• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুমিনদের মিলনস্থল কাবাঘরের মর্যাদা

  মুনশি আমিনুল ইসলাম

১৫ মার্চ ২০২০, ১৬:১১
ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

মসজিদুল হারাম মহান আল্লাহ কর্তৃক নির্বাচিত পবিত্র একটি স্থান। নানান গুরুত্বপূর্ণ ও মহিমান্বিত নিদর্শন দিয়ে বিস্তৃত আল্লাহর এ ঘর। মহান আল্লাহ এ ঘরকে মুমিনদের মিলনস্থল এবং নিরাপদ স্থান বলে ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘যখন আমি কাবাগৃহকে মানুষের জন্য সম্মিলনস্থল এবং শান্তির আলয় করলাম।’ (সুরা বাকারা :১২৫)

আলোচ্য আয়াতে সুস্পষ্টরূপে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কাবাকে বিশেষ এক মর্যাদা দান করেছেন। তাই এটি যুগ যুগ ধরে মানবকুলের জন্য প্রত্যাবর্তনস্থল হয়ে আছে। কাবার পরশে মুমিন কখনো তৃপ্ত হয় না। বারবার কাবা দেখার আগ্রহ-উচ্ছ্বাস মনে-প্রাণে কাজ করে সবসময়। প্রখ্যাত মুফাসসির মুজাহিদ (রহ.) বলেন, ‘কোনো মানুষ কাবা গৃহের জিয়ারত শেষে তৃপ্ত হয় না। বরং প্রতিবার পুনরায় সাক্ষাতের পূর্ণ বাসনা নিয়ে ফিরে আসে।’

কাবাঘর মুসলিমদের জাতীয় পরিচয়ের প্রতীক। কাবার বিদ্যমানতায় আমাদের জীবন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘আল্লাহ সম্মানিত কাবাঘরকে মানুষের স্থিতিশীলতার কারণ বানিয়েছেন।’ (সুরা মায়েদা :৯৭) কাবাঘরের কারণেই আজ পবিত্র মক্কা বিশ্ব দরবারে বিশেষভাবে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্য নির্ধারিত হয়েছে। সেটাই হচ্ছে এ ঘর, যা বাক্কায় (মক্কা) অবস্থিত এবং সারা পৃথিবীর মানুষের জন্য হিদায়াত ও বরকতময়।’ (সুরা আলে ইমরান :৯৬)

পৃথিবীর ইতিহাস যত পুরনো ততোটাই পুরনো কাবাঘরের ইতিহাস। প্রত্যেক যুগে নবি-রাসুলদের পদধূলিতে ধন্য হয়েছে কাবাঘরের জমিন। আল্লাহর নবি হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর মাধ্যমে কাবাঘরের আবাদ শুরু হয়েছিল। তিনি স্ত্রী হাজেরা (আ.) ও দুগ্ধপোষ্য সন্তান ইসমাঈল (আ.)-কে নিয়ে শস্য-ফসলহীন মক্কাভূমিতে অবতরণ করেন তখন থেকে। যখন তিনি আল্লাহর ঐশী আদেশে সাড়া দিয়ে চলে যেতে লাগলেন, স্ত্রী হাজেরা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের এভাবে রেখে আপনি কোথায় যাচ্ছেন? যেখানে জিন ও মানুষ ছাড়া কেউ নেই! ইবরাহিম (আ.) কোনো উত্তর দেননি তখন। একটু পর স্ত্রী নিজ থেকে বললেন, আল্লাহই কি আপনাকে এ ব্যাপারে আদেশ দিয়েছেন? অতএব তিনি আমাদের আশাহত করবেন না। পানি অন্বেষণের সে ঘটনায় একজন ফেরেশতা এসে হাজেরা (আ.)-কে বললেন, ‘আপনি কোনো ক্ষতির আশঙ্কা করবেন না। কেননা, এখানে আল্লাহর ঘর রয়েছে। যা এই শিশু ও তার পিতা তৈরি করবে।’ (সহিহ বুখারি :৩১৮৪)

এরপর মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহি এলো। আল্লাহ বলেন, ‘যখন আমি ইবরাহিমকে বাইতুল্লাহর স্থান ঠিক করে দিয়েছিলাম যে, আমার সঙ্গে কাউকে শরিক করো না।’ (সুরা হজ :২৬) তখন ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর আদেশ পূরণের লক্ষ্যে কাবাঘর নির্মাণ করেন।

কাবাঘরকে নানাভাবে সম্মানিত করা হয়েছে: এটি মুসলিমদের কিবলা। মুসলিম উম্মাহ যুগ যুগ ধরে এই ঘরের উদ্দেশে হজ ও ওমরা পালনের জন্য ছুটে আসে। যেমনটি ইবরাহিম (আ.) বলেছিলেন, ‘অতঃপর আপনি কিছু লোকের অন্তরকে তাদের প্রতি আকৃষ্ট করুন।’ (সুরা ইবরাহিম :৩৭)

প্রতিটি মুমিন আল্লাহর ঘরের প্রতি বিশেষ মর্যাদা ও সম্মান লালন করে। কেননা শুধু এই ঘরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এই উম্মত সদা কল্যাণের ওপর থাকবে, যতক্ষণ তারা যথাযথভাবে এর (কাবার) মর্যাদাকে বজায় রাখবে। আর যদি সে সম্মানকে ছেড়ে দেয় এবং তা বিনষ্টে পরিণত করে, পরিণামে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে।’ (মুসনাদে আহমদ ৪/৩৪৭)

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড