নিজস্ব প্রতিবেদক
নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য তেমন সুযোগ- সুবিধা না থাকলেও এবার কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগার আধুনিক সব সুযোগ সুবিধায় প্রস্তুত করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে চিকিৎসাধীন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে যে কোনোদিন নিয়ে যাওয়া হতে পারে নতুন কারাগারে। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখা হয়েছে সেখানে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় নারী কারাগারের ভিআইপি ওয়ার্ডের একটি কক্ষ তার নতুন কারাঘর হিসাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রস্তুত এই ভিআইপি কারাগারে থাকছে- এলইডি টিভি, ফ্রিজ, খাট ও আলনাসহ প্রয়োজনীয় সব আসবাবপত্র। এর ফলে নতুন কারাঘরে তিনি এলইডি টিভি দেখার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা পানিও খেতে পারবেন। একই সঙ্গে কাপড় রাখার সুবিধাসহ ঘুমানোর জন্য থাকছে ভিআইপি ব্যবস্থা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কারারক্ষী জানিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে রাখার জন্য ভিআইপি ওয়ার্ডে নতুন মালপত্র নেওয়া হয়েছে। শোওয়ার ঘর ছাড়াও বাথরুম ও রান্নাঘরে ব্যবহারের জিনিসপত্রসহ ওই ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে গত মাসেই। নতুন আসবাবপত্রের তালিকায় আছে নতুন একটি এলইডি টেলিভিশন, ফ্রিজ, একটি নতুন খাট, আলনা। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একজন ডেপুটি জেলার বলেন, খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী। আমাদের বলা হয়েছে, তাকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে আনা হবে। সেই অনুযায়ী আমরা সব ব্যবস্থা করে রেখেছি।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ নারীদের ভিআইপি কারাগারও প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, রাতদিন পরিশ্রম করে নারী কারাগার প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে এক কর্নারে ভিআইপি বন্দিদের জন্য সুব্যবস্থা করা হয়েছে।
নারী কারাগারের পাশেই একটি বিশেষ জজ আদালত স্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
এছাড়া খালেদা জিয়াকে বাড়তি নিরাপত্তা দিয়ে আর যেন নাজিমউদ্দিন রোড বা বকশীবাজারের আদালতে নেওয়া না লাগে এজন্য কেরানীগঞ্জে নারী কারাগারের পাশেই একটি বিশেষ জজ আদালত স্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জে রাখা হবে— আইন মন্ত্রণালয়ের এমন নির্দেশেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে সব প্রস্তুতি শেষ করার পর এখন শুনতে পাচ্ছি, খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জে আনা নিয়ে দ্বিধায় পড়েছে প্রশাসন।
উল্লেখ্য, মার্চ মাসের ২৫ তারিখে বেগম খালেদা জিয়াকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আর্থাইটিস ও ডায়াবেটিসের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ভর্তির পর গত ২৮ মার্চ খালেদা জিয়ার জন্য ডা. জিলন মিঞাকে প্রধান করে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের অন্য চার সদস্য হলেন- ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, ডা. তানজিমা পারভিন, ডা. বদরুন্নেসা আহমেদ, ডা. চৌধুরী ইকবাল মাহামুদ। এছাড়া ডা. শামিম আহমেদ এবং ডা. মামুন মেডিকেল বোর্ডকে সহযোগিতা করছেন।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। এ রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডস্থ পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে স্থানান্তরের আগে তিনি সেখানেই বন্দি ছিলেন।
ওডি/এআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড