• বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

প্লাইউড নিয়ে ঝগড়া

মালয়েশিয়ায় ইন্দোনেশিয়ান শ্রমিকের ছুরিকাঘাতে বাংলাদেশির মৃত্যু

  আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া প্রতিনিধি

০৩ আগস্ট ২০২৩, ১১:৫৯
মালয়েশিয়ায় ইন্দোনেশিয়ান শ্রমিকের ছুরিকাঘাতে বাংলাদেশির মৃত্যু
গ্রেফতারকৃত আসামিরা (ছবি : অধিকার)

প্লাইউড নিয়ে মারামারি করতে গিয়ে মালয়েশিয়ায় ইন্দোনেশিয়ান শ্রমিকের ছুরিকাঘাতে বাংলাদেশি নিহত হওয়া খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ৫৩ বছর বয়সী ইন্দোনেশিয়ান নাগরিককে গ্রেফতার করে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২৯ জুলাই সুঙ্গাই পেটানির শ্রী আস্তানায় স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে প্লাইউড নিয়ে তর্কের সময় লাঠি ক্ষুব্ধ হয়ে ৫৩ বছর বয়সী ইন্দোনেশিয়ান নাগরিক বাংলাদেশি শ্রমিকের পেটে ছুরিকাঘাত করে। অধিক রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই বাংলাদেশির মৃত্যু হয়। উভয়েই একটি হাউজিং সাইটে নির্মাণ কোম্পানিতে কাজ করছিলেন।

নিহত বাংলাদেশি মো. সুমন মিয়া (৩১)। কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম থানার আদমপুর ইউনিয়নের টুকারকান্দি গ্রামের মোল্লা বাড়ির জিয়াউর রহমানের ছেলে মো. সুমন মিয়া (৩১) বলে জানা গেছে।

কুয়ালা মুদা জেলা পুলিশ প্রধান, সহকারী কমিশনার জাইদি চে হাসান বলেন, ছুরির আঘাতে পেটে গুরুতর আঘাতের কারণে বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সহকারী কমিশনার বলেন, ঘটনাটি তাদের মধ্যে প্লাইউড নিয়ে বিরোধের কারণে হয়েছিল। তদন্তে জানা গেছে, সুমন প্রথমে ইন্দোনেশিয়ান নাগরিককে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে লোকটি রেগে যায় এবং তাকে ছুরিকাঘাত করে প্রতিশোধ নেয় যোগ করেন সহকারী কমিশনার জাইদি চে হাসান।

জাইদি বলেছেন, ইন্দোনেশিয়ান নাগরিক পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ওই দিন রাত ৮টায় বেডং এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ এখনো এই ঘটনায় যে অস্ত্র ব্যবহার করেছিল তা খুঁজছে।

সুমনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সুলতান আব্দুল হালিম হাসপাতালে (এইচএসএএইচ) পাঠানো হয়েছে এবং তদন্ত সম্পূর্ণ করতে ঘটনাস্থলে প্রত্যক্ষদর্শীদের সন্ধান করছে পুলিশ।

৩১ জুলাই, ম্যাজিস্ট্রেট খায়রাতুল আনিমা জেলানীর আদেশের পর দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় আরও অধিক তদন্তে ইন্দোনেশিয়ান নাগরিককে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। দেশে থাকা সুমনের মা সাফিয়া (৪০) সাথে ফোনে কথা বলে জানা গেছে, চার ভাই-বোনের মধ্যে সুমন দ্বিতীয়। পরিবারে সচ্ছলতা ফিরাতে ধার দেনা করে ২০১৪ সালে সুমন নদী পথে পাড়ি জমান মালয়েশিয়ায়।

কান্না জড়িত কণ্ঠে সুমনের মা জানান, মালয়েশিয়া যাওয়ার পর সুমনের ১০ বছর কেটে যায় অবৈধ ভাবেই। এই ১০ বছরে বাবা মাকে একটি টাকাও দিতে পারেনি সুমন। সুদে টাকা এনে তাকে মালয়েশিয়া পাঠানো হয়েছিল। এখনো সুদের টাকা পরিশোধ করতে পারিনি। লোকজন টাকার জন্য তাড়া দেয়। সুমনের বাবা জিয়া মিয়া ঝালমুড়ি বিক্রি, আর মা বাসায় বাসায় জিয়ের কাজে চলে সংসার।

এ দিকে ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন সুমনের মা। সুমনকে এক নজর দেখেতে মা মরিয়া হয়ে উঠেছেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে কবে সুমনের মরদেহ দেশে পাঠানো হবে এ বিষয়ে জানতে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

সুমনের বোন জামাই নূর নবী জানিয়েছেন, সুমনের লাশ দেশে আনতে ২ আগস্ট বুধবার যাবতীয় কাগজপত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দেওয়া হয়েছে। আক বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস থেকে সুমনের কাগজপত্র মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন নূর নবী।

প্রবাস জীবন, আকাঙ্খা, প্রত্যাশা-প্রাপ্তির সমীকরণ সবই লিখুন দৈনিক অধিকারকে [email protected] আপনার প্রবাস জীবনের প্রতিটি ক্ষুদ্র অনুভূতিও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড