অধিকার ডেস্ক
দীর্ঘ ২৭ বছর পর ভোটের মাধ্যমে নির্ধারিত হচ্ছে বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের নেতৃত্ব৷ এতে থাকতে পারছেন না বিবাহিত ও অছাত্ররা।
১৯৯২ সালে ছাত্রদলে কাউন্সিলরদের ভোটে সর্বশেষ নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়েছিল৷ এরপরের সব কমিটিকেই বলা হয় পকেট কমিটি৷ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ও শীর্ষ নেতারা উপলব্ধি করেছেন, দল ক্ষমতায় না থাকলে এই পকেট কমিটি কার্যকর কোনো ভূমিকাই রাখতে পারে না।
তারা মনে করেন, আন্দোলন-সংগ্রামে সামনের সারিতে থাকে ছাত্র সংগঠন৷ তবে সদ্য বিলুপ্ত ছাত্রদলের কমিটি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে তেমন কোনো ভূমিকাই রাখতে পারেনি৷ পকেট কমিটির সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থী ও তৃনমূলের কোনো যোগাযোগ থাকে না৷ ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল প্যানেলের এত অল্প ভোট পাওয়াই তার প্রমাণ৷
সর্বশেষ ২০১৪ সালে ছাত্রদলের কমিটি গঠন করে দেয় বিএনপি৷ ওই কমিটির সভাপতি রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান৷ গত ৩ জুন কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়৷ আর বয়স্করা তাদের নেতৃত্বে সুযোগ দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করলেও তা উপেক্ষা করে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷
ইতোমধ্যে নির্বাচনে ভোটার তালিকা (কাউন্সিলর) চূড়ান্ত করা হয়েছে৷ প্রার্থী তালিকাও চূড়ান্ত হয়েছে৷ সভাপতি পদে ৯ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৯ জন প্রতদ্বন্দ্বিতা করছেন৷ কাউন্সিলর ৫৩৪ জন৷ প্রত্যেক জেলা ও জেলার মর্যাদায় ইউনিট থেকে সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এই ৫ জন করে ভোটার হয়েছেন৷
সভাপতি প্রার্থীদের একজন মামুন খান বলেন, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের এই উদ্যোগ কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের সম্পর্ক সুদৃঢ় করবে৷ নেতারা আগেই সবার পরিচিত হবেন৷ আগে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঠিক করে দেওয়ার পর আমরা তাদের চিনতাম নাম জানতাম৷
যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা ভোটের জন্য নিজ উদ্যোগে জেলায় জেলায় গিয়েছেন৷ কোনো প্যানেল বা গ্রুপে নয়৷ সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ডালিয়া রহমান বলেন, এটাই একটা বড় কাজ৷ আমি ভোটের জন্য প্রায় সব জেলায় গেছি৷ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছি৷ সবার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে৷ ভোটকে সামনে রেখে তৃণমূল চাঙ্গা হয়ে উঠেছে৷ আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলকে আরও শক্ত করার জন্য যোগ্য নেতৃত্বকে ভোট দেওয়ার আবেদন করছি৷
যারা কাউন্সিলর হয়েছেন তারাও ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে প্রাধান্য দিচ্ছেন৷ তারাও চান এমন নেতৃত্ব হোক যারা রাজপথের ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে পারবেন৷ যাদের সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগ থাকবে৷ যাদের সবাই চিনবে৷
গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক ও ভোটার আজহারুল ইসলাম নাঈম বলেন, আমরা এবার তাকেই ভোট দেব যারা আন্দোলন সংগ্রামে অতীতে ছিলো৷ ভবিষ্যতেও থাকবে৷ যাদের কমিটমেন্ট আছে৷ এরকম চার-পাঁচ জন আছেন৷ কোনো সিন্ডিকোটের প্রভাবে আমরা ভোট দেব না৷
এদিকে অভিযোগ আসছে যে, সাবেক ছাত্রনেতাদের বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে৷ তবে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সাবেক ছাত্রনেতা এবং বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মোশারফ হোসেন বলেন, কেউ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে থাকতে পারেন৷ কিন্তু সেই চেষ্টায় কাজ হবে না৷ কারণ ভোটারেরা তৃণমূলের পরীক্ষিত নেতা৷ তাদের প্রভাবিত করা সহজ হবে না৷ আর আমরাও কঠোর নজর রাখছি৷
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপর দুইটা পর্যন্ত গোপন ব্যালটে ছাত্রদলের এই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তবে ছাত্রদলের এক নেতার করা মামলায় এই নির্বাচনে আদালত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় বা অন্য কোনো জায়গায় ভোট নেওয়া হবে৷ ইতোমধ্যে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ছাড়াও আরো ৬ জন সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে৷
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ডাকসুর সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকন ৷ এখন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খোকন বলেন, আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করে ছাত্রদলের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে চাই৷ এর মাধ্যমে আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে চাই৷ কোনো ‘পিক এন্ড চুজ’ হবে না৷ ভোটের মাধ্যমেই হবে৷ এটা আমাদের দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ৷ ডয়চে ভেলে।
ওডি/এমআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড