আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া প্রতিনিধি:
কিছুতেই সিন্ডিকেটমুক্ত হতে পারছে না মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। আর সেই সিন্ডিকেটের চালানো দুর্নীতির কারণে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের নতুন সরকার গত বছর মালয়েশিয়ান তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘সিনারফ্লাক্স’ এর এসপিপিএ সিস্টেমকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। মূলত এসবের জেরে পরবর্তীতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে।
সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের জোর প্রচেষ্টায় বন্ধ থাকা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্তের সব প্রক্রিয়া যখন সম্পন্ন প্রায়; ঠিক তখনই নতুন আভরণে সিন্ডিকেটের পক্ষে বিপক্ষে তৎপর হয়ে উঠেছেন খোদ বায়রার প্রথম সারির নেতারা।
দুদেশ মধ্যেকার নানা বিষয়ের সমাধান করে শ্রমবাজরটি চালু করতে আগামী ৬ নভেম্বর বৈঠক করতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধি মালয়েশিয়া যাচ্ছেন। বৈঠকের মধ্য দিয়ে ভালো খবরের আশা করছেন মন্ত্রী ইমরান আহমদ। মন্ত্রী বারবারই বলে আসছেন, ‘যেহেতু কর্মী নেবে তারা, তাই শ্রমবাজার চালুর বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকারের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।’
যদিও এমন আশার খবরের প্রায় এক সপ্তাহ আগে জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস-বায়রা মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান একটি চিঠি লেখেন। যেখানে তিনি মালয়েশিয়া সরকারের দুই মন্ত্রীর কাছে সব উলটপালট করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
মূলত সেই চিঠিটি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং মালয়েশিয়া সরকার যা চাচ্ছে, এই চিঠি সেটার বিরোধিতা করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে শ্রমবাজার খোলার বিষয়টি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া ঐ চিঠিতে দেখা যায়, বায়রা মহাসচিব শ্রমবাজার বিষয়ে কিছু মতামত তুলে ধরেছেন। বিশেষ করে শ্রমবাজারের মেডিকেল এবং কর্মী পাঠানোর পদ্ধতি বিষয়ে দীর্ঘ বক্তব্য তুলে ধরেছেন বায়রা মহাসচিব। শুধু তাই নয়, মালয়েশিয়া সরকারকে কিছু পরামর্শও দিয়েছেন বায়রার মহাসচিব।
চিঠির বিষয়ে বায়রা মহাসচিব বলেন, ‘শ্রমবাজার এবং কর্মীদের সুবিধার জন্য এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। সাধারণ ব্যবসায়ীদের পক্ষে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে।’
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চিঠির বিষয়টি আগে কিছুই জানানো হয়নি। বুধবার সকালে মন্ত্রী জেনেছেন। তিনি বিষয়টির খোঁজ নিচ্ছেন। মালয়েশিয়া সফরের আগে এমন চিঠির বিষয়টিতে মন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে।
দুই পাতার এই চিঠিতে নোমান লিখেছেন, আইটি কোম্পানি বেস্টিনেট ( মালয়েশিয়ান কোম্পানি ) মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারটি আবারো নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে এই প্রতিষ্ঠানটিকে ২০১৮ সালে বাতিল করে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন চৌধুরী নোমান। বায়রার সাধারণ সদস্যরা এই পদ্ধতি আর চায় না বলেও চিঠিতে লিখেন বায়রা মহাসচিব।
তিনি আরও বলেন, ‘এই পদ্ধতির মাধ্যমে মেডিকেল সেন্টার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত নয়।’
চৌধুরী নোমান তার চিঠিতে মালয়েশিয়া সরকারকে বেশকিছু পরামর্শও দেন। যেখানে তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়া সরকার নতুন পদ্ধতি চালুর বিষয়ে কাজ করছে। সেটা না হওয়া পর্যন্ত পুরাতন সেমি অটোমেটিক পদ্ধতি ( ২০০৭ সালের ) চালু করতে মালয়েশিয়া সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন বায়রার মহাসচিব।’
তার মতে, বাংলাদেশ একটি ডাটাবেজ করেছে। মধ্যবর্তী এই সময়ে অন্য একটি পদ্ধতি চালু করতে পারে বলে পরামর্শ দেন নোমান। যেটা দুই দেশের মধ্যে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। আগের মেডিকেল সেন্টারগুলো প্রবাসী মন্ত্রণালয় দ্বারা অনুমোদিত নয়। আগের সিস্টেম চালু হলে এটা অভিবাসন ব্যয় বাড়বে বলে মনে করেন নোমান। বায়রা মেম্বারা আগের সিস্টেম চায় না বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন :- বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত বই কুইন্স লাইব্রেরির কাছে হস্তান্তর
তাছাড়া নিজের পরামর্শে চৌধুরী নোমান বলেন, বেস্টিনেট বাদে মালয়েশিয়ায় অন্য আইটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া যেতে পারে।
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড