‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ বৈধতা পাওয়ার শঙ্কায় রুমিন

বিএনপির সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ বৈধতা পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। মঙ্গলবারের সংসদ অধিবেশনে সরকারি ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বক্তব্য প্রসঙ্গে রুমিন বলেন, সদ্য বিদায় নেওয়া ২০১৯ সালে গড়ে প্রতিদিন একজনের বেশি মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড খুব সম্ভবত বৈধ হতে যাচ্ছে। কারণ, গতকাল (মঙ্গলবার) আমরা দেখেছি সরকারি ও প্রধান বিরোধী উভয় দলই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পক্ষে কথা বলেছে।’

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে ৭১ বিধির বাতিল নোটিশের ওপর দুই মিনিটের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশ্নের উদ্ধৃতি দিয়ে সাংসদ রুমিন ফারহানা বলেন, ‘ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর কেন বারবার মার খাচ্ছেন- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো আমারও একই প্রশ্ন। প্রথমবার মারধরের পর কোনো বিচার হয়নি বলেই হয়তো বারবার মার খাচ্ছেন। আর এটাই প্রমাণ করে দেশে আইনের শাসন তার নিজের গতিতে চলে না, চলে সরকারের গতিতে। এ কারণেই সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় ৭০ বারের মতো পেছানো হলো। কোনো ঘটনা ঘটলে সরকার যেভাবে চায় ঠিক সেভাবেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ দেশে আইনের শাসনের অনুপস্থিতির কিছু নজির আমরা দেখতে পেলাম আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধর্ষণের সংখ্যা বেড়ে আগের বছরের দ্বিগুণ হয়েছে। একই সঙ্গে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ৭৬ জন। এছাড়া ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন আরও ১০ জন।’

একইভাবে গ্রেপ্তারের আগে নির্যাতনে মারা গেছেন ৬ জন। গুলিতে নিহত হয়েছেন আরও ১২ জন। এমন শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ, অপহরণের পর মোট ৪৮৭ জন শিশু নিহত হয়েছে। আর গণপিটুনিতে মারা গেছেন ৬৫ জন। পাশাপাশি ১৪২ জন সাংবাদিক শারীরিক নির্যাতন, হামলা ও হুমকির শিকার হয়েছেন।

আরও পড়ুন : কাদেরের স্বাস্থ্যের উন্নতি

সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে রুমিন ফারহানা বলেন, কর্তৃত্ববাদী সরকারের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার প্রধান অস্ত্র ভীতির পরিবেশ তৈরি করা। যে কোনো উপায়ে ভিন্নমত দমন, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার, পুলিশ প্রশাসনকে ব্ল্যাংকচেক দেওয়া ও বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ।

ওডি/আইএইচএন