• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় ঢাবির অনাগ্রহ কেন?

  হাসান বিশ্বাস

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২২:২৭
ঢাবি
বা থেকে- দেওয়ান সাবাব, তাসফিয়া তাজরীন পৃথা ও রুশাদ ফরিদী (ছবি : সম্পাদিত)

চলতি বছর থেকেই সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। এ ব্যাপারে দেশের ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয় ইতিবাচক মতামত দিয়েছে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। সমন্বিত পদ্ধতির পরীক্ষায় মূলত একই প্রশ্নপত্রে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা নেওয়া হবে। বর্তমানে শুধু মেডিকেল কলেজগুলোতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে সবগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পদ্ধতি চালু হওয়া দরকার।

ঢাবি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী দেওয়ান সাবাব বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪৬টি। অনুমোদন পেয়েছে আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাংকিং এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তাহলে কিসের ভিত্তিতে ইউজিসি এই পদক্ষেপ নিচ্ছে? কীভাবে তারা মেধাতালিকা অনুযায়ী ভাগ করবে? প্রশ্ন সকলের। অথচ উত্তর দেয়নি ইউজিসি। বিশ্ববিদ্যালয় কি মগের মুল্লুক?’

ঢাবির তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী তাসফীয়া তাজরীন পৃথা বলেন, ‘কোন পদ্ধতিতে প্রশ্ন করা হবে? প্রশ্নের মানদণ্ড কীভাবে হবে? কে এই ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন করবে? ইউজিসি নিজেও জানে না এসব প্রশ্নের উত্তর। সমন্বিত পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করার পূর্বে ইউজিসির উচিত ছিল সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে সব বিষয় ঠিক করে সিদ্ধান্তে যাওয়া। প্রতি বছর লাখ লাখ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়। অথচ ইউজিসির এমন সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের কী পরিমাণ সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে, সে সম্পর্কে বিন্দু পরিমাণ ধারণা নেই তাদের। এছাড়া অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে লিখিত ও নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা হয়, আবার অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মেধাক্রম বাছাই করে থাকে। ইউজিসি কীভাবে পরীক্ষা নিতে চাচ্ছেন, সেই সম্পর্কে তারা স্পষ্ট কিছু বলেনি। তাদের ভাষায়, আলোচনার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তে যাওয়া হবে। আপনারা আলোচনা ছাড়াই কেন তাহলে সমন্বিত পরীক্ষার মতো এত বড় একটি সিদ্ধান্ত নিলেন?’

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবুল হাসনাত বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় সাধারণত পাস করে শতকরা ১০ থেকে ১২ ভাগ শিক্ষার্থী। এ পরিমাণ পাস করতে পারলে সকল বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা শিক্ষার্থী খুঁজে পাবে না। ফলে তাদের ফেল করা শিক্ষার্থী নিতে হবে। এছাড়া প্রশ্নের মান কমিয়ে অধিক শিক্ষার্থীকে পাস করানোর ব্যবস্থা করতে হবে। ফলে সমস্যা কমানোর পরিবর্তে বৃদ্ধি পাবে।’

ঢাবির অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রুশাদ ফরিদী বলেন, ‘সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বাস্তবায়ন করতে নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। এখন আমাদের বড় দাবি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বাতিল নয় বরং কর্তৃপক্ষের কাছে সবচেয়ে বড় দাবি হওয়া উচিত ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে পরিচালিত করবে, এ নিয়ে মানদণ্ড দাঁড় করিয়ে সেটা নিয়ে মুক্ত আলোচনা করা। একের পর এক সিদ্ধান্ত আমাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে, তাই কী আমরা সব মেনে নেব? আমাদের এখন জানতে চাইতে হবে, কিসের ভিত্তিতে আপনারা সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যেতে চাচ্ছেন? এর মানদণ্ড উপস্থাপন করে মুক্ত আলোচনা করুন। এক ঘণ্টার পরীক্ষা নির্ধারণ করবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবে কি না, তা ঠিক না।’

আরও পড়ুন : চবির ডিন নির্বাচনে সাদা দলের ভরাডুবি

ঢাবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, ‘অন্য বিশ্ববিদ্যালয় যাই করুক, ঢাবি এমন সিদ্ধান্তে যাবে না বলে আমরা প্রত্যাশা করি। যদি আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তবে আমরা তীব্র আন্দোলনে নামবো। আমরা আমাদের ছোট ভাই-বোনদের কোনো ধরনের ক্ষতি হতে দেব না। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থান থেকে আর অধঃপতন দেখতে চাই না।’

এ ব্যাপারে ডাকসুর সদস্যরা বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একমত পোষণ করছি। বিশ্ববিদ্যালয় এমন সিদ্ধান্ত নিলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলব।’

ওডি/এমআরকে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড