নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির শপথ গ্রহণের বিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একক সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা চেয়ে বৈঠক করেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। ব্যাখ্যায় তারেক রহমান বলেন, কৌশলগত কারণে বিএনপির বিজয়ীদের শপথ গ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনুমতি না দিলে কয়েকজন অবাধ্য হয়েই শপথ নিতেন বলে সন্দেহ ছিল।
শনিবার (১৫ জুন) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে শুরু হয়ে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বৈঠক করেন স্থায়ী কমিটির নেতারা। পরে তা মুলতবি হলে দলের আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের সিনিয়র নেতারা। বৈঠকে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান স্কাইপের মাধ্যমে অংশ নেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, তারেক রহমান বিএনপি থেকে নির্বাচিতদের সংসদে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন। ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, কৌলশগত কারণে তাদেরকে সংসদে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সংসদের ন্যূনতম যে সুযোগ-সুবিধা রয়েছে তা কাজে লাগানোর জন্য আমরা সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন সেই সুবিধা নিয়ে সংসদ সদস্যরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলবেন।
এছাড়া তারেক রহমান বলেন, দলীয়ভাবে তাদের অনুমতি না দিলেও কয়েকজন তা মানতেন না এ নিয়ে এক ধরনের সন্দেহ ছিল। যার প্রমাণ দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নেওয়া জাহিদুর রহমান। তার এই ব্যাখ্যায় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সন্তুষ্ট হয়েছেন।
বৈঠকের এসব তথ্য জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি জানান, ‘আমরা ম্যাডাম খালেদা জিয়ার মুক্তি, পার্লামেন্ট, দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছি। তবে আলোচনা শেষ হয়নি, আবারও এসব বিষয়ে আলোচনা হবে।’
এছাড়া পাঁচ মাস পর অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সংসদে যোগ দেওয়া এবং দলের চেয়ারপারসনের মুক্তি দাবিতে কর্মসূচি দেওয়াসহ সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন বিএনপি নেতারা।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কোনো কর্মসূচি না থাকার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তখন তারেক রহমানসহ স্থায়ী কমিটির নেতারা কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে কর্মসূচির ধরন ও কবে থেকে তা দেওয়া হবে সে সব বিষয় চূড়ান্ত করা হয়নি। আগামী বৈঠকে তা চূড়ান্ত করা হবে।
এছাড়া দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। যেসব জেলা ও অঙ্গ সংগঠনের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে তা দ্রুত ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয় বলেও বৈঠক সূত্রে জানা যায়।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ছাত্রদলের কমিটি গঠন নিয়ে চলমান সঙ্কটের বিষয়টি তোলেন। তখন অন্যরা বলেন- ছাত্রদলের সমস্যা সমাধানে সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা কাজ করছেন। তারা সমাধান করতে না পারলে পরে আমরা বসবো। তারেক রহমান তখন আর এই বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
পরে রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দলের আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের সিনিয়র নেতারা। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘ম্যাডাম খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মামলাগুলো কীভাবে পরিচালনা করা যায়, তাকে মুক্ত করা যায়, কতগুলো মামলা আছে এসব বিষয়ে কথা হয়েছে। আইনজীবীরা কে কী দায়িত্ব পালন করবেন তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা বলেছি যার যার জায়গা থেকে চেষ্টা করবো।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট আবদুর রেজাক খান, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও ব্যারিস্টার মীর হেলাল।
ওডি/এআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড