• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির কঠোর হুঁশিয়ারি

  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৬:১৪
ছাত্রলীগ
মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক (ছবি : সংগৃহীত)

চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়।

তিনি বলেন, ছাত্রলীগ কোনো চাঁদাবাজ, অন্যায়কারী ও টেন্ডারবাজকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না, দেবেও না। ছাত্রলীগের কারও বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি বা সংগঠনের দুর্নাম করার কোনো প্রমাণ মিললে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এ সময় জয় এ হুঁশিয়ারি দেন।

বিতর্কিত কাণ্ড ও নানা অভিযোগের মুখে পদত্যাগ করেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন।

আল নাহিয়ান খান বলেন, দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ছাত্রলীগের দায়িত্ব দিয়েছেন। এটি আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হলেও আমরা মনে করি, যত চ্যালেঞ্জই আসুক, আমরা সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মাধ্যমে জাতির পিতার হাতে গড়া ছাত্রলীগকে এগিয়ে নেব।

ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলেন, আমরা সেভাবেই চলব, যেভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নির্দেশনা দেবেন। যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করে যাব। অন্য বিষয় যা রয়েছে; তা আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা করে করব।

জয় বলেন, অবশ্যই কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে ছাত্রলীগকে পরিচালনা করতে হবে। সেজন্য আমরা বসে সার্বিক একটা ছক আঁকব। সেই ছক অনুযায়ী কমিটির বাকি ১০ মাস সময় চলব। ছাত্রলীগের যে কমিটিগুলো বিলুপ্ত হয়েছে বা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে, সেগুলো বিলুপ্ত করে যুগোপযোগী ছাত্রলীগ গড়ে তুলব। সব সময় সচেষ্ট থাকব; যেন কোনো কালিমা আমাদের গায়ে না লাগে।

ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আমরা দুইজন দায়িত্ব পেয়েছি। কমিটির সামনের ১০ মাসের জন্য আমরা এই দায়িত্ব পেয়েছি। কাল সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর আনুষ্ঠানিকভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করব। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক জননেত্রী শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে আমাদের কর্মপরিকল্পনা নির্দিষ্ট করব।

প্রসঙ্গত, গত ৮ আগস্ট ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্যের বাসভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপাচার্যের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান মহাপরিকল্পনার ৪-৬ শতাংশ টাকা চাঁদা দাবি করেন বলে পরবর্তীতে উপাচার্যের পক্ষ থেকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংবাদ প্রকাশ হয়।

খবরে বলা হয়, উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার পেয়েছে- এমন কোম্পানির কাছ থেকে ভিসিকে টাকার ব্যবস্থা করে দিতে বলেন শোভন ও রাব্বানী। কিন্তু ভিসি তাতে রাজি না হওয়ায় তার সঙ্গে দুই নেতা শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণ করেন।

এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শোভন-রাব্বানীর ওপর প্রচণ্ড বিরক্ত হয়েছেন বলেও জানা যায়। এমনকি প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের পদ থেকে দুই শীর্ষ নেতাকে পদচ্যুত করতে পারেন বলেও সংবাদ প্রকাশ হয়।

এর প্রেক্ষিতে গোলাম রাব্বানী চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে গণমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন, ঈদুল আজহার আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এ খবর জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং এরই প্রেক্ষিতে উপাচার্য আমাদের স্মরণ করেন। আমরা দেখা করে আমাদের অজ্ঞাতসারে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে টাকা দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তোলায় তিনি বিব্রতবোধ করেন।

তবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গোলাম রাব্বানীর এমন বক্তব্যকে ‘অসত্য‘ ও ‘মিথ্যা’ দাবি করে এর প্রতিবাদ জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগ থেকে পৃথক বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।

ওই বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগ বলেছে, জাবি ছাত্রলীগকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা দেওয়ার যে দাবি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী করেছেন, তা অসত্য। এছাড়া ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশেই উপাচার্য ড. ফারজানা ইসলামের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।

সর্বশেষ আজ (১৪ সেপ্টেম্বর) সাভারের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, বহুদিন পর ভালো একটি গল্প পড়লাম। আমার আর কিছু বলার নেই। একেবারেই বানোয়াট গল্প। টাকা-পয়সা সংক্রান্ত কোনো কথা তাদের সঙ্গে আমার হয়নি।

তিনি আরও বলেন, তারা (ছাত্রলীগ) তাদের মতো করে কাজ করে। কোথায় কাজ করে, কী কমিশন পায়, কী পায় না পায় সেগুলো জানতে চাওয়াতে আমি তাদের বলেছি, আমার সঙ্গে টাকা পয়সা নিয়ে কোনো আলাপ তোমরা করবে না। তোমরা যেটা করতে চাও তা তোমরা নিজেদের মতো করো, তোমাদের মতো চলো। আমার সঙ্গে এগুলো করো না। এটুকুই ছোট কথা। আর তারা একটা গল্প বানিয়েছে।

অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, আমার বিশ্বাস দেশের প্রধান জানেন, তারা গল্প বানিয়েছে, নাকি আমি বানিয়েছি। আর তদন্ত করলে, যে কোনো ধরনের অনুসন্ধান করলে আপনারাও জানতে পারবেন যে, এ ধরনের কিছু হয়েছে কি না। আমার আর এর বেশি কিছু বলার নেই।

ওডি/আরএআর/এমআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড