রহমান মৃধা
আমি ছেলেটিকে চিনেছি লিখা লিখির মাধ্যমে। আমি যেহেতু দূরপরবাস থেকে লিখি, নানা ভাবে দেশের অনেক সাংবাদিকদের সঙ্গে কিছুটা যোগাযোগ হয়। আমার মতামত অনেক সময় দেশের চলমান পরিস্থিতির সঙ্গে মিল না থাকার কারণে লিখা পাবলিশ হয় না। দেশের নিয়মানুযায়ী সাংবাদিকরা বলে দেন লিখা ছাড়া যাবে না, ছাড়লে চাকরি থাকবে না। আমি দেশের বাইরেও লিখি তবে বাংলাদেশ নিয়ে নয়, লিখি যেমন সুইডেনের নানা বিষয়ের উপর।
গণতন্ত্রের দেশেও যখন যা খুশি বলা বা লিখা যায় না। যাইহোক দেশের পরিকাঠামোর উপর ভিত্তি করে সাংবাদিকরা লিখা প্রকাশ করেন এবং আমিও নিজেকে সেই ভাবে অ্যাডজাস্ট করে করে চলছি। আমি অতীতে কয়েকজন সাংবাদিককে সুইডেনসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে আশার সুযোগ করে দিয়েছি যাতে করে তারা একটি গ্লোবাল পার্সপেকিটিভস পায় সাংবাদিকতা, সততা এবং নৈতিকতার উপর। মিজানুর রহমান সোহেল তাদের মধ্যে একজন।
সোহেল অতি ভদ্র ছেলে, পরিবারের বড় ছেলে অনেক দায়িত্ব কর্তব্য পালন করে তাকে চলতে হয়। সে জানে তাকে সরল সহজ পথে থেকে কাজ করতে হবে, নইলে একটি বড় পরিবার অনেক আশার আলো থেকে বঞ্চিত হবে। সাংবাদিকতার পাশাপাশি সে শেয়ারে অন্যান্যদের সঙ্গে কাজ করেছে। হয়তবা এক্সট্রা কিছু রোজগার করতে। বিমানের টিকেটের ব্যবসা করতে গিয়ে টোয়েন্টিফোর টিকেট কাণ্ডে প্রতারণার শিকার হয়ে নিজের পুঁজি হারিয়েছে একটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইন ইনচার্জ সাংবাদিক মিজানুর রহমান সোহেল। এ জন্য প্রতারণা করে পালিয়ে যাওয়া ব্যবসায়িক অংশীদারদের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে সে। কিন্তু প্রতারণার শিকার হলেও সেই ঘটনায় হওয়া অন্য মামলায় তাকেই গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
যতটুকু জানতে পেরেছি সব কিছুই দেশের নিয়মানুযায়ী এবং কোনো রকম দুর্নীতি ছাড়া সোহেল ব্যবসা করেছে। ব্যবসায় লাভ লোকসান বলে কথা রয়েছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে সুইডেনে স্টক শেয়ারের ব্যবসা করতে গিয়ে বড় আকারে বাড়ি খেয়েছি। প্রচুর অর্থ দণ্ড দিয়েছি। আবার একই সাথে দেখেছি বন্ধুরা অল্প পয়সায় একই ধরনের ব্যবসায় প্রচণ্ড লাভবান হয়েছে। ধরে নিয়েছি আমি সেই লুজার যার স্টোরি কেও কখনো জানবে না, মোটিভেটেড হবে না।
আরও পড়ুন : রাষ্ট্রতন্ত্র নয় দরকার গণতন্ত্রের
যাইহোক শুনেছি সোহেল তার পারশিক ব্যবসায় বড় আকারে বাড়ি খেয়েছে। দুঃখের বিষয় যাদের সঙ্গে ব্যবসায় জড়িত ছিল তারা সমস্ত টাকা পয়সা আত্মসাৎ করে দেশ থেকে পালিয়েছে। সোহেল যথা সময়ে কর্তৃপক্ষের নজরে বিষয়টি দিয়েছে। সে অন্যদের মতো দেশ ছাড়েনি যদিও তার পৃথিবীর যে কোনো দেশে ভ্রমণ করার সুযোগ রয়েছে। অপরাধী হলে আমার বিশ্বাস সেও অন্যদের মতো দেশ ছেড়ে ভাগত। তারপরও যদি সে অপরাধী হয়ে থাকে অবশ্যই তাকে শাস্তি পেতে হবে কারণ আইন সবার জন্যই সমান কিন্তু অবাক হয়েছি জেনে বিচারের আগেই তাকে জেলে ঢুকানো হয়েছে?
বাংলাদেশের বর্তমান সমস্যা আমাদের বেশ চিন্তিত করে তুলছে এই কারণে বড় বড় ‘রাঘব বোয়ালের’ কিছুই হচ্ছে না অন্যদিকে সাধারণ মানুষ আতঙ্কের মধ্যে জীবন যাপন করছে। আমি দেশের বিচার বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, (সোহেলকে আমি তিন বছরের বেশি সময় ধরে চিনি। আমার এখানে এসেছে আমার সঙ্গে ঘুরেছে ইউরোপ। পরিবারের বড় ছেলে বাবা-মা ভাইবোন সহ নিজের পরিবারের দায়িত্বর সাথে দেশের কথা ভাবে, মানুষের কথা ভাবে)।
সোহেল আদৌ অপরাধী কি-না বা অপরাধ করছে কি-না সেটা প্রমাণ হবার আগেই তাকে জেল হাজতে কিভাবে ঢুকানো হলো, বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে। এভাবে চলতে থাকলে তো দেশে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে সবার! কিছুই কি করার নেই? থাকলে প্লিজ বিষয়টি সঠিক ভাবে তদন্ত করে তাকে বিচারের কাঠগড়ায় হাজির করুন।
আরও পড়ুন : দেখা হয়েছিল পূর্ণিমা রাতে
সবিনয়ে অনুরোধ করছি জনাব মিজানুর রহমান সোহেলকে জেল থেকে মুক্তি দিন, তার বিচারের রায়ের উপর তাকে শাস্তি দিন যদি সে সত্যিকার অপরাধী হয়ে থাকে। সেই সাথে কর্তৃপক্ষকে বিনীত আহ্বান জানাই, তথ্য বিহীন আবেগী না হয়ে তথ্য যুক্ত সত্য খুঁজে বের করুন এবং দরকারে সাজা দিন।
বিনীত নিবেদন।
লেখক : রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক (প্রোডাকশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট), ফাইজার, সুইডেন।
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড