• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় ইসলামের গুরুত্ব

  মুনশি আমিনুল ইসলাম

২৩ মার্চ ২০২০, ১৩:২৩
ইসলাম
ছবি : প্রতীকী

ইসলাম মানুষের পূতপবিত্র জীবনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। মহানবি (সা.) পবিত্রতাকে ঈমানের অংশ ঘোষণা করেছেন এবং নামাজসহ একাধিক ইবাদতের জন্য পবিত্রতার শর্তারোপ করেছে ইসলামি শরিয়ত। একাধিক আয়াত ও হাদিসে মুমিনদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে পবিত্র জীবনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তন্মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো-

পবিত্রতা দীনের ভিত্তি হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ইসলাম পরিচ্ছন্ন। সুতরাং তোমরা পরিচ্ছন্নতা অর্জন করো। নিশ্চয়ই জান্নাতে কেবল পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিই প্রবেশ করবে।’ (ফাইজুল কাদির, হাদিস নম্বর- ৩০৬৫) অন্য হাদিসে মহানবি (সা.) বলেছেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর দীনের ভিত্তি স্থাপিত।’ (মাউসুআতু আতরাফিল হাদিস আন-নাবাবি, পৃষ্ঠা- ২৯৪)

নামাজ কবুলের পূর্বশর্ত পবিত্রতা নামাজ কবুলের পূর্বশর্ত। পবিত্র শরীর ও কাপড় ছাড়া ব্যক্তির নামাজ আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘পবিত্রতা নামাজের চাবি।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ :২৭৬)

পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক রাসুলুল্লাহ (সা.) এক হাদিসে পবিত্রতাকে ঈমানের অংশ বলেছেন এবং অপর হাদিসে ঈমানের অর্ধেক বলেছেন। আবু মালিক আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ।’ (সহিহ মুসলিম :২২৩) অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘... আর পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক।’ (সুনানে তিরমিজি :৩৫১৯)

আল্লাহ মানুষকে পবিত্র করতে চান ঈমান ও ইবাদতের একটি উদ্দেশ্য মানবজীবনকে পবিত্র করা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘... আল্লাহ তোমাদের কষ্ট দিতে চান না; বরং তোমাদের পবিত্র করতে চান এবং তোমাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ পূর্ণ করতে চান। যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো।’ (সুরা মায়িদা :০৬)

আল্লাহ পবিত্রতা ভালোবাসেন পবিত্র কুরআনে আল্লাহ সেসব মানুষের প্রশংসা করেছেন, যারা পবিত্র থাকতে পছন্দ করে। ইরশাদ হয়েছে- ‘যে মসজিদের ভিত্তি প্রথম দিন থেকেই আল্লাহভীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত, সেটাই আপনার নামাজের জন্য অধিক যোগ্য। সেখানে এমন লোক রয়েছে, যারা পবিত্রতা অর্জন করতে ভালোবাসে। আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা তাওবা :১০৮)

পবিত্রতা ঈমানের পরিচায়ক পবিত্রতা মুমিন জীবনের সৌন্দর্য। মুমিন দেহ ও মনের দিক থেকে সব সময় পবিত্র থাকার চেষ্টা করবে। অপবিত্রতা থেকে নিজের দেহ-মনকে রক্ষা করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) পবিত্রতা রক্ষায় মুমিনকে যত্নবান হতে উদ্বুদ্ধ করে বলেছেন, ‘প্রকৃত মুমিন ছাড়া আর কেউই অজুর প্রতি যত্নবান হয় না।’ (মুসনাদে আহমদ :২২৪৩৬)

পবিত্রতা অর্জনের চার স্তর ইসলামে বাহ্যিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় পবিত্রতার ধারণা সীমাবদ্ধ নয়। বরং তার আত্মিক ও আধ্যাত্মিক দিকও রয়েছে। এ জন্য মহানবি (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ যখন অজু করে, সে যেন ভালোভাবে অজু করে এবং বলে, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা ও রাসুল। হে আল্লাহ! আমাকে তওবাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং আমাকে পবিত্র হিসেবে গণ্য করুন।’ (সুনানে তিরমিজি :৫৫)

এ থেকে বোঝা যায়, পবিত্রতার সঙ্গে ঈমান ও পাপমুক্ত জীবনেরও সম্পর্ক রয়েছে। যার প্রথম স্তর বাহ্যিক পবিত্রতা এবং সর্বোচ্চ স্তর আল্লাহর নূরে অন্তর আলোকিত করা। গবেষক আলেমরা পবিত্রতা অর্জনের চারটি স্তর বর্ণনা করেন। তা হলো—

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বাহ্যিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোকে অপবিত্র, নোংরা ও অরুচিকর বিষয় থেকে পবিত্র করা।

অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে পাপমুক্ত করা শরীরের অঙ্গগুলোর মাধ্যমে যেসব পাপ ও অন্যায় হয় তা থেকে বিরত থাকা।

অন্তর পবিত্র করা কুপ্রবৃত্তি ও মন্দ স্বভাব থেকে নিজেকে পবিত্র করা।

নিজেকে গাইরুল্লাহ মুক্ত করা আল্লাহ ছাড়া যা কিছু আছে সব কিছু থেকে নিজেকে মুক্ত করে মহান আল্লাহর দরবারে নিজেকে সমর্পণ করার মাধ্যমেই ব্যক্তি চূড়ান্ত পবিত্রতা অর্জন করতে সক্ষম হয়। এই স্তরের পবিত্রতা শুধু নবি (আ.) ও সিদ্দিকিনরাই লাভ করতে পারেন। (আল্লামা ফায়জুল কাশানি, আসরারুল ইবাদা, পৃষ্ঠা- ০৬)

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড