• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

অন্যের মাধ্যমে দু’আ প্রার্থনা সম্পর্কে ইসলাম যা বলে

  অধিকার ডেস্ক    ০৪ মার্চ ২০১৯, ১৪:৪৯

দু'আ
ছবি : প্রতীকী

আমরা অনেক সময় নিজেদের সমস্যা বা অসুবিধার জন্য কোনো আলিম, বুজুর্গ বা নেককার ব্যক্তির কাছে ভালবাসা ও দু’আ প্রাপ্তির জন্য যাই। এরূপ যাওয়া সাক্ষাৎ করা ও দু’আ চাওয়া নিষেধ নয়। সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে দু’আ চাইতেন। তাবিয়ীগণও সাহাবীগণের কাছে মাঝেমধ্যে দু’আ চাইলে দু’আ করতেন।

এক ব্যক্তি হজরত আনাস রা. এর কাছে এসে দু’আ চাইলে তিনি বললেন, “আল্লাহুম্মা আতি না ফিদ্দুন-ইয়া হাসানা- তাও ওয়া-ফিল আখিরাতি হাসানাহ”

অর্থাৎ হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে দুনিয়ার কল্যাণ এবং আখিরাতের কল্যাণ দান করুন।

ঐ ব্যক্তি বারবার দু’আ চাইলে তিনি শুধু এতটুকুই বলেন। (শাতেবী, আল-ইতিসাম-১/৫০০-৫০১)

অপরদিকে সাহাবীগণ এ বিষয়ে (দুআর জন্য সাক্ষাৎ করা) বাড়াবাড়ি বা অতিভক্তি নিষেধ করতেন। অনেক সময় কোনো সাহাবীর কাছে দু’আ চাইলে দু’আ করতেন না। কারণ এতে মানুষ দু’আ করার রীতি তৈরি করে নিবে।

এক ব্যক্তি খলীফা উমার ইবনুল খাত্তাব রা. এর কাছে দু’আর আবেদন করে চিঠি লিখেন। তিনি উত্তরে বলেন, “আমি নাবী নই যে, তোমাদের জন্য দু’আ করব বা আমার দু’আ কবুল হবেই” বরং যখন নামাজ কায়েম করা হবে বা নামাজের ইকামত দেওয়া হবে তখন তুমি তোমার গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে। (শাতেবী, আল ই’তিসাম-১/৫০১)

কেননা রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন নামাজের ইকামত দেওয়া হয় তখন আকাশের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয় এবং দু’আ কবুল করা হয়। (মাজমাউয যাওয়াইদ- ১৯১৮, সহীহ)

সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস রা. সিরিয়ায় গেলে এক ব্যক্তি তার কাছে এসে দু’আ প্রার্থণা করে বলেন, আপনি দু’আ করেন যেন আল্লাহ আমার গুনাহ ক্ষমা করে দেন। তিনি বললেন, আল্লাহ তোমাকে ক্ষামা করুন। এরপর অন্য একজন এসে একইভাবে দু’আ চান। তখন তিনি বলেন, আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা না করুন এবং আগের ঐ ব্যক্তিকেও ক্ষমা না করুন। আমি কি নবী? যে সবার জন্য দু’আ করব বা আল্লাহ আমার দু’আ কবুল করবেনই। (শাতেবী, আল ইতিসাম- ১/৫০১)

রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবীগণের সুন্নত পদতধ সকল অবস্থায়, সদা-সর্বদা নিজের জন্য নিজে মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থণা করা। কেননা রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- “আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার বান্দা আমার সম্পর্কে যেরুপ ধারণা করে আমাকে সে তেমনই পাবে। আর যখন সে আমাকে স্মরণ করে তখন আমি তার সাথে থাকি। সুতরাং যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে আমিও মনে মনে তাকে স্মরণ করি। আর যদি সে কনো মজলিশে আমাকে স্মরণ করে, তাহলে আমি তাকে এর চাইতে উত্তম মজলিশে স্মরণ করি। (সুনানে তিরমিযী- ৫/৪৫৮)

পাশাপাশি বিভিন্ন উপলক্ষে একে অপরের জন্য মাসনুন দুআদি রয়েছে। অন্যের কাছে দু’আ চাওয়া কোনো গুনাহ হবে না। কিন্তু কেউ যদি চিন্তা করে যে, অমুক নেককার ব্যক্তি দুআ করলেই আল্লাহ কবুল করবেন বা অমুক ব্যক্তির দু’আই বিপদ উদ্ধারের কারণ হবে, তাহলে সে অতিভক্তি বা শিরকের মধ্যে জড়িয়ে পড়ল।

বুজুর্গগনের নিকট দু’আ চাওয়ার জন্য যদি কেউ নিজের জন্য নিজে দু’আ করার সুন্নত নিয়ম ছেড়ে দেয় তবে সে শুধু বিদআতেই জড়িয়ে পড়বে না উপরন্ত অনেক নেকী ও মহান প্রভুকে আবেগভরে ডাকার বা দু’আ করার নেকী, বরকত ও আত্মিক প্রশান্তি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে।

লেখক : শাইখ আখতারুজ্জামান খালেদ, ইমাম ও খতীব।

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড