• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

প্রিয়া সাহার বক্তব্য ব্যক্তিগত মত : রানা দাশগুপ্ত

  নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ জুলাই ২০১৯, ১৫:৪২
রানা দাশগুপ্ত-প্রিয়া সাহা
মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে দেওয়া প্রিয়া সাহার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রানা দাশগুপ্ত (ছবি : সংগৃহীত)

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা অভিযোগ করেন বাংলাদেশে ৩৭ মিলিয়ন অর্থাৎ তিন কোটি ৭০ লক্ষ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী 'ডিজঅ্যাপিয়ার্ড' বা গুম হয়েছেন। তার এই বক্তব্যকে ব্যক্তিগত অভিমত বলে মন্তব্য করে তার সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, ডিজঅ্যাপিয়ার্ড' মানে নিখোঁজ বা গুম। এটা দিয়ে তিনি কি বুঝিয়েছেন সেটা তিনিই জানেন।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, প্রিয়া সাহা যা বলেছেন এগুলো তার ব্যক্তিগত মত, সংগঠনের নয়।

তিনি বলেন,"যে 'ডিজঅ্যাপিয়ার' কথাটির সাথে তিন কোটি ৭০ লক্ষ যে সংখ্যা বলেছেন প্রিয়া সাহা - সেটা সত্য নয়। তবে দেশভাগের পর এখানে সাড়ে চার কোটি মানুষের মধ্যে সংখ্যালঘু মানুষের সংখ্যা ছিল ২৯.৭ শতাংশ। কিন্তু ২০১১ সালে সেটা এসে দাঁড়ায় ৯.৭ শতাংশে।"

রানা দাশগুপ্ত বলেন, “এটাকে অর্থনীতিবিদেরা বলেন 'মিসিং পিপল' মানে হারিয়ে যাওয়া জনগোষ্ঠী। কিন্তু 'ডিজঅ্যাপিয়ার্ড' মানে নিখোঁজ বা গুম। এখন এই শব্দ দিয়ে প্রিয়া কী বলতে চেয়েছেন, সেটা তিনিই জানেন।”

এদিকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের 'উধাও' হয়ে যাওয়া নিয়ে প্রিয়া সাহার বক্তব্যের সমালোচনা হলেও, বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষ করে হিন্দুদের একটি বড় অংশ দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন, সেটি একটি বাস্তবতা।

তারা বলছেন, ১৯৪৭ সালের পর ২০১১ সাল পর্যন্ত সংখ্যালঘু মানুষের সংখ্যা যে ১৮ শতাংশ কমে গেছে বাংলাদেশে সেটি পরিসংখ্যানগত বাস্তবতা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ঈশানী চক্রবর্তী বলছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানুষের দেশত্যাগ করা নিয়ে সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও দেশত্যাগ বিভিন্ন সময় ঘটেছে, এটা মিথ্যা নয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে সেরকম কোন গবেষণা নেই। কিন্তু সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী নানা সময়ে দেশত্যাগ করেছেন সেটা তো বাস্তবতা।

তিনি আরও বলেন, মূলত দুটি কারণে এই দেশত্যাগের ঘটনা ঘটে। প্রথম কারণ অর্থনৈতিক, সেটা বুঝতে কোন পরিসংখ্যান লাগে না। আর দ্বিতীয় কারণ অনিশ্চয়তা, যেটা সংখ্যালঘু মানুষের মধ্যে সব সময়ই থাকে।

ঈশানী চক্রবর্তী বলেন, এই অনিশ্চয়তার পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে দেশের এ পর্যন্ত কোন সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার হয়নি। সেক্ষেত্রে এ অনিশ্চয়তা দূর করার জন্য সরকারের আরো মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের উত্থান

বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ একটি অলাভজনক সংগঠন, যা বাংলাদেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার রক্ষা করতে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংগঠনটি ১৯৭৫ সালে ঢাকায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল চিত্ত রঞ্জন দত্ত প্রতিষ্ঠা করেন। চিত্ত রঞ্জন দত্ত এটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ১৯৮৮ সালে। ১৯৮৮ সালের জুন মাসে বাংলাদেশের সংবিধানের অষ্টম সংশোধনের মধ্য দিয়ে ইসলামকে রাষ্ট্র ধর্ম ঘোষণা করা হয়।

ঐদিনই ঐক্য পরিষদ গঠিত হয়, যদিও ঘোষণা এসেছিল কিছু দিন পরে। হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ৯ জুনকে কালো দিবস হিসেবে পালন করেছিল। পরবর্তিতে ১৯৯০ সালে উত্তর আমেরিকার বাংলাদেশি সংখ্যালঘুরা নিউ ইয়র্কে ঐক্য পরিষদের একটি বিভাগ খোলেন। ২০০৫ সালে টরন্টোতে কানাডিয়ান শাখা গঠন করা হয়েছিল। এটি ফ্রান্সের মত ইউরোপীয় দেশগুলিতেও এর শাখা রয়েছে। এই দাতব্য সংস্থার তহবিলের উৎস হচ্ছে সদস্যদের এবং সরকারের দান।

ওডি/এআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড