• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

লকডাউনের তোয়াক্কা করবে তো কৃষক?

  মো. শফিক ইসলাম

২১ এপ্রিল ২০২০, ১৮:২৪
কৃষক
ধানক্ষেতে গ্রামীণ কৃষক (ছবি : সংগৃহীত)

করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠিক যে সময়ে হুহু করে বাড়ছে, তখনই আমাদের সামনে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াল এই লকডাউনকে আমলে নিয়ে ঘরে থাকবে তো আমাদের কৃষক সম্প্রদায়? কেননা চাষার ধান ঘরে তোলার সময় ঘনিয়ে আসছে।

আমরা যারা গ্রামে বড় হয়েছি তারা বেশ ভালো করেই জানি এই সময়টাতে গ্রামের অবস্থা কী হয়। ধনী থেকে গরীব কারো-ই ঘরে বসে থাকার ফুরসত থাকে না। ফসল তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে পুরো জনপদ। কৃষকের ফসল ঘরে তুলতে দলের পরে দল কাজ করে বেড়ায় এই মাঠ থেকে ওই মাঠে আর ওই বাড়ি থেকে এই বাড়ি।

দিনশেষে বৈশাখী ঝড় আর বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হবে তা হয়তো কোনো কৃষকই চায় না। আর এজন্য একজন কৃষকের জন্য লকডাউন মেনে চলাটা এই সময়ে কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে মনে করছেন অনেকেই। বিপত্তিটা মূলত এখানেই।

স্বভাবতই আমাদের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ করোনা মোকাবিলায় সচেতন নয়। কেউ কেউ তো হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিয়ে যা ইচ্ছা তাই করছে। তবুও সরকারি প্রচেষ্টায় জেল, জরিমানা কিংবা বিভিন্ন শাস্তির ভয় দেখিয়ে যেটুকু সময় ঘরে আবদ্ধ রাখা সম্ভব হচ্ছিল তাও হয়তো আর সম্ভব হবে না। কেননা ফসল ঘরে না তুললে যে পেটে ভাত যাবে না! আর মালিক-মহাজন তো আছেই।

সুতরাং ফসল ঘরে তোলার সময়টাতে করোনা ভাইরাসের যে গণহারে বিস্তারের একটা বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে তা বলাই যায়। আর এই সম্ভাবনা যদি সত্যি হয়, তবে শীঘ্রই পৃথিবীর যে কোনো দেশকে টপকে আক্রান্ত এবং মৃত্যু দু'টো তেই শীর্ষস্থান দখল করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

হয়তো মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ আরেকবার গুরুতর আহত হতে যাচ্ছে। আর তাই স্পর্শকাতর এই সময়ে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে সুন্দর কিছু পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন অতীব জরুরি। কৃষক তার কাজ করুক। তবে যেভাবেই হোক সামাজিক দূরত্ব এবং সচেতনতা এই দুটো বিষয় যেন বজায় রেখে কাজ করে। এজন্য প্রয়োজন হলে আমাদের সেনাবাহিনীকে আরও বেশি সংখ্যায় মাঠে নামানো হোক।

আরও পড়ুন : পরীক্ষা সংখ্যা বৃদ্ধি করে আক্রান্তদের দ্রুত চিকিৎসার দেওয়া হোক!

লকডাউনের শুরু থেকে সেনাবাহিনীর নজরদারি বেশি দেখা গেছে শহর অঞ্চলে। সরকারের কাছে অনুরোধ ধান ঘরে তোলার এই সময়ে গ্রামাঞ্চলে নজরদারি বাড়ান। প্রতিটা ইউনিয়নে ইউনিয়নে সেনাবাহিনীকে ভাগ করে দিন। আমি একজন গ্রামের ছেলে এবং বর্তমানে গ্রামেই অবস্থান করছি। হলফ করে বলতে পারি, গ্রামের লোক সেনাবাহিনীকে ভয় এবং শ্রদ্ধা দুটোই করে। সবমিলিয়ে, আরও যদি কোনো উপায় থেকে থাকে দয়া করে তা প্রয়োগ করুন। তবুও আমার গ্রামীণ জনপদ যেন মৃত্যুপুরীতে পরিণত না হয়।

লেখক : শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড