রহমান মৃধা
আমি এবং আমরা প্রায় এক কোটির বেশি প্রবাসী, দেশের বাইরে থাকলেও প্রতিটি ক্ষণে আমরা দেশকে, দেশের মানুষকে নিয়ে ভাবি। ভালো কাজে যেমন গর্ববোধ করি তেমনি খারাপ কাজে মনক্ষুন্ন হই, অনেক সময় অন্যায়ের প্রতিবাদও করি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অতীতের স্মৃতিচারণ করেছেন, ‘খালেদা জিয়া বলেছিল, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে। সেতুতে যে স্প্যানগুলো বসাচ্ছে, এগুলো তার কাছে ছিল জোড়াতালি দেওয়া। বলেছিল, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, ওখানে চড়া যাবে না। চড়লে ভেঙে পড়বে। আবার তার সঙ্গে কিছু দোসরেরাও… তাদেরকে এখন কী করা উচিৎ? পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে টুস করে নদীতে ফেলে দেওয়া উচিৎ।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যে কথাগুলো তখন বলেছে নিশ্চয় ছোট মনের পরিচয় দিয়েছে, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম যে কাজ করেছে তা ক্ষমার নয় সত্য, কিন্তু যে ভাষায় প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছে, তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে ন্যক্কারজনক ঘটনার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। জবাবদিহিতা বিহীন ক্ষমতার জোরেই প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসে দেশের কোনো নাগরিকের প্রতি ভরা মজলিশে এ রকম অসম্মানজনক কথা বলা সম্ভব হয়েছে।
বর্তমান সরকারপ্রধান ক্ষমতাকে নিজেদের জমিদারি মনে করে বসে আছেন বলে মনে হচ্ছে। যার ফলে এ ধরণের মন্তব্য ক্ষমতার দাপটেই বর্তমান সরকারপ্রধানের মুখ থেকে বের হয়েছে।
দেশের নাগরিকদের প্রতি নিয়মিত বিরতিতে অসম্মানজনক ও শ্লেষাত্মক মন্তব্য সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে বিভিন্ন কর্তাব্যক্তির কাছ থেকে শোনা যায়। নাগরিকদের ক্ষমতাহীন ভাবাই এ ধরনের মন্তব্যের অন্যতম কারণ। জনগণের জবাব শাসকদের জন্য সর্বদাই করুণ পরিণতিই বয়ে আনে, এটা ভুলে গেলে চলবে না।
আরও পড়ুন : সুইডেন, ন্যাটো এবং বিশ্ব রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি
বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ, মত-দ্বিমত থাকবে, যুক্তি-তর্ক হবে, কিন্তু তার সীমা থাকা দরকার।
জাতির পিতার কন্যা, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়াকে পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়ে অশালীন ও অরাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন তাতে পরিষ্কার যে, কোনো একজনের সম্মানহানি কার্যত সব নাগরিকের অসম্মান। বাংলাদেশে যারা রাজনীতি করে, রাজনীতি নিয়ে ভাবে, রাজনৈতিক চিন্তা করে- তাদের আচরণ এমনটিই সমসময় এটা জানি, তবে আমি কল্পনা করতে পারিনি প্রধানমন্ত্রী এভাবে একজন বিরোধীদলের নেত্রীকে হুমকি দিবে!
আরও পড়ুন : দেখা হয়েছিল পূর্ণিমা রাতে
নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনুস, তাকেও প্রধানমন্ত্রী পদ্মায় দুই বার চুবানোর কথা বলেছেন। একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে কীভাবে তিনি এমন বক্তব্য দিতে পারেন!
আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
লেখক : সাবেক পরিচালক (প্রোডাকশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট), ফাইজার, সুইডেন।
(মতামত পাতায় প্রকাশিত লেখা একান্ত লেখকের মত। এর সঙ্গে পত্রিকার সম্পাদকীয় নীতিমালার কোনো সম্পর্ক নেই।)
ওডি/কেএইচআর
সম্পাদক: মো: তাজবীর হোসাইন
সহযোগী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118241, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড