• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ঢাকার দুই সিটিতে তাবিথ-ইশরাককে বিএনপির সবুজ সংকেত  

  নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ আগস্ট ২০১৯, ১১:০৮
তাবিথ-ইশরাক
তাবিথ আউয়াল বামে, ইশরাক হোসেন ডানে (ছবি : সংগৃহীত)

সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের প্রথম দিকেই সম্ভাবনা রয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের। সিটি নির্বাচন নিয়ে দেশের সরকার বিরোধী দল বিএনপির প্রত্যাশা কম থাকলেও ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রার্থীর সম্ভাব্য তালিকা অনেকটাই চূড়ান্ত করা হয়েছে।

দলের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন ঢাকা সিটি নির্বাচনে উত্তরে সাবেক প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণে সাবেক ঢাকা সিটির মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেনই প্রার্থী হবেন।

বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ঢাকা উত্তরের জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পছন্দ গত সিটি নির্বাচনের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। তিনিই দলের প্রার্থী সেই বার্তা ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি নেতাকর্মীদের জানিয়েও দিয়েছেন তারেক রহমান। উত্তর কমিটিকে তাবিথের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণে প্রভাবশালী নেতা স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অথবা তার স্ত্রী মহিলা দলের সভাপতি ও গতবারের প্রার্থী আফরোজা আব্বাসের মেয়রপ্রার্থী পদে নির্বাচন করার আগ্রহ নেই।

তাই দক্ষিণে এবার তারেক রহমানের পছন্দের তালিকায় রয়েছেন বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন। তাকেই প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের হাইকমান্ড।

তবে ঢাকা সিটি নির্বাচন যথাসময়ে হবে কিনা এই নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে বিএনপির। দলের নীতিনির্ধারকদের আশঙ্কা, প্রাণঘাতী ডেঙ্গু নিয়ে বর্তমানে দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে সরকার যথাসময়ে নির্বাচন দেবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা আছে। তবে দল তাদের প্রার্থী চূড়ান্তকরণের কাজ এগিয়ে রাখছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, সব স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। সে মোতাবেক সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও যাবে।

সম্ভাব্য প্রার্থী কারা হতে পারেন এই সম্পর্কে তিনি বলেন, কারা প্রার্থী হবেন তা নিয়ে দলের একটি সিদ্ধান্ত আগেই থাকে। এবারও সে রকম প্রস্তুতি তো আছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে যাদের যোগাযোগ হয়েছে, তাদের তিনি তার পছন্দের প্রার্থীদের নাম জানিয়েছেন।

ঈদের আগে তারেক রহমানের নির্দেশে দুই মেয়রপ্রার্থী তাবিথ ও ইশরাক বাড্ডায় গণপিটুনিতে নিহত নারী তাসলিমা বেগম রেনুর স্বজনদের সঙ্গে দেখা করেন। তাদের ঈদ উপহার দেন। এর মাধ্যমে তারেক রহমান তার দুই প্রার্থীর ব্যাপারে নেতাকর্মীদের কাছে বার্তা দিয়েছেন।

এদিকে দক্ষিণে ইশরাককে প্রার্থী করার পক্ষে যুক্তি হলো- দক্ষিণের বেশিরভাগ মানুষই স্থানীয় বাসিন্দা। পুরনো ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দা হলে আনুকূল্য পাওয়া যায়। সেই চিন্তা থেকে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। যদিও দক্ষিণে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ আছে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেলের।

নির্বাচন সুষ্ঠু হলে জয়ের ব্যাপারে অনেকটাই আশাবাদী বিএনপি নেতারা। তারা বলছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে জয় নিশ্চিত। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল এই তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনে ছিল। তখন দলের নেতাকর্মীদের অধিকাংশ হয় কারাগারে নইলে পলাতক ছিল। এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। নেতাকর্মীরা জামিনে আছেন। আগাম প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। তাই নির্বাচন মোটামুটিভাবে স্বচ্ছ হলেই জয়ী হবেন তারা।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটিতে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে প্রাথমিক নির্দেশনা দিয়েছেন তারেক রহমান। ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যক্রম করছেন ইশরাক। ঈদের দিন বিকালে বিভিন্ন ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে ইশরাক হোসেন বলেন, এ সরকারের অধীনে বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। আগামী সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে- এটিও মনে করি না। তার পরও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করতে আমি প্রস্তুত।

তিনি বলেন, আমার বাবা অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন। আমিও প্রকৌশলী। ঢাকাকে অনেক কাছ থেকে দেখেছি। আমি নিজেও যানজট নিয়ে পড়াশোনা করেছি। তাই বাবার অভিজ্ঞতা আর আমার পড়াশোনাকে কাজে লাগিয়ে আধুনিক ঢাকা গড়তে পারব।

অন্যদিকে তারেক রহমানের নির্দেশের পর উত্তরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে মহানগর ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে অংশ নেন তাবিথ বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

এছাড়া কয়েক দিন আগে তাবিথকে নিয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও আগুনে পুড়ে যাওয়া মিরপুর-৭ ঝিলপাড় চলন্তিকা বস্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ান।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তাবিথ আউয়াল বলেন, গতবার প্রার্থী ছিলাম। নির্বাচনের পর থেকেই উত্তর সিটি করপোরেশনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এখনো করছি। নির্বাচনের জন্য আমি প্রস্তুত। তবে সরকার নির্বাচন আদৌ দেবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।

এছাড়া ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের পাশাপাশি চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনও একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে। তাই চট্টগ্রামেও বিএনপি তার সম্ভাব্য তালিকা করেছে। তবে প্রার্থী এখনও চূড়ান্ত করেনি দলটি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নগর বিএনপি সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সহসভাপতি আবু সুফিয়ানের মধ্যে একজন প্রার্থী হতে পারেন। তবে বিএনপি হাইকমান্ডের দৃষ্টিতে মেয়রপ্রার্থী হিসেবে যোগ্য তালিকায় রয়েছেন ডা. শাহাদাত হোসেন। মহানগরেও তার শক্ত অবস্থান আছে।

তবে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বকর ও সহসভাপতি আবু সুফিয়ানেরও আগ্রহ আছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতা বলেন, স্পর্শকাতর মামলার জটিলতা না থাকলে কারাবন্দি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে প্রার্থী করার পক্ষে নেতাকর্মীরা। সুফিয়ানের পক্ষে আছেন তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ স্থায়ী কমিটির এক নেতা।

ওডি/এআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড