• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কুরআনের আলোকে মাতৃভাষার গুরুত্ব (শেষ পর্ব)

  ধর্ম ও জীবন ডেস্ক

২৫ এপ্রিল ২০১৯, ১০:২০
কুরআন
ছবি : প্রতীকী

আল্লাহ তা’আলা অন্যত্র বলেছেন, আমি এ কুরআনকে আরবী ভাষায় (অবতীর্ণ) করেছি, যাতে তোমরা বুঝ। (সূরা যুখরুফ : ৩)

আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেছেন, এ কুরআন বিশ্বজাহানের পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। বিশ্বস্ত ফেরেশতা একে নিয়ে অবতরণ করেছে আপনার অন্তরে, যাতে আপনি ভীতি প্রদর্শনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হন সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়। (সূরা শু‘আরা : ১৯২-১৯৫)

আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেছেন, আমি এ কুরআনকে কোনো ভিন্ন ভাষা-ভাষীর প্রতি অবতীর্ণ করতাম অতঃপর তিনি তা তাদের কাছে পাঠ করতেন, তাহলে তাদের তারা বিশ্বাস স্থাপন করতো না। (সূরা শু‘আরা : ১৯৮-১৯৯)

আর জাতিকে সুপথে পরিচালনা করতে হলে পরিচালক মণ্ডলীকে জাতির বোধগম্য ভাষায় কুরআন ও হাদীসের পূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী অবশ্যই হতে হবে, নচেৎ জাতির সামনে মনের ভাব ও মূল বক্তব্য ব্যক্ত করা কখনো সম্ভব হবে না। যদি নবীদের ভাষা উম্মতের ভাষা থেকে ভিন্ন হতো, তাহলে নবীদেরকে উম্মতের নিকট আল্লাহর বিধ-বিধান পৌঁছানোর ক্ষেত্রে অনুবাদের ঝুঁকি গ্রহণ করতে হতো।

এরপরও উম্মতের কাছে আল্লাহর বিধি-বিধান সঠিকরূপে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে থেকে যেত অসংখ্য সন্দেহ। তাই এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, যদি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ দেশে কোন নবী প্রেরণ করতেন, তাহলে তাঁকেও এদেশের মাতৃভাষার মাধ্যমেই প্রেরণ করতেন।

দ্বিতীয়ত, বিশ্বের বুকে যতগুলো শিশু জন্মগ্রহণ করে, তারা বুঝ, জ্ঞান ও অনুভূতির ভাষা শিক্ষা করে, মাতা-পিতা, ভাই-বোন এবং পাড়া প্রতিবেশীদের কাছ থেকে এ ভাষা শিশুদের মনের দুয়ার খুলে দেয় এবং বুঝতে, শিখতে ও জানতে সাহায্য করে।

এমনিভাবে ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, বাতেল যে যুগে যে-রূপ নিয়ে মানব সমাজে এসেছে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন, যে যুগের নবীকেও তার মোকাবেলা করার জন্য সে ধরণের মু‘জিযা দিয়ে পাঠিয়েছেন।

হজরত নূহ (আ.)-এর যুগ ছিল জাহাজ শিল্পের উন্নতির যুগ। তাই আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে জাহাজ শিল্পের জ্ঞান দান করে ছিলেন। হযরত দাউদ (আ.)-এর যুগ ছিল গান-বাজনা চর্চার যুগ। তাই আল্লাহ তা’আলা তাঁকে এমন সুমধুর কণ্ঠ দান করে ছিলেন যে, তাঁর কণ্ঠে আল্লাহর কালাম শ্রবণের জন্য মানুষ ছাড়াও, আকাশের উড়ন্ত পাখি পর্যন্ত নেমে আসতো।

হজরত সুলাইমান (আ.) এর যুগ ছিল রাজ ক্ষমতা এবং অর্থ-সম্পদের প্রাচুর্যের যুগ। তাই আল্লাহ তাআলা তাঁকে মানব ইতিহাসের সর্বাধিক রাজক্ষমতা এবং অর্থ-সম্পদ দান করেছিলেন। তিনি এমন রাজ-ক্ষমতা সম্পন্ন ছিলেন যে, কেবলমাত্র জিন-পরী এবং পশু-পাখি কেন? বায়ূ পর্যন্ত তাঁর আজ্ঞাধীন থাকতে বাধ্য ছিল।

হজরত মূসা (আ.)-এর যুগ ছিল যাদু বিদ্যার উৎকর্ষের যুগ। তাই আল্লাহ তা’আলা তাঁকে ‘লাঠি’ দিয়ে সাপ বানানোর ক্ষমতা দান করেছিলেন। হজরত ঈসা (আ.)-এর যুগ চিকিৎসা বিদ্যার সোনালীর যুগ। তাই আল্লাহ তাআলা তাঁকে এমন রোগ নিরাময় ক্ষমতা দান করেছিলেন যে, তার হাতের স্পর্শের জন্মান্ধ ব্যক্তি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেত এবং কুষ্ঠরোগী রোগ থেকে মুক্তি পেত। এমনকি মৃত ব্যক্তিও আল্লাহর হুকুমে জীবিত হয়ে যেত।

এমনিভাবে আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর যুগ ছিল সাহিত্যে শ্রেষ্ঠ্যেত্বের যুগ। তাই তাঁকে দেওয়া হয়েছিল গোটা বিশ্বের অদ্বিতীয় উজ্জ্বলতম সাহিত্যগ্রন্থ আল-কুরআন। যাকে প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর সর্বাপেক্ষা বড় এবং স্থায়ী মু‘জিযা বলে উল্লেখ করে, গোটা বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ করেছেন।

যেমন কুরআনুল কারীমে সমগ্র মানব গোষ্ঠীকে সম্বোধন করে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেন যে, যদি তোমরা কুরআনকে আল্লাহর কালাম বলে স্বীকার না কর; বরং মানব রচিত মনে কর, তাহলে তোমরাও তো মানুষ; এর মত একটি গ্রন্থ রচনা করে নিয়ে এসো। প্রয়োজনে তোমাদের সাথে জিনদেরকেও মিলিয়ে নাও।

লেখক : মুরাদ বিন আমজাদ, প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ মুসলিম উম্মা ফাউন্ডেশন।

ওডি/এনএম

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড