• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বহুরূপী মিলাদুন্নবীর বিদআত

  অধিকার ডেস্ক    ২১ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:৪৮

ঈদে মিলাদুন্নবী
ছবি : প্রতীকী

বিদআতের রূপ যে বহুরূপী হয়, মিলাদুন্নবী নামক কথিত বিদআতই তার জ্বলন্ত প্রমাণ। ছোটবেলার স্কুল জীবনের কথা মনে পড়ে। বছরে একবারই রবিউল আওয়ালের ১২ তারিখে সরকারি ছুটিসহ একটি দিন পালিত হতো মহাসমারোহে। তার নাম ছিল 'ফাতেহা দুয়াজদম'। শব্দটি প্রমাণ করে এটি পারস্যের শিয়াদের থেকে আমদানি করা হয়েছে।

পরবর্তী সময়ে তার নাম শুনতে লাগলাম মিলাদুন্নবী। কয়েক বছর যেতে না যেতেই শব্দ আর একটা যোগ হলো 'ঈদ'। অর্থাৎ নাম হলো 'ঈদে মিলাদুন্নবী'। কিছুদিন পর আর একটি শব্দ যোগ হল 'জিসন' এখন বর্তমান সর্বশেষ যে নামটি আমার জানা মতে চলছে তা হলো 'জিসনে ঈদে মিলাদুন্নবী'।

অথচ দ্বীন পূর্ণতা লাভ করছে নবী (সা.) এর জীবদ্দশাতেই। (মায়িদা ৫:৩)

পরিপূর্ণ দ্বীনে সংযোজন সংকোচন করা যাবে না। (ইমরান ৩:৮৫)

পরিপূর্ণ দ্বীনে নবী (সা.) ঈদ বছরে দুটি ফিতর ও আযহা ও সপ্তাহে একটা জুমআ নিজে আমল করে দেখিয়ে গেছেন। চতুর্থ কোনো ঈদ যা আজ 'সকল ঈদের শ্রেষ্ঠ ঈদ, দয়াল নবীর জন্ম ঈদ' নামে মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে এর কোনো নজির শ্রেষ্ঠ চার যুগে ছিল না।

নবী (সা.), সাহাবায়ে কেরামে, তাবেঈ, তাবে-তাবেঈ, আয়িম্মায়ে দ্বীন তথা মহামতি আবু হানিফাসহ চার ইমামগণের কেউ করেছেন বলে কোনো প্রমাণ নেই। প্রশ্ন জাগে যদি এটা শ্রেষ্ঠ ঈদ হয় তাহলে প্রত্যেক তিন ঈদে দু রাকাআত করে সলাত নির্ধারণ করেছেন নবী (সা.)।

তাহলে নব্য বিদআতি ঈদের সলাত কোথায়? বোঝা যাচ্ছে এটা ইবাদত নয় বিদআত। সর্বোপরি পালনকারী বিদআতিরা বলতে চান এটা নবীর (সা.) জন্ম ঈদ। তাদের নিকটে প্রশ্ন থাকবে নবী (সা.) জন্ম নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতভেদ আছে। কারণ সেটা সাহাবায়ে কেরামের সামনে সংগঠিত হয়নি।

কিন্তু মৃত্যু যে ১২ রবিউল আওয়াল সোমবারেই এ বিষয়ে কোনো মতভেদ নেই। কারণ তা সাহাবায়ে কেরামের সামনে সংগঠিত হয়েছিল। প্রশ্ন হলো যদি যুক্তির আলোকে ধরে নিই মহানবী (সা.) যেদিন জন্ম নিয়েছে সেদিন ঈদ তথা খুশির দিন মেনে নিলাম। কিন্তু তার মৃত্যু দিবসে কি শোক পালন করব না ঈদ পালন করব?

আইডিয়াল মুমিন/মুসলিম সাহাবায়ে কেরামেরা সে দিন শোকে পাথর, কেউ কেউ পাগলপরা হয়ে গেলেন। ওমর রা. এর মতো বিচক্ষণ ব্যক্তির কথা কে না জানে? আর নবীর মৃত্যুদিবসে ঈদ তথা খুশির দিন পালন করেছিল তখনকার আশেকে রসূল (সা.) গণ বা নবীর দুশমন আবু জাহেল, লাহান, উতবা, সায়েবাসহ মুশরিকানে মক্কা। তারাই সে দিন খুশিতে মিষ্টি বিতরণ করেছিল হয়তোবা! আর আজ যারা!

সর্বশেষ সংক্ষিপ্ত কথা হলো এটা যদি ইবাদত হয়ে থাকে তাহলে তো এর জন্য বিনিময় গ্রহণ করে যাবে না। এ বিদআতি কর্ম বন্ধ করার উপায় হলো-

১। জিলাপী/শিন্নি খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করুন। জনগণ আসবে না। ২। মৌলভীকে বিনিময়ে কিছু দেবেন না। মৌলভীরা আসবে না। ৩। আর সরকার এসব বন্ধের পদক্ষেপ নিলে তো কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি থেকে দেশ ও জাতি বাঁচবে।

আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে সঠিক বুঝার তাওফিক দান করুন। অসল্লাহু আলা নবীয়্যিনা মুহাম্মদ অআলা আলিহি অআসহাবিহী আজমাইন।

امين یا رب العالمین

লেখক : মুরাদ বিন আমজাদ, চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মুসলিম উম্মা ফাউন্ডেশন।

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড