• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মামলা বন্ধ হলেও পুলিশি হয়রানি বন্ধ হয়নি : বিএনপি

  খুলনা প্রতিনিধি

২০ মে ২০১৯, ১৩:২৯
বিএনপি
ছবি : ফাইল ফটো

রাজনৈতিক মামলার তালিকা কেন্দ্রে প্রেরণের পর গ্রেফতার কমেছে, তবে ঈদকে সামনে রেখে হয়রানি কমছে না বিএনপি নেতা-কর্মীদের। এখনো বাড়ি বাড়ি অভিযানের নামে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। কোনো কর্মসূচি না থাকলেও নেতা-কর্মীরা গণগ্রেফতারের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ খুলনা বিএনপির। তবে খুলনায় আন্দোলনের টার্গেটে মাঠ গোছাতে শুরু করেছে বিএনপি।

তবে গত কয়েক মাসে দলটির নগর ও জেলার শীর্ষ পর্যায়ের নেতাসহ সহস্রাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বিগত সময়ে দায়ের করা নাশকতার অভিযোগে ‘গায়েবি’ মামলায় উদ্বিগ্ন তৃণমূল। এরই মধ্যে এসব ‘গায়েবি’ মামলায় গণগ্রেফতার ও বাড়ি বাড়ি তল্লাশির নামে হয়রানি বন্ধের দাবিতে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি স্মারকলিপি প্রদান ও বিক্ষোভ করেছেন। উচ্চ আদালতের জামিন প্রাপ্তদের গ্রেফতার করে অন্য মামলায় অজ্ঞাত আসামি ধৃত হিসেবে দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।

নগরীর ৩১ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে এইচ এম আসলাম ও আরিফ হাইকোর্টে একাধিক মামলায় জামিন প্রাপ্ত, তাদের আবার গ্রেফতার করলে স্বজনরা জামিনের কাগজপত্র নিয়ে থানায় যান। এ সময় পুলিশ জানায়, ‘ওই মামলায় জামিনে আছে তো কী হয়েছে? আরও তো মামলা আছে।’

একাধিক মামলার আসামি নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওরা গণতন্ত্রের ভাষা ভুলে ফ্যাসিবাদকে আঁকড়ে ক্ষমতার মসনদে চিরস্থায়ী থাকতে রাষ্ট্র যন্ত্রকেই ব্যবহার করছেন। গত দশ বছরে রাজনৈতিক মামলার পাহাড় তৈরি করেছে এই সরকার।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, বিএনপিকে বিগত দিনে নির্বাচনের মাঠ থেকে দূরে রাখতে ‘মিথ্যা, গায়েবি ও ভৌতিক’ মামলা দেওয়া হচ্ছে। কোনো কারণ কিংবা ঘটনা ছাড়াই অযথা মিথ্যা মামলা দায়ের করে, নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ তল্লাশি অভিযান, হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও গ্রেফতার করছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিপ্লব অনিবার্য, শুধু বিএনপি চেয়ারপার্সনের নির্দেশের অপেক্ষা।’

জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা বলেন, জেলার নয় থানায় গায়েবি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে কয়রায় তিনটি, দাকোপে দুইটি, বটিয়াঘাটায় তিনটি, ডুমুরিয়ায় চারটি, দিঘলিয়ায় দুইটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় সহস্রাধিক নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা আছে আরও দুই হাজার অবিলম্বে সরকারকে গণতান্ত্রিক আচরণের আহ্বান জানান তিনি।

সূত্র মতে, বাড়িতে না থেকেও মামলা ও হামলার শিকার তেরখাদা থানার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের বয়ারগাতি গ্রামের শেখ আশরাফুজ্জামান। দীর্ঘদিন বাড়িতে না থাকলেও নাশকতার দুইটি মামলার শিকার হয়েছেন তিনি এবং নির্বাচন পরবর্তীতে স্থানীয় সরকার দলীয় লোকজন আশরাফুজামানের বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করেন। এ সময় তার বাবা-মাকে শাসিয়ে যান, আশরাফুজ্জামান বাড়ি যেদিন ফিরবেন তখন তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করেন। এমন পরিস্থিতিতে পরিবারের লোকজনসহ আশরাফুজ্জামান ভয়ে দিন পার করছেন।

চলতি বছরের ১৪ জুলাই ফুলতলা উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার মাওলানা রফিকুল ইসলামকে। এরপর থেকে তিনি খুলনা জেলা কারাগারে বন্দী।

এ দিকে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে আবারও মামলা করে ফুলতলা থানা পুলিশ। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, মাওলানা রফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য আসামিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করে। ফুলতলা থানার এস আই ইউসুফ শেখ বাদী হয়ে ওই মামলার ২০ নম্বর আসামি করা হয় রফিকুল ইসলামকে। মামলার ৪৯ আসামির বাকিরা সকলেই বিএনপি নেতা-কর্মী।

মাওলানা রফিকুল ইসলামের ভাতিজা মো. হিরণ দাবি করেন, কারাগারে বসে পুলিশকে ককটেল মারবে কীভাবে? রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতেই এই ‘গায়েবী’ মামলা করা হয়েছে। ওইদিন এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর ডুমুরিয়া থানায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এস আই লুৎফর রহমান বাদী হয়ে করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, ‘গত ২০ সেপ্টেম্বর ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটে ডুমুরিয়ার টোলনা দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠের পুকুর পাড়ে বসে ২০০ থেকে ২২০ আসামি সরকার পতন ঘটানোর লক্ষে বৈঠক করছিলেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল ছুড়ে মারে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, ‘অহেতুক গ্রেফতারের অভিযোগ ঠিক নয়। ঘটনা ঘটছে বা নাশকতা সৃষ্টির আশঙ্কা থেকেই তো মামলা হয়েছে। আর মামলা হলে তো আসামিকে গ্রেফতার করতে হবে নাকি।’

খুলনা জেলা পুলিশ সুপার এসএম সফিউল্লাহ বলেন, ‘জেলার কোথাও পুলিশি হয়রানির অভিযোগ আমার জানা নেই। যদি কাউকে কোনো থানা পুলিশ হয়রানি করে, তার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ওডি/এএসএল

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড