• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বসনিয়ার জঙ্গলে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের ফেরাতে চায় আইওএম

  প্রবাস ডেস্ক

২২ অক্টোবর ২০২০, ১০:১৯
বসনিয়ার জঙ্গলে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের ফেরাতে চায় আইওএম
বসনিয়ার জঙ্গলে শীতে কাঁপছে একদল বাংলাদেশি (ছবি: রয়টার্স)

সম্প্রতি জার্মান মিডিয়া ডয়চে ভেলেসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশ বসনিয়ার জঙ্গলে অবস্থান করা বাংলাদেশিদের করুণ অবস্থার চিত্র ফুটে উঠেছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্রের বরাতে ডয়চে ভেলে জানায়, গত কয়েক দিনে ডয়চে ভেলের সংবাদ প্রকাশের পর জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা—আইওএমের বাংলাদেশ অফিস থেকে গত মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ফিরিয়ে আনার অনুরোধ করা হয়েছে। যদিও মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

নিজের পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ডয়চে ভেলেকে বলেন, সরকার চাইলেই তো তাদের ফিরিয়ে আনতে পারে না। এ ছাড়া যারা আটকে রয়েছেন, তারা কি ফিরে আসতে চান? সেটাও তো আমরা নিশ্চিত নই। ফলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অভিবাসন ও উদ্বাস্তু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সি আর আবরার বলেন, প্রথম কথা হলো, তারা (জঙ্গলে আটকেপড়া ব্যক্তিরা) বাংলাদেশি নাগরিক। তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ (বাংলাদেশ) সরকারকে নিতে হবে। কিন্তু সেখানেও নানা জটিলতা আছে। সেই প্রক্রিয়াটি কী হবে? এই ফিরিয়ে আনার খরচ কে দেবে?

তার মতে, এমন হতে পারে যারা অবৈধভাবে সেখানে গেছেন, তাদের ফিরিয়ে আনবে সরকার, কিন্তু দেশে ফেরার পর খরচের টাকা তাদেরই দিতে হবে। আবার যারা অবৈধভাবে বিদেশে যাচ্ছেন, তাদের যদি এভাবে সরকার ফিরিয়ে আনতে শুরু করে, তাহলে অবৈধ অভিবাসনকে উৎসাহিত করা হচ্ছে, এমনটিও কেউ মনে করতে পারে।

আরও পড়ুন : মিয়ানমার সীমান্তে ভারতীয় সেনাদের ওপর হামলায় জওয়ান নিহত

তিনি বলেছিলেন, ফলে সরকারকেই একটা পথ বের করতে হবে। কারণ যারা সেখানে আছেন, তারা তো বাংলাদেশের নাগরিক, এটা তো আপনি অস্বীকার করতে পারবেন না।

জানা গেছে, অবৈধপথে ইতালিতে ঢুকতে অনেকেই নতুন রুট—বসনিয়া, সার্বিয়া, স্লোভেনিয়া, ক্রোয়েশিয়াকে বেছে নিয়েছে। মূলত ক্রোয়েশিয়া থেকে অ্যাড্রিয়াটিক সাগর পাড়ি দিয়ে লোকজনকে ইতালি পাঠাচ্ছে চক্রটি। নতুন এই পথে ইতালি যাওয়া বাংলাদেশির সংখ্যা গত তিন বছরে বেড়ে গেছে পাঁচ গুণ।

গত ৯ মাসে দুই হাজার ৫৫৩ জন বাংলাদেশি বসনিয়া পৌঁছেছেন। সেখানে তারা নাম নিবন্ধন করেছেন। এদের শেষ গন্তব্য ইতালি। আইওএম কর্মকর্তারা জানান, বৈধ-অবৈধ যাই হোক, বসনিয়ায় এসে অভিবাসীদের নাম নিবন্ধন করতে হয়। গত তিন বছরে নিবন্ধনকারী বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার।

ব্র্যাকের অভিবাসন বিভাগের প্রধান শরিফুল হাসান ডয়চে ভেলে জানিয়েছেন, ফিরিয়ে আনার একটা প্রক্রিয়া আছে। বহু অবৈধ অভিবাসীকে সরকার ফিরিয়ে আনছে। কত মানুষকে এভাবে আনবে? তিনি সরকারের কাছে অনুরোধ করবেন, বসনিয়ার জঙ্গলে আটকে থাকা বাংলাদেশিদের বিষয়টি মানবিকভাবে বিবেচনা করা হোক।

আরও পড়ুন : চীনকে চাপে রাখতে তাইওয়ানের সঙ্গে নতুন চুক্তিতে ভারত

তার মতে, সরকার ফিরিয়ে আনতে চাইলেও তারা তো আসতে চান না। যখন ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে, তখন দেখা যাচ্ছে তারা সেখান থেকে পালিয়ে অন্য কোথাও চলে যাচ্ছেন। ফলে যারা সেখানে গেছেন, তারা জেনে বুঝেই গেছেন।

তিনি বলেছিলেন, পাঁচ লাখ থেকে শুরু করে ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত তারা খরচ করেছেন। এখন দেশে ফিরে তারা কী করবেন? এ কারণে অবৈধ অভিবাসন নিরুৎসাহিত করতে সরকারের পাশাপাশি প্রতিটি পরিবারেও সচেতনতা দরকার। আপনি দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও দেখবেন অনেকে অবৈধভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদেশে যাচ্ছেন। ফলে পরিবার থেকেই সচেতনতা দরকার।

বাংলাদেশ জনশক্তি রপ্তানি ব্যুরোর মহাপরিচালক শামসুল আলম বলেছেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে এখনো বসনিয়ার জঙ্গলে আটকে থাকাদের ব্যাপারে আমাদের কিছু বলেনি। আইওএম অনুরোধ করলে নিশ্চয়ই মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করবে। তখন আমরা এ বিষয়ে বলতে পারব।

আরও পড়ুন : আজারবাইজানে আর্মেনীয় গোলাবর্ষণ বন্ধে এবার মাঠে যুক্তরাষ্ট্র

এ দিকে ডয়চে ভেলের দাবি, বসনিয়ার জঙ্গলে আটকে থাকাদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তা সরাসরি বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

প্রবাস জীবন, আকাঙ্খা, প্রত্যাশা-প্রাপ্তির সমীকরণ সবই লিখুন দৈনিক অধিকারকে [email protected] আপনার প্রবাস জীবনের প্রতিটি ক্ষুদ্র অনুভূতিও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড