• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ইসলামের প্রথম নির্দেশনাই হলো ‘পড়ো’

  মুনশি আমিনুল ইসলাম

১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৬:৪০
ইসলাম
ছবি: প্রতীকী

বই মানুষের অবসরের সঙ্গী, কথা বলার উত্তম বন্ধু। পৃথিবীতে বই-ই একমাত্র বন্ধু, যার সঙ্গে প্রাণ খুলে কথা বলা যায়। বই শিক্ষিত সমাজের বন্ধু, ভাই। বই মানেই শিক্ষার প্রতি মায়া ও মমতাবোধ। ইসলাম ধর্মের প্রথম নির্দেশনাই হলো- ‘পড়ো’। পবিত্র আল-কুরআনে ঘোষণা হচ্ছে,

اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ () خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ () اقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ () الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ () عَلَّمَ الْإِنْسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ

অর্থাৎ: ‘পড়ুন আপনার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন জমাট রক্ত থেকে। আর আপনার প্রভু অনেক সম্মানিত ও দানশীল। যিনি মানুষকে কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি মানুষকে এমন সব বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন, যা সে জানত না। (সুরাতুল আলাক :১-৫)

পাঠের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে অন্যত্র বলা হয়েছে,

قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ إِنَّمَا يَتَذَكَّرُ أُولُو الْأَلْبَابِ

অর্থাৎ: ‘হে নবি! আপনি বলুন যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান হতে পারে? উপদেশ গ্রহণ করে একমাত্র জ্ঞানীগণই। (সুরাতুয যুমার :৯) এভাবে ইসলামের প্রতিটি পরতে পরতে রয়েছে ‘জ্ঞানী হও’, ‘জ্ঞান আহোরণ করো’, ‘জ্ঞানীদের সঙ্গে চলো’- এ জাতীয় উপদেশ। মোটকথা, জ্ঞানার্জনে সর্বদা উৎসাহিত করে ইসলাম। আর সেই জ্ঞানার্জনের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো- বই।

বই মানুষের মনের খোরাক জোগায়। বই পড়া ব্যতীত মানুষ সত্যিকারার্থে সফলতার আলোয় আলোকিত হতে পারে না। বই পড়লে মস্তিষ্ক চিন্তা করার খোরাক পায়, সৃষ্টি করার যোগ্যতা বাড়ে এবং জ্ঞানভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়। বই পড়লে মানুষ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিকমনস্ক হয়ে ওঠে। পৃথিবীতে যারা জগদ্বিখ্যাত সফল মানুষ হয়েছেন, তারা বই পড়েই বড় হয়েছেন। পৃথিবীর যে কোনো বরেণ্য মনীষীর জীবনী পড়লে আমরা এমনটিই জানতে পারি।

হাদিস শরিফে পড়া এবং গবেষণার প্রচুর তাগিদ রয়েছে। জ্ঞানার্জনের জন্য বাধ্যতা আখ্যায়িত করে রাসুল (সা.) বলেন,

عن أنس بن مالك قال : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم طلب العلم فريضة على كل مسلم

‘হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর ওপর ফরজ বা অবশ্য কর্তব্য।’ (ইবনে মাজাহ :১২৪)

বই পড়ার গুরুত্ব আমরা বুঝতে পারি দার্শনিক ওমর আল খৈয়াম এর একটি উক্তি থেকে। তিনি বলেন, ‘রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু একটি বই অনন্ত যৌবনা।’ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘আমাকে মারতে চাইলে চাকু ছুরি কিংবা কোনো পিস্তলের প্রয়োজন নেই, বরং আমাকে বইয়ের জগৎ থেকে দূরে রাখো।’ নর্মান মেলর বলেন, ‘আমি চাই যে বই পড়া অবস্থায় যেন আমার মৃত্যু হয়।’ টলস্টয় বলেন, ‘জীবনে তিনটি জিনিস খুবই প্রয়োজন। তা হলো বই, বই এবং বই।’

বর্তমানে আমাদের কাছে বই থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বস্তু মোবাইল ফোন, আইপ্যাড, ল্যাপটপ, দামি খেলনাসহ অনেক কিছু। বই যে সদা প্রসঙ্গ ও অনুগামী এটা এখন অনেকটা কল্পনার বিষয়। এখনকার ছেলে-মেয়েদের যদি বলা হয় হাঁটতে ঘুরতে তোমরা বই পাঠ করবে; তারা অবাক হয়! এটা কি কথা? অথচ উন্নত বিশ্বে দেখা যায়; ট্রেন, বাস, রেলস্টেশনে যেখানেই সময় পাচ্ছে তারা বই পড়ছে। সেখানে বড় বড় শপিং মলে নানা রকম শোরুমের পাশাপাশি বইয়েরও মনকাড়া শো-রুম থাকে।

শিশু-কিশোরদের পাঠ্যাভ্যাস কমে যাওয়ার পেছনে আরেকটি কারণ হলো, পাঠ্যবইয়ের বাইরে কোনো বই আমরা আমাদের সন্তান কিংবা ছাত্রদের পড়তে দিতে চাই না। পড়াশোনার ক্ষতির কথা বলে তাদেরকে বই কেনা থেকে বিরত রাখা হয়। এ পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে এসে ছোটবেলা থেকেই তাদের বই পড়ার প্রতি অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন।

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড