অধিকার ডেস্ক ১৪ নভেম্বর ২০১৮, ১২:২১
মহান আল্লাহ তাআলা এই পৃথিবীতে মানুষ ও জিন জাতিকে পাঠিয়েছেন তার ইবাদতের জন্য। আল্লাহ্র আদেশ মেনে চলা, তার পছন্দনীয় কাজ করাই ইবাদত। একজন মুসলিম ব্যক্তির ইবাদত সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার নির্দেশনা রয়েছে সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব ‘আল কুরআনে’। এর পাশাপাশি রয়েছে হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর বাণী ও জীবনাচরণ অর্থাৎ হাদিসে।
কুরআন ও হাদিসের আলোকে জীবনের প্রত্যেকটি বিষয় নিয়ে সঠিক ব্যাখ্যা জানার অধিকার রয়েছে সকল মুসলিমের। আপনার সেই অধিকার পূরণের লক্ষ্যেই 'দৈনিক অধিকার'- এর ইসলামিক প্রশ্ন-উত্তর বিষয়ক আয়োজন- ‘কুরআনের আলো এবং আপনার জিজ্ঞাসা’।
আপনি জানতে চাইতে পারেন নামাজ, রোজা, হজ বা জাকাত সংক্রান্ত যে কোনো বিষয়ে। দৈনন্দিন জীবনের যে কোনো বিষয় সম্পর্কে ইসলামের বিধান কী তাও জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আপনার করা প্রশ্নের জবাব দেবেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য ইসলামিক স্কলার ও আলেমগণ।
কীভাবে প্রশ্ন পাঠাবেন :
আপনার প্রশ্ন আমাদের কাছে পাঠাতে পারেন যে মাধ্যমগুলোতে-
- দৈনিক অধিকারের ফেসবুক পেজের পিনপোস্টের কমেন্ট বক্সে - দৈনিক অধিকারের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে - ([email protected]) ইমেইল এড্রেসে
বি.দ্র- প্রশ্নের সঙ্গে অবশ্যই যুক্ত করুন আপনার নাম, বয়স এবং জেলা
প্রশ্ন : সূরা লাহাবে কার নিকট অভিশাপ প্রার্থনা করা হয়েছে? এর ফল কী?
উত্তর : সূরা লাহাবে আল্লাহর রাসূল (সা.) এর সহদোর চাচা আবু লাহাব ও তার স্ত্রী সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সে নিজে ও তার স্ত্রী আল্লাহর রাসূল (সা.) এর সাথে যে আচরণ করেছে তাতে আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি অভিশাপ করেছেন। পাপাচারের কাজে তারা উভয়ে যা যা করেছে জাহান্নামেও তারা একে অপরকে শাস্তি প্রদানে সহযোগিতা করবে। আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি এমনই অভিশাপ দিয়েছেন।
মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ধ্বংস হোক আবু লাহাবের দু’হাত এবং সে নিজেও। (সূরা লাহাব- ১)
আর তার স্ত্রী লাকড়ি বহনকারী। (সূরা লাহাব-৪)
আবু লাহাবের আসল নাম ছিল আব্দুল উয্যা। গৌরবর্ণের কারণে তার ডাক নাম হয় আবু লাহাব। কারণ “লাহাব” বলা হয় আগুনের লেলিহান শিখাকে, যার রং গৌরবর্ণ। সে অনুসারে আবু লাহাব অর্থ গৌরবর্ণ বিশিষ্ট। এছাড়া আবু লাহাবের ডাক নামের সঙ্গে জাহান্নামের বেশ মিলও রয়েছে। কারণ সে রাসূল (সা.)- এর কট্টর শত্রু ও ইসলামের ঘোর বিরোধী ছিল। সে নানাভাবে রাসূল (সা.)কে কষ্ট দেওয়ার চেষ্টা করত।
রাবী’আ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে অন্ধকার যুগে যুল-মাআ’জ বাজারে দেখলাম। তিনি বলছিলেন, হে মানব সম্প্রদায় ! তোমরা “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ” বলো সফলকাম হবে। আর মানুষ তাঁর চতুর্পাশে ভিড় জমাচ্ছিল। তাঁর পেছনে এক গৌরবর্ণ, ট্যারা চোখবিশিষ্ট সুন্দর চেহারার লোক বলছিল, এ লোকটি ধর্মত্যাগী, মিথ্যেবাদী।
রাসূল (সা.) যেখানে যেখানে যেতেন এ লোকটি সেখানেই পিছনে পিছনে যেত। তার পর আমি লোকদের জিজ্ঞেস করলে লোকেরা বলল, এ লোকটি তাঁরই সহোদর চাচা। (মুসনাদে আহমদ- ৪/৩১, তাফসীর ইবনে মাসীর- ১৮/৩১০-৩১১)
আবু লাহাবের স্ত্রীর নাম ছিল “আরওয়া”। সে ছিল হারব ইবনে উমাইরার কন্যা। তাকে “উম্মে জামীল” বলা হতো। আবু লাহাবের মতো তার স্ত্রী রাসূল (সা.) এর প্রতি বিদ্বেষী ছিল। সে এ ব্যাপারে তার স্বামীকে সাহায্য করত। আরবের বাক পদ্ধতিতে পশ্চাতে নিন্দাকারীকে “হাত্বাব” বা খড়ি বাহক বলা হতো।
শুষ্ক কাঠ একত্রিত করে যেমন অগ্নি সংযোগের ব্যবস্থা করে, পরোক্ষ নিন্দাকার্যটিও তেমনি ব্যক্তিবর্গ ও পরিবারের মধ্যে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
এই নারী বন থেকে কাঁটাযুক্ত খড়ি এনে রাসূল (সা.)কে কষ্ট দেওয়ার জন্য তাঁর পথে বিছিয়ে দিত। তার এই নীচ ও হীন কাজকে কুরআনে “হাম্মা লাতাল হাত্বাব” বা সে “খড়ি বহনকারী” বলে ব্যক্ত করা হয়েছে। তার এই অবস্থানটি জাহান্নামেও হবে।
সে জাহান্নামে খড়ি এনে তার জাহান্নামী স্বামীর ওপর নিক্ষেপ করবে, যাতে আগুন আরও প্রজ্বলিত হয়ে উঠে। যেমন দুনিয়াতেও সে তার স্বামীকে কুফুর ও জুলুমের কাজে ইন্ধন যোগাত। পরিণামে আল্লাহ তাআলা এ মহিলাকে “খড়ি বহনকারী” বলে অপমানজনক উপাধী দিয়ে উপহাস করেছেন। (তাফসীরে তাবারী- ২৪/৬৮১, তাফসীর ইবনে কাসীর- ১৮/৩১২-৩১৩)
প্রশ্নকারী : উসমান গণী
উত্তর দিয়েছেন : মাওলানা আখতারুজ্জামান খালেদ, ইমাম ও খতীব।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড