ধর্ম ও জীবন ডেস্ক
অনেকেই নিজেদের হক্ক বা হক্কানী বলে দাবি করেন। যেমন- হক্কানী উলামা মাশায়িখ,হক্কানী মিশন, হক্কানী মিশন/দরবার, হক্কানী খানকা শরিফ, আহলে হাক মিডিয়া ইত্যাদি। কোন বিষয়ে দাবি করলেই তা হওয়া যায় না।
দাবির পক্ষে বাস্তব মিলও থাকতে হয়। অন্যথায় বিষয়টির দাবি সর্বস্ব রয়ে যায়। বাস্তবতা থাকে না। আসুন দেখি আল্লাহ পাক কী বলেন-
হক্ক কেবলমাত্র তোমার রবের পক্ষ থেকে আসে আর فماذا بعدالحق إلا الضلال এই হক্কের পরে গুমরাহী ছাড়া কী আছে? (ইউনুস- ৩২)
তিনি আরও বলেন :وَلَوِ اتَّبَعَ الْحَقُّ أَهْوَآءَهُمْ لَفَسَدَتِ السَّمٰوٰتُ وَالْأَرْضُ وَمَن فِيهِنَّ ۚ بَلْ أَتَيْنٰهُم بِذِكْرِهِمْ فَهُمْ عَن ذِكْرِهِم مُّعْرِضُونَ
আর যদি হক্ক/ সত্য তাদের কামনা-বাসনার অনুগামী হতো, তবে আসমানসমূহ, যমীন ও এতদোভয়ের মধ্যস্থিত সব কিছু বিপর্যস্ত হয়ে যেত। বরং আমি তাদেরকে দিয়েছি তাদের উপদেশবাণী (কুরআন)। অথচ তারা তাদের উপদেশ হতে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। (২৩/৭১)
আর হক্ক যদি তাদের কামনা-বাসনার অনুগামী হতো তবে বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ত আসমানসমূহ ও জমিন এবং এগুলোতে যা কিছু আছে সবকিছুই [১]। বরং আমরা তাদের কাছে নিয়ে এসেছি তাদের ইজ্জত ও সম্মান সম্বলিত যিকর [২] কিন্তু তারা তাদের এ যিকর (কুরআন) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
[১] মুজাহিদ বলেন, এখানে হক বলে আল্লাহ্কে উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। অর্থাৎ যদি আল্লাহ্ তাঁদের মনের প্রবৃত্তি অনুসারে সাড়া দেন, আর সেটা অনুসারে শরী’য়াত প্রবর্তন করেন তবে আসমান ও জমিন এবং তাতে যা আছে সেগুলোতে বিপর্যয় লেগে যেত।
যেমন তারা বলেছিল যে, “আর তারা বলে, এ কুরআন কেন নাজিল করা হলো না দুই জনপদের কোনো মহান ব্যক্তির উপর?” [সূরা আয-যুখরুফ : ৩১] তখন আল্লাহ্ বললেন, “তারা কি আপনার রবের রহমত বণ্টন করে?” [সূরা আয-যুখরুফ : ৩২] [ইবন কাসীর]
মুকাতিল ও সুদ্দী বলেন- এর অর্থ, যদি তারা যেভাবে পছন্দ করে সেভাবে আল্লাহ্ তার জন্য কোনো শরীক নির্ধারণ করেন, তবে আসমান ও জমিন ফাসাদে পূর্ণ হয়ে যেত। এ তাফসীর অনুসারে আয়াতটি অন্য আয়াতের অনুরূপ, যেখানে বলা হয়েছে, “যদি এতদুভয়ের (আসমান ও জমিনের) মধ্যে আল্লাহ্ ব্যতীত আরও অনেক ইলাহ থাকতো, তাহলে উভয়ই বিশৃংখল হয়ে যেত।” [সূরা আল-আম্বিয়া : ২২] [ফাতহুল কাদীর]
[২] আয়াতে ‘যিকির’ শব্দটি দু’বার এসেছে। প্রথম বর্ণিত ‘যিকির’ শব্দটির অর্থ কুরআন ধরা হলে, অর্থ হবে তাদের জন্য প্রতিশ্রুত সে কুরআন এসে গেছে অথচ তারা “কুরআন” থেকে মুখ ফিরিয়ে আছে। [ইবন কাসীর] অথবা ‘যিকির’ দ্বারা সম্মান ও মর্যাদা উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে।
তখন আয়াতের অর্থ হবে, আমরা এমন জিনিস তাদের কাছে এনেছি যা তারা গ্ৰহণ করলে তারাই মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী হবে। এ থেকে তাদের এ মুখ ফিরিয়ে নেয়া অন্য কোনো জিনিস থেকে নয় বরং নিজেদেরই উন্নতি এবং নিজেদেরই উত্থানের একটি সুবর্ণ সুযোগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার নামান্তর। [ফাতহুল কাদীর]
লেখক : মুরাদ বিন আমজাদ।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড