মাহবুব নাহিদ
টাইটেল দেখে কেউ ভাববেন না যে আমি বৃদ্ধাশ্রমকে অপরাধ মনে করছি না। বৃদ্ধাশ্রমে নিজের বাবা-মা থাকার চেয়ে একটা সন্তানের মৃত্যু হয়ে যাওয়া অনেক ভালো। যে বাবা-মা নিজের দিকে না তাকিয়ে, নিজে ভেজা জায়গায় ঘুমিয়ে সন্তানকে শুকনা জায়গায় ঘুম পাড়িয়েছে তাদের কি না আশ্রমে গিয়ে থাকতে হবে। নিজের অতীতকে ভুলে গিয়ে হয়তোবা অর্থবিত্তের মোহে আমরা এই ঘোরতর অপরাধ করছি কিন্তু যা ভবিষ্যতে আমাদের নিজের সাথেও ঘটতে পারে। তার খেয়াল কি মাথায় থাকে আমাদের?
তাহলে বেবি কেয়ার? যাদের বাবা মায়েরা নিজেদের পেশা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তাদেরকে বেবি কেয়ার নামক একটি জায়গায় রেখে আসা হয়, যেখানে প্রতিটা শিশু যেন অসহায়। দিনশেষে তাদের আবার ফিরিয়ে আনা হয় যদিও, তবে জীবন গড়ার সবচেয়ে দারুণ মুহূর্তটায় ওই শিশুরা দিনের অধিকাংশ সময় বাবা-মায়ের কাছ থেকে দূরে থাকে।
একটা শিশুকে যেভাবেই গড়া হবে বড় হয়ে ঠিক তেমনিই হয়। ছোট বেলায় একটা শিশুকে বেবি কেয়ারে দিয়ে তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে দেওয়া হয়। বড় হয়ে তার জীবনে এর প্রভাব পড়তে বাধ্য। একটা শিশুর জীবনের প্রথমভাগে অন্তত কয়েক বছর বাবা অথবা মা যেকোনো একজন সারাক্ষণ তার পাশে থাকা উচিত। অনেকে এতে দ্বিমত পোষণ করলেও আমি বলব এই দায়িত্বটা মায়ের ওপরই বর্তায় কারণ মায়ের মতো করে সন্তানের দায়িত্ব নেওয়া বাবার পক্ষে সম্ভব না। আর সবচেয়ে বড় কথা, এই ধরনের সন্তানরাই বাবা-মায়ের অবাধ্য হয় পরে, ঘরকুনো অবস্থা থেকে বাহিরের পৃথিবীতে যায় তখন নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে যায়।
সবচেয়ে বড় কথা হলো তারা বাবা-মায়ের প্রতি বাধ্যগত থাকে না অথবা বাবা-মায়ের প্রতি সম্মান কমে যায় তাদের। রুক্ষ মানসিকতার বহিঃপ্রকাশের একটি মাধ্যম বা কারণ এই বেবি কেয়ার। আমার মতে, বেবি কেয়ার হলো বৃদ্ধাশ্রমের আদিরূপ অথবা বৃদ্ধাশ্রম হলো বেবি কেয়ারের পরিপূর্ণতা। এরা একে অপরের পরিপূরক, এই দুটি জায়গাই আমাদের সামাজিক এবং পারিবারিক জীবনের জন্য ক্ষতিকর।
নিজেদের একটু অর্থসংকুলানের জন্য নিজের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংস করার এই পদক্ষেপে না যাওয়ার জন্য আমি সকল বাবা-মাকে অনুরোধ করবো। প্রতিটি সন্তান বেড়ে উঠুক তার বাবা-মায়ের ভালবাসা পেয়ে, বাবা-মায়ের স্নেহের বেড়াজালে বেড়ে উঠুক তাদের শিশুকাল। আর প্রত্যেকটি সন্তানই বাবা-মায়ের বৃদ্ধ বয়সে তাদের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিক সেই কামনা করি।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড