সংসদে ‘ভুলের’ জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন রাঙ্গা

এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের শহীদ নূর হোসেনকে ‘ইয়াবাখোর’ বলে বক্তব্য দেওয়ায় জাতীয় সংসদে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব, সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা। এমপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি একটা ভুল করেছি। এ জন্য এই সংসদে নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থী।’

বুধবার (১৩ নভেম্বর) সংসদে কার্যপ্রণালীর ২৭৪ বিধিতে (ব্যক্তিগত কৈফিয়ত প্রদান) ফ্লোর নিয়ে রাঙ্গা এ ক্ষমা চান।

নভেম্বরের ১০ তারিখে ‘গণতন্ত্র দিবস’ নিয়ে জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ একটি ছোট সভা ছিল উল্লেখ করে রাঙ্গা বলেন, ‘‘বাইরে কোনো মাইক ছিল না। ভেতরে সাউন্ডবক্সের মাধ্যমে আমরা কথা বলি। একই দিনে ‘নূর হোসেন দিবস’ও ছিল। পুরনো ঢাকা থেকে আমাদের কিছু লোক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। আসার পথে তারা নূর হোসেন চত্বরে শুনতে পান এরশাদকে গালাগালি করা হচ্ছে। ‘এরশাদের দুই গালে, জুতো মারো তালে তালে’—এ ধরনের কিছু কথাবার্তা শোনার পরে আমাদের এখানে এসে তা বলেন। আমি দলের মহাসচিব হিসেবে তাদের শান্ত থাকতে বলি।’’

সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ আরও বলেন, ‘২০১৪ সালে আমি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করি। মঙ্গলবার অনেকে অনেক কথা বলেছেন। আমি মনে করি, তারা আমাকে শাসন করেছেন। আমি একটা ভুল করেছি। এজন্য আমি নূর হোসেনের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। এটি নিয়ে বিবৃতিও দিয়েছি।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিয়ে কোনো আপত্তিকর মন্তব্য করেননি দাবি করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘আমি প্রতিমন্ত্রী থাকতে এই সংসদে অনেক কথা বলেছি। এই সংসদে দাঁড়িয়ে অজস্রবার জয়বাংলা বলেছি। অজস্রবার জাতির পিতা বলেছি। জাতির পিতা নিয়ে যদি আমি কোনও ভুল বলে থাকি, তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি।’

আমরা ২০১৪ সালে মহাজোটের সঙ্গে ভোটের করেছি উল্লেখ করে রাঙ্গা বলেন, ‘শাজাহানসহ আমি সারাদেশে পরিবহন সচল রাখার জন্য কাজ করেছি। ১৮ দিন আমরা হেলিকপ্টারের মধ্যে ছিলাম। প্রধানমন্ত্রীকে আমি সন্ত্রাসবাজ-দুর্নীতিবাজ বলিনি। বলেছি, বিশ্বজিৎ হত্যা, জেলহত্যার বিচার হয়েছে। ক্যাসিনোরও বিচারও হয়েছে। ১৯৯০ সালের পরে খালেদা জিয়ার সময় কৃষক হত্যার কথা, একুশ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলার কথা বলেছি। এর রেকর্ডও আছে। তারপরও ভুল করলে নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। যারা কলিগ আছেন, বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর সৃষ্টিতে দেখবেন।’

ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আমার দল ক্ষমতায় এলেও মন্ত্রী হতে পারতাম না বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে মন্ত্রী করেছেন। আমাকে অনেক স্নেহ করতেন, ভালোবাসতেন। তার সঙ্গে আমার এই ভালো সম্পর্কই থাকবে বলে মনে করি। কাউকে কটাক্ষ করে কিছু বলতে চাই না। আমার বলায় ভুল হতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘এরশাদ গুলি করে মারুন বা না মারুন, এটি সত্য যে নূর হোসেন মারা গেছেন।’ নূর হোসেনের মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন বলেও রাঙ্গা দাবি করেন।

ওডি/এএস