অধিকার ডেস্ক
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে আছেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের সংবিধানকে কেটে তছনছ করে দিয়েছে। মানুষের সমস্ত মৌলিক অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে।
শনিবার (২৫ মে) বিকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ইফতার ও আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে এমন কথা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় সংগ্রামী নেতা, যিনি বার বার গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, কারাবরণ করেছেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, যাকে বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের মাতা বলে অভিষিক্ত করেছেন, সেই নেত্রীকে তারা দীর্ঘকাল ধরে কারারুদ্ধ করে রেখেছে একটি মাত্র কারণে, তারা জানে খালেদা জিয়া বাইরে থাকলে তাদের সব ষড়যন্ত্র বানচাল হয়ে যাবে। জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হবে।
সভায় ড. কামাল হোসেন বলেন, আজকে সবাই ঐক্যর কথা বলেছেন। ঐক্য ছাড়া বিকল্প নেই। দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সংবিধানের মধ্যে আছে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনে নির্বাচিত ব্যক্তিরা দেশ চালাবে। ইতিহাস বলে বাংলাদেশে এমন কোনো সমস্যা নেই যা জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে সমাধান করা যায়নি। স্বাধীনতার যুদ্ধেও আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করে স্বাধীন হয়েছি। অর্থাৎ অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়, এটা আমরা বারবার প্রমাণ করেছি।
মাহমুদুর রহমান মান্না সভাপতির বক্তব্যে বলেন, সালাম ও আসিফ নজরুল বলেছেন (নির্বাচনের পর) সেই সময় হরতাল হওয়া উচিত ছিল। আমি এটার সমর্থন করি। আমি এটার প্রস্তাবক ছিলাম। আবার সালাম বলেছেন, তখন দিতে পারিনি বলে এখন দিতে পারবো না? অবশ্যই পারবো, কেনো পারবো না। অনেক ইস্যু আছে আমাদের সামনে। গতকাল (শুক্রবার-২৪ মে) মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের সঙ্গে বলেছেন, খালেদা জিয়া চলাফেরা করতে পারেন না। তাকে বিনা কারণে কারাগারে রাখা হয়েছে। তার মুক্তির দাবিতেওতো হরতাল হতে পারে।
একই সমাবেশে বিএনপি মহাসচিবের সমালোচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন সকাল ১১টায় পরিস্থিতি নিয়ে তার দেওয়া বক্তব্যের জন্য জাতির কাছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের লজ্জা পাওয়া উচিত। সারাদেশের সাধারণ মানুষও জানে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তিনদিন আগ থেকে দেশে নির্বাচনের নামে কী ঘটেছে। নির্বাচনের আগের রাতে (২৯ ডিসেম্বর) ভোটগ্রহণ শেষ করা হয়েছে। অথচ বৃহৎ দলের একজন মহাসচিব হিসেবে, একজন বিজ্ঞ রাজনীতিক হিসেবে তিনি পরদিন ৩০ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় বললেন, নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু আছে। তিনি না-কি নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্ট। তার এ ধরনের বক্তব্যের জন্য জাতির কাছে তার লজ্জা হওয়া উচিত।
আসিফ যখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্পর্কে এ কথা বলছিলেন, তখনও তিনি ইফতার মাহফিলে উপস্থিত হতে পারেননি। এ জন্য আসিফ নজরুল মঞ্চের নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি যে বিএনপি মহাসচিব সম্পর্কে এ কথা বললাম, আপনারা আমার কথাগুলো ওনাকে জানিয়ে দেবেন। সত্যি বলছি, তার (ফখরুলের) লজ্জা হওয়া উচিত।
আসিফ নজরুল বলেন, আমরা যখন রাজনীতিই বুঝতাম না, সেই ছোটবেলা থেকে আমরা দেখে আসছি দেশে একজন সাধারণ মানুষ মারা গেলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে কর্মসূচি দিতো। আজকে দেশের পরিস্থিতি এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, প্রতিদিন দেশে শিশু-কিশোরী, নারী ধর্ষণ ও মানুষ খুন হলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করার মতো কোনো সাহস রাজনৈতিক দলগুলোর নেই।
ইফতার ও আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঢাবির অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বীর প্রতীক, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, বিকল্প ধারার সভাপতি নুরুল আমীন বেপারী প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া, মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আমিনুর রহমান, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম পথিক, গণদলের সভাপতি গোলাম মাওলা চৌধুরী, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ প্রমুখ।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড