দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : ড. কামাল

দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা, গণফোরামের সভাপতি ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে হবে, সংবিধান দেশের মৌলিক আইন, সংবিধানকে যদি আমরা সমর্থন করি তাহলে এটাকে সমুন্নত রাখতে আমরা বাধ্য।

শনিবার (২৬ মে) সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের মিলনায়নে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নে, মুক্তির লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধ হোন, কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ে তুলুন’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

কামাল হোসেন আরও বলেন, ‘গণতন্ত্রের পক্ষেও আমরা একটা ঐক্য বজায় রাখবো। ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে নিয়েই দেশে আমরা প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।’

ইতিহাস বলে বাংলাদেশের এমন কোনো সমস্যা নাই যে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে সমাধান করা যায় নাই জানিয়ে গণফোরামের সভাপতি বলেন, ‘আমরা অনেক কঠিন সময় দেখেছি। স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে আমরা অসম্ভবকে সম্ভব করেছি। দেশ স্বাধীন করতে পেরেছি। অসম্ভবকে সম্ভব করা যায় এটা আমরা বার বার প্রমাণ করেছি। আমরা যখনই একটা লক্ষ্য নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, তখনই আমরা জয়ী হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য, সংবিধান অনুযায়ী দেশ শাসন হোক, গণতন্ত্র থাকুক। এটা আমরা সবাই চাই। স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে, স্বাধীনতার ফসল সবার ঘরে ঘরে যদি পৌঁছাতে হয়, তাহলে জনগণের ঐক্য অপরিহার্য।’

‘বহুদলীয় গণতন্ত্র হতে পারে কিছু মৌলিক বিষয়ে ঐক্যমতের ভিত্তিতে। আমাদের বিভিন্ন মত, বিভিন্ন বিষয় থাকতে পারে, কিন্তু দেশের জনগণ সব ক্ষমতার মালিক, এটা নিয়ে দ্বিমতের কোনো অবকাশ নেই। কোনো স্বাধীনতাই থাকে না এটা আমরা যদি না মানি।’

জনগণ তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করবে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে উল্লেখ করে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক বলেন, নির্বাচনের অর্থ হবে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন। নির্বাচনের মধ্যে ত্রুটি থাকলে যারা নির্বাচিত হবে তারা জনগণের প্রতিনিধি দাবি করতে পারবে না। সেটা না করতে পারলে আমি বলবো স্বাধীন দেশের যে বৈশিষ্টা সেটাই হারিয়ে ফেলবো। স্বাধীন দেশ শাসন করবে, যারা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে।’

সভায় উপস্থিত বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে এই সংবিধান প্রণেতা বলেন, ‘সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকেন সংবিধানকে সমুন্নত রেখে। সংবিধানের প্রতিশ্রুতি, নির্ভেজাল গণতন্ত্র, মানুষের মৌলিক অধিকার, এ সবগুলো আমরা নিশ্চিত করবো ঐক্যবদ্ধ হয়ে।’

আলোচনা সভা ও ইফতার অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঢাবি আইন বিভাগের শিক্ষক আসিফ নজরুল, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার পার্টি নেতা সাইফুল হক, জেএসডির নেতা আব্দুল মালেক রতন, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া, বিএনপি চেয়ারপারনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম প্রমুখ।

ওডি/এএস