁর রসুল আর ঈমানদার লোকেরা- যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দিয়ে দেয়, এবং আল্লাহর প্রতি অনুগত বাধ্যগত থাকে। যারা ওলি মানে আল্লাহকে এবং আল্লাহর রসুলকে আর ঈমানদার লোকদেরকে, তারাই আল্লাহর দল এবং আল্লাহর দলই থাকবে বিজয়ী। ( সূরা আল মায়িদা- আয়াত-৫৫/৫৬)
এ দুটি আয়াত থেকে জানা গেল, সকল মুমিনই আল্লাহর অলি/বন্ধু যারা সালাত কায়েম করে,যাকাত প্রদান করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং আল্লাহর অনুগত থাকে তারাই ওলি ''সকল মুমিনই আল্লাহ রহমানের অলি।'' (ইমাম তাহাবী ''আল আকীদা'' গ্রন্থ)
আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন- "ওয়াল্লাহু ওয়ালীউল মু মিনীন" (অর্থ- আর আল্লাহ মুমিনদের অভিভাবক) (সূরা আলে ইমরান ৩ : ৬৮ ) "ওয়াল্লাহু ওয়ালীউল মুত্তাকীন "( অর্থ- আর আল্লাহ্ মুত্তাকীদের বন্ধু) (সূরা জাসিয়া ৪৫ : ১৯)।
আয়াতে দেখা যাচ্ছে আল্লাহ তাআলা তাঁর আওলিয়া বা বন্ধুদের প্রসঙ্গে বলেছেন যে তার যারা বন্ধু তাদের কোনো ভয় থাকবে না এবং তারা দুঃখিতও হবে না। কারা তার সেই বন্ধু?
আল্লাহ তাআলা বলছেন যারা ঈমান আনবে এবং তাকওয়া অবলম্বন করবে তারাই হবে তাঁর বন্ধু। আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন- "তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সেই ব্যক্তিই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক মুত্তাকী।'' (সূরা হুজুরাত ৪৯ : ১৩)
তাকওয়ার অধিকারী ব্যক্তিকে মুত্তাকী বলা হয়। সুতারং মুত্তাকী বা আমরা প্রচলিত ভাষায় যাকে বলি পরহেজগার সে ব্যক্তিই আল্লাহর কাছে মর্যাদাসম্পন্ন। আবার এই মুত্তাকীদের মধ্যে যিনি অধিক মুত্তাকী তিনি আবার আল্লাহ তাআলার কাছে অধিক মর্যাদাসম্পন্ন। এই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিটিই আল্লাহর বন্ধু সে কথাটিই আল্লাহ তাআলা সূরা ইউনুসের ৬৩নং এবং সূরা হুজুরাতের ১৩ নং আয়াতে বলেছেন।
আল্লাহ তাআলা কাকে তাঁর বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করবেন বা করেছেন তা কিভাবে জানা যায়? অর্থাৎ আল্লাহ এবং তার রাসুলের দেওয়া সঠিক পথে যারা থাকবে তারাই ওলি। তাহলে আল্লাহর ওলি বা বন্ধু হওয়ার দাবিদার ব্যক্তিটি কিভাবে জানতে পারেন যে, আল্লাহ তাকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করেছেন ?
আল্লাহ তাআলা কি ওই ব্যক্তির কাছে কোনো সার্টিফিকেট পাঠান বা অন্য কোন শরিয়ত সম্মত পন্থার মাধ্যমে কোন বার্তা পাঠান? এ ব্যপারে কুরআনে সরাসরি কোন উত্তর পাওয়া যায় না। তবে আল্লাহ তাআলা বলেন- “অতএব তোমরা পবিত্রতার দাবি করো না। তিনিই ভাল জানেন মুত্তাকী।”
লেখক : মুরাদ বিন আমজাদ, প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ মুসলিম উম্মা ফাউন্ডেশন।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড