• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুমিনের ভালোবাসা আল্লাহকে ঘিরে

  মুনশি আমিনুল ইসলাম

১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৩:০৭
ইসলাম
ছবি: প্রতীকী

আল্লাহর জন্য ভালোবাসা ঈমান পরিপূর্ণতার লক্ষণ। আর আল্লাহকে ভালোবাসার জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুসরণ করতে হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তবে আমার নবি (সা.)-এর অনুসরণ করো; তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ মার্জনা করবেন।’ (সুরা আলে ইমরান :৩১)

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যার মধ্যে তিনটি গুণ থাকবে সে ঈমানের স্বাদ অনুভব করবে। যার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সর্বাধিক প্রিয় হবে। অন্য কোনো ব্যক্তিকে সে একমাত্র আল্লাহর জন্য ভালোবাসবে। আল্লাহ কুফুরি থেকে রক্ষা করার পর আবার তাতে ফিরে যাওয়া তার কাছে আগুনে নিক্ষেপের মতো অপছন্দনীয় হবে।’ (সহিহ মুসলিম :৪৩)

মুমিন ব্যক্তি মূলত আল্লাহকেই ভালোবাসে। মানুষের ভালোবাসাও যদি হয় আল্লাহর জন্য তখন স্বয়ং আল্লাহ তাকে ভালোবাসেন। হাদিসে পাকে রয়েছে, ‘এক ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের সাক্ষাতের জন্য ঘর থেকে রওনা হলো। পথিমধ্যে আল্লাহ এক ফেরেশতাকে মানুষের বেশে পাঠালেন। ফেরেশতা জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কোথায় যাচ্ছ? সে উত্তর দিল, এই গ্রামে আমার এক ভাই থাকেন। তাকে দেখতে যাচ্ছি। ফেরেশতা জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার প্রতি কি তার কোনো অনুগ্রহ রয়েছে, যার বিনিময় দেওয়ার জন্য যাচ্ছ? সে বলল, না। আমি যাচ্ছি এই জন্য যে, আমি তাকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসি। ফেরেশতা বললেন, তাহলে শোন, আমি তোমার নিকট আল্লাহর দূত হিসেবে এসেছি এ কথা জানানোর জন্য যে, আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসেন; যেমন তুমি তাকে আল্লাহর জন্য ভালোবাস!’ (সহিহ মুসলিম :২৫৬৭)

মানুষের সহজাত প্রেরণা অন্যকে ভালোবাসা। এই ভালোবাসা যদি হয় নিঃস্বার্থ ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, তবে এর পুরস্কার অফুরন্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করবেন যারা আমার সন্তুষ্টির জন্য একে অন্যকে ভালোবেসেছিল, তারা কোথায়? আজ আমি তাদের আমার আরশের ছায়াতলে আশ্রয় দান করব।’ (সহিহ মুসলিম :২৫৬৬) অন্য বর্ণনায় রয়েছে, ‘আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যারা পরস্পরে ভালোবাসার সম্পর্ক রাখে, কেয়ামতের দিন তাদের জন্য নুরের মিম্বর স্থাপন করা হবে। যা দেখে নবি এবং শহীদগণ ঈর্ষা করবেন।’ (তিরমিজি শরিফ :২৩৯০)

অন্যত্র রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কাউকে আল্লাহর জন্য দান করল কিংবা আল্লাহর জন্য দান করা থেকে বিরত রইল এবং আল্লাহর জন্য কারও সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক স্থাপন করল কিংবা আল্লাহর জন্য কারও সঙ্গে বিদ্বেষ পোষণ করল এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিয়ে করল, তবে তার ঈমান পূর্ণতা লাভ করল।’ (তিরমিজি শরিফ :২৫২১)

আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসলে তাকে সে কথা জানিয়ে দেওয়া উচিত। তাহলে উভয় পক্ষ থেকে ভালোবাসা সৃষ্টি হবে এবং সে ভালোবাসা আরও প্রগাঢ় হবে। হজরত মিকদাদ বিন মাদিকারিব (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কেউ অন্যকে ভালোবাসলে যেন তাকে ভালোবাসার কথা জানিয়ে দেয়।’ (আবু দাউদ :৫১২৪)

ইসলামে পারস্পরিক ভালোবাসা সম্পর্ক রক্ষার গুরুত্ব এত বেশি যে, এর ওপর ঈমানের ভিত্তি রাখা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা জান্নাতে যেতে পারবে না যতক্ষণ না ঈমানদার হবে। আর তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না পরস্পরকে ভালোবাসবে। আমি কি তোমাদের এমন আমলের কথা বলে দেব না, যা করলে তোমাদের পরস্পরের মাঝে ভালোবাসা সৃষ্টি হবে? তা হলো সালামের প্রসার ঘটানো।’ (সহিহ মুসলিম :৫৪)। অন্য একটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা একে অন্যকে উপহার দাও। তাহলে তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও হৃদ্যতা তৈরি হবে।’ (আদাবুল মুফরাদ :৫৯৪)

হজরত মুয়াজ (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি, আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য যারা একে অন্যকে ভালোবাসে, পরস্পর ওঠাবসা ও দেখা-সাক্ষাৎ করে কিংবা একে অন্যের জন্য খরচ করে, তাদের জন্য আমার ভালোবাসা ওয়াজিব হয়ে যায়।’ (মুসনাদে আহমদ :২১৫২৫)

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড