অর্থ আত্মসাতের মামলায় বিএনপির এমপি হারুনের পাঁচ বছর কারাদণ্ড

শুল্কমুক্ত গাড়ি ক্রয় করে পরে তা বিক্রির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশিদ এমপিকে ৫ বছরের দণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ দণ্ড দেন।

কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশিদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য। একাদশ জাতীয় সংসদে বিএনপির সংসদীয় দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে পার্লামেন্টে জোরালো বক্তব্য রেখে আসছিলেন বিএনপির এই সংসদ সদস্য। চলতি মাসের ১ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখে এসে তার মুক্তির দাবি জানান। পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গেও বৈঠক করেন এমপি হারুন। খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তির বিষয়ে সরকারকে নমনীয় হতে সেতুমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন তিনি। পরে এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। আজ তাকে দুদকের মামলায় কারাগারে পাঠানো হলো।

দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, এমপি থাকাবস্থায় শুল্ক মুক্ত গাড়ি এনে তা বিক্রির ঘটনায় হারুন অর রশিদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা হয় ২০০৭ সালের মার্চের ১৭ তারিখ। মামলার বাদী হলেন পুলিশের উপপরিদর্শক ইউনুস আলী। মামলাটি তদন্ত করে হারুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ওই বছরের জুলাইয়ের ১৮ তারিখে আদালতে চার্জশিট দেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোনায়েম হোসেন। আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে হারুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের আগস্ট মাসের ২০ তারিখ বিচার শুরু করেন আদালত।

মামলার অপর দুই আসামি হলেন- ব্যবসায়ী এনায়েতুর রহমান ও গাড়ি ব্যবসায়ী ইশতিয়াক সাদেক। তাদেরও দণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে দুদকের আদালত পরিদর্শক আশিকুর রহমান বলেন, দুর্নীতির এই মামলায় বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর ব্যবসায়ী এনায়েতুর রহমানকে দুই বছর এবং ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গাড়ি ব্যবসায়ী ইশতিয়াক সাদেককে তিন বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং জরিমানা করা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা। হারুন অর রশিদ ছাড়া বাকিরা পলাতক রয়েছেন।

এ ব্যাপারে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মইনুল ইসলাম জানান, মামলার রায় ঘোষণার পর দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হারুন অর রশিদকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়।

সংসদ সদস্য থাকাবস্থায় শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি সুবিধা নিয়ে পরবর্তীতে তা বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের মামলায় হারুন অর রশিদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এই মামলা হয় ১৩ বছর আগে ২০০৭ সালে। দণ্ডবিধির ৪০৯ এবং কাস্টমস অ্যাক্টের ১৫৬ ধারায় হারুন অর রশিদ, ব্যবসায়ী এনায়েতুর রহমান এবং গাড়ি ব্যবসায়ী সাদেককে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

ওডি/এএস