• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

দুর্গ বিএনপির, সক্রিয় মহাজোট

  অধিকার ডেস্ক    ০৫ মে ২০১৮, ১০:৩৫

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সত্তরের নির্বাচনে পুরান ঢাকায় থেকেই মুসলিম লীগের হয়ে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিলেন। তাই এই স্থানকেই আওয়ামী লীগের জনুমভূমি বলা যেতে পারে। আর এই ঘাঁটি কালক্রমে বিএনপির ঘাঁটিতে পরিণত হচ্ছে।

এদিকে, ১৯৯১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত টানা চারবার সাংসদ হয়ে আসছেন বিএনপির সাদেক হোসেন খোকা। যদিও ২০০৮ সালে আসনটিতে প্রথম হানা দেয় আওয়ামী লীগ। এখন খোকার অনুপস্থিতিতে আসনটির দখল ধরে রাখতে তৎপর মহাজোট।

জানা গেছে, চিকিৎসার জন্য কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন ‘খোকা’। আগামী নির্বাচনে তাঁর ছেলে প্রকৌশলী ইসরাক হোসেন এখান থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে জানাযায়। তবে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন আলোচনায় আছেন আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাইদুর রহমান প্যাটেল।আর যদি জোটবদ্ধ ভাবে নির্বাচন হয় তাহলে মহাজোটের প্রার্থী হতে পারেন বর্তমান সাংসদ জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ।

আসলে জয়ের জন্য কোন দলেরই ভোট পর্যাপ্ত না থাকায় ঢাকার কোনো আসনে একক কর্তৃত্ব কেউই দেখাতে পারেননি। প্রতি নির্বাচনেই হয়েছে পালাবদল। তবে উলট পথে ঢাকা-৬। বিএনপির খোকা এখানেই সাংসদ হয়েছেন টানা চারবার। তিনি ১৯৯১ ও ২০০১ সরকারের মন্ত্রীয় ছিলেন। ঢাকা সিটির অবিভক্ত মেয়র হয়েছিলেন ২০০২ সালে। এমনকি ২০০৮-এর নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবির সময়েও ঢাকায় সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তিনি। তাঁর অনুপস্থিতিতে বিএনপি এখন সন্ধিহান।

আইনি জটিলতা থাকায় খোকার নির্বাচন করার সম্ভাবনা তেমন দেখছেন না নেতা-কর্মীরা। দেশে ফেরার আশাও অনেক কম। বরং খোকার ছেলে ইসরাক হোসেনকে নিয়ে নির্বাচনের স্বপ্ন দেখছে দলটি। ইসরাক নিজেও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন।

‘রাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে দল নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এরপর দলের মনোনয়ন ও শারীরিক অবস্থার ওপর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে।’ বলে জানায় খোকা। তাঁর ছেলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচন করতে না পারলে দল যদি আমার ছেলেকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে সে নির্বাচন করবে।’

বর্তমান সাংসদ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এরই মধ্যে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন। ২০১৪-এর নির্বাচনে তিনি মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন। জোটবদ্ধ নির্বাচনে মহাজোট থেকে এবারও তাঁর প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী দেওয়ার জন্য দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। তাঁদের দাবি, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা এখানে নির্বাচন করেছেন, তাই এ আসনে নৌকা প্রতীকের কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হোক। দল থেকে মনোনয়ন পেতে একাধিক নেতা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে, ‘মনোনয়ন অনেকে চাইতেই পারে। এ ব্যাপারে জোট বা দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাদের কোনো বিরোধ নেই। টানা তিনবার জগন্নাথ কলেজের ভিপি ছিলাম, ছাত্রলীগ-যুবলীগ করেছি। তাই স্থানীয় সবার সঙ্গেই আমার সম্পর্ক ভালো।’ বলে জানান কাজী ফিরোজ রশীদ।

তবে দল থেকে মনোনয়ন নিশ্চিত করতে আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের দুই প্রবীণ রাজনীতিবিদ আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাইদুর রহমান প্যাটেল। মন্নাফী মহানগর ৫৪ বছরের রাজনীতির বেশির ভাগ সময় বৃহত্তর সূত্রাপুরকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে। তাঁর মতে ‘দলের দুঃসময়ে রাজপথে ছিলাম। মুসলিম লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই এলাকায় আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠায় সামনে থেকে ভূমিকা রেখেছি। এবার দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। নেত্রী যা নির্দেশনা দেবেন, তা-ই মেনে নেব।’ এদিকে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক ও খেলোয়াড় সাইদুর রহমান প্যাটেল মাঝখানে ১২ বছর যুক্তরাষ্ট্রে কাটিয়েছেন। ২০১৩ সালে দেশে ফিরে নির্বাচনের জন্য মাঠ গোছাতে শুরু করেন। গেন্ডারিয়ায় বেড়ে ওঠা প্যাটেল বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত যোগ দিচ্ছেন। নির্বাচন বিষয়ে তিনি আমাদের জানান, ‘গেন্ডারিয়ায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা রেখেছি। পরিচ্ছন্ন ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে নেত্রী এবার আমাকে মনোনয়ন দেবেন বলে প্রত্যাশা করছি।’

এই দুজন ছাড়া ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, দলটির ওয়ারী থানার সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু, সূত্রাপুর থানার সভাপতি হাজি মোহাম্মদ সাহিদও মনোনয়নের চেষ্টা করছেন।

৪০০ বছরের ঢাকার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে অনেক ভবন, যত্নের অভাব আছে সেখানেও। পাকিস্তান আমলে গড়ে ওঠা বস্তির মানুষগুলো এখনো পাচ্ছে না দরকারি নাগরিক সুবিধা। অধিকাংশ রাস্তা ঢাকার অলিগলি-ঘুপচি হিসেবেই রয়ে গেছে এখানে। পুরান ঢাকার এই অবস্থার পরিবর্তন চান এলাকার ভোটাররা। বুড়িগঙ্গার তীরে জন্ম নেয়া এই শহরের যে ভালো জত্ন নিতে পারবেন তাঁর হাতেই এই শহড় তুলে দেয়া হবে বলে জানায় স্থানিও জনগন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড