মুনশি আমিনুল ইসলাম
হাতে কুরআনের অনুলিপি তৈরি করে এলাকায় রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের একজন সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা। সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের বাসিন্দা তিনি। নাম- খাজা মুহম্মদ আব্দুল হালিম। প্রায় এক বছর সময় ব্যয় করে ডায়রিতে বলপেন দিয়ে কুরআনের এই অনুলিপি করেছেন তিনি।
আব্দুল হালিম ১৯৫৮ সালে তৎকালীন শাহজাদপুর থানার পোরজনা ইউনিয়নের জামিরতা হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। সামসুল হুদা খান নামের আত্মীয়ের হাত ধরে যোগ দেন চট্টগ্রাম রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীতে। দীর্ঘ ৩৯ বছর চাকরি করে ১৯৯৭ সালে সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে চাকরি থেকে অবসরে যান তিনি।
কুরআন শিক্ষা ও কুরআন শরিফ হাতে লেখার নানা গল্প জানা গেল তার কাছে। বলেন, ‘১৯৫৮ সালে জামিরতা হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে ওই বছর আমি রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীতে যোগ দেই। দীর্ঘ চাকরিজীবনে ঢাকাতেই বেশি সময় কাটিয়েছি। ১৯৯৫ সালে রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর চিফ কমান্ডার এম এ রব আমাকে রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম ট্রেনিং সেন্টারে বদলি করেন। কিছুটা মনঃক্ষুণ্ন হয়ে রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম ট্রেনিং সেন্টারে যোগ দিই। ট্রেনিং সেন্টারে তেমন কোনো কাজ না থাকায় সেখানকার মসজিদের ইমাম মাওলানা সাইফ উদ্দিনের কাছে আমি ও আমিনুজ্জামান নামের এক সহকর্মীর সঙ্গে বিশুদ্ধ কুরআন তিলাওয়াত শিখতে যাই। শিশুকালে আমার মা হালিমা খাতুন ও ফুফা খাজা মজিবুর রহমানের কাছে প্রথম কুরআন শিখি। আমার ফুফা পাবনা শহরের রাধানগর জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন।’
খাজা আব্দুল হালিম বলতে থাকেন, ‘আমি প্রায় ২০ বছর আগে নিজ হাতে কুরআন শরিফের অনুলিপি তৈরির কাজ শেষ করি। তখন হয়তো কোনো কারণে লেখাগুলো কিছুটা ঝাপসা হয়ে যায়। আমার ছোট ভাই খাজা আবু সাইদ (মানিক) ও সৈয়দ আবদুর রশিদ (মতিন মিয়া) সেটি ফটোকপি করার পরামর্শ দেয়।’
পবিত্র কুরআনের এই অনুলিপি তৈরি করতে তার সময় লেগেছে প্রায় এক বছর। আরও জানান, ৩১৪ পৃষ্ঠার কুরআনের অনুলিপি তৈরি করতে কালো কালির বলপেন লেগেছে পাঁচটি। কুরআনের পবিত্রতা রক্ষায় কালি ফুরিয়ে যাওয়া কলমগুলো তিনি যমুনা নদীতে নিক্ষেপ করেছেন। প্রতিদিন নিয়ম করে মাগরিবের নামাজ শেষ করে লিখতে বসতেন।
সম্প্রতি হাতে লেখা কুরআনের অনুলিপিটি সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য জাতীয় জাদুঘরে দান করে দিয়েছেন তিনি।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড