• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ভোক্তা অধিকার

  অধিকার ডেস্ক

২৪ মে ২০১৮, ১১:৪২
প্রতীকী ছবি
কেউ কোন পণ্য, খাদ্য, পানীয় দ্রব্য বা সেবা প্রদানকারী দ্রব্য গ্রহণ করে অর্থাৎ যারা ভোগ করে তাদেরকে ভোক্তা বা কনজ্যুমার বলে। আইনের আওতায় ভোক্তা হলেন তিনিই যিনি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য ব্যতীত, সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করে বা সম্পূর্ণ্য বাকিতে পণ্য বা সেবা ক্রয় করেন, অথবা কিস্তিতে পণ্য বা সেবা ক্রয় করেন। একজন উৎপাদনকারী বা ব্যবসায়ী যেমন যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ লাভ করার অধিকার রাখেন, তেমনি ভোক্তা হিসেবে ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে নেয়ার অধিকার রাখেন।
পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন আছে। আমাদের দেশেও রয়েছে। আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো-ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণ, উন্নয়ন, ভোক্তা অধিকার বিরোধী কাজ প্রতিরোধ, ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘনজনিত অভিযোগ নিস্পত্তি, নিরাপদ পণ্য বা সেবা পাওয়া ব্যবস্থা, কোনো পণ্য বা সেবার ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তাকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা, পণ্য বা সেবা ক্রয়ে প্রতারণা রোধ এবং ভোক্তা অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি।
কোনো পণ্য বা সেবা যিনি ভোগ করেন বা ভোগের উদ্দেশ্যে ক্রয় করেন তিনিই ভোক্তা। ভোগের এ প্রত্যেকটা বস্তু হওয়া চাই নিরাপদ ও নির্ভেজাল। প্রত্যেক ভোক্তাই তার জীবন ও কাজের নিরাপত্তার জন্য যথোপযুক্ত ও নিরাপদ পণ্য বা সেবা প্রাপ্তির অধিকার চায়।
জীবনের নিরাপত্তা কিংবা কাজের নিরাপত্তার জন্য ভোক্তার অধিকার রয়েছে প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে পাওয়ার। সে পণ্য বা সেবা সঠিক মানে, সঠিক মাপে পাওয়ার অধিকার তার রয়েছে। পণ্য বা সেবার নির্ধারিত মূল্য বা বিনিময়ে সে পণ্য বা সেবা পাওয়া ভোক্তার অধিকার। তাই পণ্যের উপাদান, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ, বিক্রয়মূল্য, কার্যকারিতা জানার অধিকারও তার রয়েছে।
সর্বোপরি কোনো পণ্য বা সেবা ব্যবহারের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার ক্ষতিপূরণ পাওয়াও ভোক্তার একান্ত অধিকার। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বা ঔষধ জীবনের জন্য কত ক্ষতিকর তা একমাত্র ভুক্তভোগীরাই বলতে পারবেন। ওজনে কারচুপি, ওজন যন্ত্রে কারচুপি, পরিমাপে বা পরিমাপক যন্ত্রে কারচুপির বচসা আমরা প্রায়ই হাট-বাজারে দেখে থাকি। পণ্যের গায়ে পণ্যের উপাদান, বিক্রয় মূল্য, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, পণ্যের কার্যকারিতা ইত্যাদি না লিখে পণ্য উৎপাদকরা ভোক্তাকে ঠকাচ্ছে প্রতিনিয়ত যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
২০১০-১১ অর্থ বছরে বিএসটিআই এক হাজার ২৫১টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে। এর বাইরে ৫১৮টি সার্ভিল্যান্স টিম পরিচালনা করে প্রতিষ্ঠানটি। এর মাধ্যমে এক হাজার ৬৫৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা জরিমানা করে। এক তথ্য মতে, বর্তমানে বাংলাদেশে পাঁচ কোটি লোক খাদ্য বিষক্রিয়ায় ভুগছে। রাজধানী ঢাকার ষাট ভাগ সবজিতেই বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ মিশানো থাকে।
সর্বশেষ সরকার ২০০৯ সালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন করেছে। আলোচিত প্রত্যেকটি অপরাধের জন্য এ আইনে জেল-জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে, জেল-জরিমানা করাও হচ্ছে। অপরাধের তুলনায় জেল-জরিমানা করা হয় অতি নগণ্য। আবার এটাও ঠিক যে অনেক খুচরা ব্যবসায়ী জানেও না যে, পণ্যের গায়ে পণ্যের উপাদান, বিক্রয় মূল্য, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ, পণ্যের কার্যকারিতা ইত্যাদি লেখা না থাকা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একার পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। প্রয়োজন সকল শ্রেণীর ভোক্তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও আন্তরিক সহযোগিতা।
অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ধারা ৭৬ (১) অনুযায়ী, “যে কোন ব্যক্তি, যিনি, সাধারণভাবে একজন ভোক্তা বা ভোক্তা হইতে পারেন, এই অধ্যাদেশের অধীন ভোক্তা-অধিকার বিরোধী কার্য সম্পর্কে মহাপরিচালক বা এই উদ্দেশ্যে মহাপরিচালকের নিকট ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে অবহিত করিয়া লিখিত অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবেন।”
যেখানে অভিযোগ দায়ের করা যাবে
• মহাপরিচালক, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ১ কারওয়ান বাজার (টিসিবি ভবন-৮ম তলা), ঢাকা, ফোন: +৮৮০২ ৮১৮৯৪২৫;
• জাতীয় ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্র, টিসিবি ভবন- ৯ম তলা, ১ কারওয়ান বাজার ঢাকা, ফোন: ০১৭৭৭ ৭৫৩৬৬৮, ই-মেইল: [email protected]
যেভাবে অভিযোগ দায়ের করতে হবে
• দায়েরকৃত অভিযোগ অবশ্যই লিখিত হতে হবে।
• ফ্যাক্স, ই-মেইল, ওয়েব সাইট, ইত্যাদি ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে; বা অন্য কোন উপায়ে;
• অভিযোগের সাথে পণ্য বা সেবা ক্রয়ের রশিদ সংযুক্ত করতে হবে।
অভিযোগকারী তাঁর পূর্ণাঙ্গ নাম, পিতা ও মাতার নাম, ঠিকানা, ফোন, ফ্যাক্স ও ই-মেইল নম্বর (যদি থাকে) এবং পেশা উল্লেখ করবেন।
মানুষের অধিকার নিয়ে লিখবে অধিকার; লিখুন আপনিও। আপনার চারপাশে অধিকার বাস্তবায়নে আপনিও সচেষ্ট হোন, জানান সরাসরি দৈনিক অধিকারকে [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড