• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নামাজিদের পাঁচটি স্তর

  ধর্ম ও জীবন ডেস্ক

০৩ মার্চ ২০২০, ১১:৫০
ইসলাম
ছবি: প্রতীকী

মুমিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ নামাজ। নবিজি (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হচ্ছে দীনের মূলভিত্তি। অতএব যে নামাজ কায়েম করল, সে মূলত দীন কায়েম করল। আর যে নামাজ ধ্বংস করল সে মূলত দীনকে ধ্বংস করল।’ (তিরমিজি :২৬১৬; ইবনে মাজা : ৩৯৭৩) সুতরাং নামাজ আদায়ে খুব সতর্ক থাকা চাই। মানুষের নামাজের স্তর ও প্রকার সম্পর্কে অসংখ্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এসব হাদিস একত্র করে বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা ইবনুল কাইয়ুম জাওজিয়া (রহ.) নামাজিদের পাঁচটি স্তর উল্লেখ করেছেন।

প্রথম স্তর প্রথম শ্রেণির নামাজি হচ্ছে ‘মুহাকাব’। অর্থাৎ অনিয়মিত নামাজ আদায়কারী। সুযোগ হলে নামাজ পড়েন, কিংবা নামাজ ছেড়ে দেন। কখনো জুমার নামাজে বা বিভিন্ন ওয়াক্তিয়া নামাজে তাদের উপস্থিতি দেখা যায়। আবার নামাজের সময় বাইরে ঘোরাফেরা করতেও দেখা যায়। এদের অন্তরে নামাজের গুরুত্ব নেই। এরা নামাজ আদায়ের কারণে পরকালে কিছু শাস্তি থেকে অব্যাহতি পেলেও জাহান্নামে প্রবেশ করতে হবে। অবশ্য ঈমান এনে থাকলে নির্ধারিত শাস্তি শেষ করে একসময় তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারেন।

দ্বিতীয় স্তর এ প্রকার মুসল্লি হলো ‘মুহাসাব’। অর্থাৎ নিয়মিত নামাজ পড়েন ঠিকই, কিন্তু নামাজে কোনো মনোযোগ থাকে না। মনোযোগ আনার চেষ্টাও করে না। শুধু নামাজ শুরু করে আর শেষ করে। নামাজের মাঝখানে কী পড়েছে আর কী করেছে তার কিছুই সে জানে না। দৈনিক পাঁচবার শুধু নামাজের সময় অঙ্গসঞ্চালন করেন, বাহ্যিক রোকন ও হক আদায় করেন বটে; নফসকে আয়ত্তে এনে তার ওয়াসওয়াসা দূর করতে অবহেলা করেন। বলা যায়, এই শ্রেণির নামাজির শরীর নামাজ পড়ে, অন্তর নামাজ পড়ে না। এরা নামাজের প্রতি উদাসীনতার জন্য জবাবদিহির শিকার হবেন। দুঃখজনকভাবে সমাজে এই শ্রেণির মুসল্লিই সবচেয়ে বেশি।

তৃতীয় স্তর এরা হচ্ছেন ‘মুফাফফার আনহু’। অর্থাৎ এ প্রকারের মুসল্লিরা সব সুন্নত ও রুকন ঠিকঠাক আদায় করেন, অন্তরের ওয়াসওয়াসা ও নফসের কুমন্ত্রণা দূর করতেও চেষ্টা করেন। এ শ্রেণির মুসল্লিরা সব রুকন ও শর্ত আদায়ের পাশাপাশি মনোযোগ ধরে রাখার প্রাণান্ত চেষ্টা করে থাকে। কিন্তু শতভাগ মনোযোগ ধরে রাখতে সক্ষম হতে পারেন না। কখনো মনোযোগ আসে, কখনো গাফেল হয়ে যান। এরা হলো সেই শ্রেণির মুসল্লি, যাদের আল্লাহ তায়ালা নামাজের উসিলায় তাদের গুনাহ মাফ করে দেন। এই শ্রেণির নামাজি নামাজের মাধ্যমে দায়মুক্ত হবেন।

চতুর্থ স্তর এই শ্রেণি হচ্ছে ‘মুসাব’। অর্থাৎ যারা নামাজের সব হক, রুকন ও সুন্নত আদায় করেন, অন্তরকেও তার সুরক্ষা ও হক আদায়ে লিপ্ত রাখেন। যেন সামান্য সওয়াবও নষ্ট না হয়। যথাযথভাবে নামাজ আদায়ে চেষ্টার সেরাটা ব্যয় করেন। এসব মুসল্লি নামাজের পুরো সময়টাতে একাগ্রতা ও রবের ইবাদতে মগ্ন থাকেন। তার নামাজ আদায় করা আল্লাহ দেখছেন এটি বারবার মনে জাগ্রত করেন। এই শ্রেণি নামাজের বিনিময়ে যথোপযুক্ত সওয়াব পাবেন।

পঞ্চম স্তর এটা হচ্ছে নামাজিদের সর্বোচ্চ স্তর। তাদের বলা হয় ‘মুকাররাব’। অর্থাৎ বিশেষ নৈকট্যপ্রাপ্ত। নবিজি (সা.) যেমন বলেছেন, ‘নামাজ আমার চোখের শীতলতা’। এ প্রকারের মুসল্লিরা অন্তরের সুখ-তৃপ্তি ও আনন্দ নামাজের মাধ্যমে পূর্ণ করেন। নামাজের মাধ্যমেই আল্লাহর কাছ থেকে পার্থিব ও অপার্থিব সব চাহিদা পূরণ করেন। যারা নামাজকে নিজের চোখের শীতলতা বানিয়েছেন। আর বলাই বাহুল্য, দুনিয়ায় যার চোখ নামাজের দ্বারা শীতল হবে আখিরাতে তার চোখ রবের নৈকট্য পেয়ে শীতল হবে। সূত্র: আল-ওয়াবিলুস সাইয়িব

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড