• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ওমরা করার পদ্ধতি (শেষ পর্ব)

  অধিকার ডেস্ক    ১২ আগস্ট ২০১৮, ১২:৫৫

উমরা কিভাবে করবেন- উমরার রুকন ইমাম শাফেয়ী (রঃ)- এর মতে ৪টি। যথা- ১. ইহরাম বাঁধা, ২. তাওয়াফ করা, ৩. সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সাঈ বা দৌঁড়ানো, ৪. হলক বা মাথার চুল চেছে ফেলে দেওয়া। প্রথমে মীকাত বা ইহরাম বাঁধার নির্ধারিত স্থান থেকে ইহরামের নিয়ম অনুসারে উমরার ইহরাম বেঁধে তালবিয়া পাঠ করতে করতে বায়তুল্লাহ্ শরীফে পৌঁছবেন।

বায়তুলাহতে পৌঁছে তালবিয়া পাঠ বন্ধ করে নিম্নোক্ত দু’আ পাঠ করবেন : উচ্চারণ- 'বিসমিল্লাহি ওয়াসলাতু ওয়াসলামু ‘আলা রাসূলিল্লাহি আউযুবিল্লাহিল আযীম ওয়া বিওয়াজহিহিল কারীম ওয়া সুলতা- নিহিল কাদীম মিনাশশায়তানির রাজীম- আল্লাহুম্মাফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিকা।'

তারপর মসজিদুল হারামে প্রবেশকালে সুন্নাত মোতাবেক প্রথমে ডান পা রাখবেন। অজু না থাকলে অজু করে নিতে হবে। ইহরামের সময় যেভাবে চাদর পরে ছিলেন তা ইযতিবা করে নিতে হবে। ইযতিবার নিয়ম হলো- ইহরাম অবস্থায় পরিহিত চাদরের মধ্যভাগকে ডান কাঁধের নীচে দিয়ে চাদরের উভয় কোণ বাম কাঁধের উপর ধারণ করতে হবে অর্থাৎ ডান কাঁধ খোলা রেখে বাম কাঁধ আবৃত করে উক্ত চাদর পরতে হবে। এর ফলে চাদরের দুই কোণই বাম দিকে থাকবে। এক কথায় ইহরামের চাদরকে ডান বগলের নিচের দিক থেকে পেঁচিয়ে এনে বাঁ কাঁধের ওপর চাদরের দুই কোণ রাখাকে ইযতিবা বলে।

ইহরামের চাদর ইযতিবা করে নিয়ে সম্ভব হলে হাজারে আসওয়াদ স্পর্শ করে মুখ লাগিয়ে পাথরটিতে চুম্বন করবেন। অথবা লাঠি দ্বারা স্পর্শ করে লাঠিতে চুম্বন করবেন। মুখে বিসমিল্লাহি ওয়াল্লাহু আকবার বলবেন। আর যদি স্পর্শ করা সম্ভব না হয়, তাহলে কেবলমাত্র হাজারে আসওয়াদের প্রতি নিজ হাতে ইশারা করে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলবেন। কিন্তু ইশারাকৃত হাত চুম্বন করবেন না।

অতপর হাজারে আসওয়াদ থেকেই বায়তুল্লাহকে বামে রেখে কা’বাঘরের চতুর্দিকে তওয়াফ শুরু করবেন। ডান দিকে চলতে থাকুন, যাতে পবিত্র কা’বাঘর পূর্ণ বাঁয়ে থাকে। পুরুষের জন্য প্রথম তিন চক্করে ‘রমল’ করা সুন্নাত। ‘রমল’ অর্থ বীরের মতো বুক ফুলিয়ে কাঁধ দুলিয়ে ঘন ঘন কদম বা পা রেখে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলা। হাজারে আসওয়াদ থেকে প্রত্যেক চক্র আরম্ভ করে পুনরায় ঐখানেই পৌঁছলে এক চক্র হবে। প্রথম তাওয়াফে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণিত এই দু’আ পাঠ করা উত্তম। উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ঈমানাম বিকা ওয়া তাসদীকাম বি কিতাবিকা ওয়া ওয়াফাআম বিআহদিকা ওয়া ইত্তিবাআনলি সুন্নাতি নাবিইয়্যিকা মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

দ্বিতীয় চক্রে হাজারে আসওয়াদের দিকে হাত দিয়ে ইশারা করে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলুন। ‘রমল’ করতে করতে সামনে এগিয়ে চলুন। পুনরায় হাজারে আসওয়াদে আসলে দ্বিতীয় চক্র পূর্ণ হবে। এভাবে ইযতিবাসহ তিন চক্রে ‘রমল’ করবেন এবং বাকী চার চক্রে হেঁটে চলবেন।

তাওয়াফে মোট ৭ (সাত) চক্র দিতে হয়। রুকনে ইয়ামেনিকে সম্ভব হলে শুধু হাতে স্পর্শ করুন। রুকনে ইয়ামেনি থেকে হাজারে আসওয়াদের মাঝখানে রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়াকিনা আযাবান্নার।

তাওয়াফ ও সাঈ-এর সময় যে কোনো যিকর ও দোয়া যা তার পক্ষে পাঠ করা সহজ হয়, তা পড়াই যথেষ্ট। তাওয়াফকালে যখনই হাজারে আসওয়াদ বরাবর পৌঁছবেন, তখনই তা স্পর্শ করবেন ও চুম্বন দিবেন এবং বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলবেন।

যদি স্পর্শ করা ও চুম্বন সহজসাধ্য না হয় তাহলে যখনই তার বরাবর পৌছবেন তখনই হাতে ইশারা করে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলবেন। ইশারা করে হাতে চুম্বন দিবেন না।

ইবাদাতের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন। সুতরাং পবিত্র ও সুন্দর মন নিয়ে উমরা পালন করার জন্য মহান আল্লাহর সামনে উপস্থিত হতে হবে। আল্লাহ্ সুবহানাহু তা’আলা আমাদের তাওফিক দান করেন। আমীন! (চলবে)

লেখক : শাইখ শফিকুল ইসলাম, ইসলামিক লেখক ও গবেষক, সাবেক প্রিন্সিপাল মারকাজ আবু বাকর সিদ্দীক (রাঃ) কিশোরগঞ্জ।

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড