• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

প্রতিযোগিতার নাম ‘গুড টু বেটার’, সহযোগিতার নাম ‘টুগেদারনেস'

  রহমান মৃধা

১৪ অক্টোবর ২০২১, ১১:২৩
প্রতিযোগিতার নাম ‘গুড টু বেটার’, সহযোগিতার নাম ‘টুগেদারনেস'
ফাইজারের প্রোডাকশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের সাবেক পরিচালক রহমান মৃধা ও তার পরিবার (ছবি : সংগৃহীত)

শ্রেণিকক্ষ বা অফিস-আদালতের প্রতিযোগিতা আর খেলার মাঠের প্রতিযোগিতায় যেমন মিল রয়েছে ঠিক তেমন অমিলও রয়েছে। প্রতিযোগিতা প্রশিক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এখন যদি কেউ মনে করে প্রতিযোগিতার নাম জীবন না, সহযোগিতার নাম জীবন, তাহলে প্রশিক্ষণে নেগেটিভ প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে। নেগেটিভ প্রতিক্রিয়া সমাজ তথা দেশের উপর ভয়ংকর হিংসা বিদ্বেষের সৃষ্টি করে, যার কারণে অনেকের মতে প্রতিযোগিতা মানে জীবন না। তাদের ধারণা সহযোগিতাই একমাত্র জীবন।

আমি মনে করি প্রতিযোগিতার নাম গুড টু বেটার, আর সহযোগিতার নাম টুগেদারনেস। আমি কেন এমনটি মনে করি তার উত্তর দেবার আগে বাংলাদেশের শিক্ষা প্রশিক্ষণের দুর্বলতা নিয়ে কিছু বর্ণনা করি।

শিক্ষার পরিকাঠামো থিউরিটিক্যালি পরিপক্ব। কারণ প্রশিক্ষণে সব বিষয়ের উপর জ্ঞান দেওয়া হয়। যেমন পুঁথিগত বিদ্যায় সুন্দর করে বর্ণনা দেওয়া আছে স্পোর্টস সম্পর্কে। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলে স্পোর্টসের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। তারা যথাযথভাবে স্পোর্টসের সঠিক উত্তর দিয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সক্ষম হচ্ছে। অথচ দেখা যাচ্ছে বাস্তবে তারা স্পোর্টসের উপর কোনো ধরনের ফিজিক্যাল এক্টিভিটি করেনি।

সবাই জানে কীভাবে দৌড়াতে হয় কিন্তু প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কে প্রথম বা দ্বিতীয় হলো এটা যাচাই বাছাই হলো না, এমনকি যে হয়তো দ্বিতীয় হতো পরবর্তী সময়ে প্রথম হবে এমনটি সুযোগও পেল না।

এমন পরিবেশে বলা যেতে পারে প্রতিযোগিতার নাম জীবন না। কিন্তু যদি সত্যিকারার্থে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যে দ্বিতীয় থেকে পরবর্তীকালে প্রথম হতে পারত বা হত, সে ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা মানে গুড টু বেটার।

পুঁথিগত বিদ্যার সহযোগিতায় স্পোর্টসে ভালো রেজাল্ট করা মানে জীবন না বরং টুগেদারনেসে। শিক্ষক, পুঁথিগত এবং মুখস্থ বিদ্যা সব মিলে স্পোর্টসে ভালো করাই হলো এক্ষেত্রে টুগেদারনেস। আশা করি আমার ধারণার উত্তর পেয়ে গেছেন সবাই।

আরও পড়ুন : সোনার বাংলা গড়তে আমাদের বর্জনীয় ও করণীয়

আমি অতীতে লিখেছি যেমন বাংলাদেশে কেন সব ভালো শিক্ষার্থীরা প্রথমত ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়? কেন ভালো বা মেধাবী শিক্ষার্থীরা শুরু থেকেই যেমন রাষ্ট্রবিজ্ঞান, পলিটিক্যাল সাইন্স ইত্যাদি পড়তে চায় না। আবার কেনোই বা ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবার পরও বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে পুলিশ বা সিভিল সার্ভিসের চাকরি করতে শুরু করে? কারণ প্রশিক্ষণ মুখস্থ বিদ্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ, স্বাভাবিকভাবেই পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় সহজ উপায়ে উত্তীর্ণ হয়ে দেশের প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পজিশনগুলো দখল করে বসে আছে। দখল করে বসে, রাষ্ট্রের অর্থ সঞ্চয় করা আর দেশের পরিকাঠামোকে মজবুত করে অর্থ উপার্জন করা সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস।

আমি জোর করে বলতে পারি দেশের রাষ্ট্রযন্ত্রের বেশির ভাগ সেক্টরে একজন যোগ্য ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যাবে না যে জানে তার কাজের উদ্দেশ্য কী বা কী কারণে তাকে বেতন দেওয়া হয়। যদি সত্যিকারার্থে তারা জানতো তবে দেশের বারোটা এভাবে বাজত না।

এখন এর জন্য দায়ী কে বা কারা? আমরা সবাই, যতক্ষণ পর্যন্ত প্রতিটি সেক্টরে একজন করে দেশ প্রেমিক সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সঠিকভাবে কাউকে দোষারোপ করা যাবে না (যদিও কাগজে, কলমে এবং বেতনে এ ধরণের লোক নিয়োগ দেওয়া আছে)।

বাংলাদেশের শিক্ষা প্রশিক্ষণকে শুরু থেকে গড়ে তুলতে হবে। সু-শিক্ষায় সমন্বয় ঘটাতে হবে। শিক্ষার বিভিন্ন ধাপে অ্যাসাইনমেন্ট থাকতে হবে যেখানে কমিটমেন্ট থাকবে কী শিক্ষা, কেন শিক্ষা এবং সম্ভাব্য আউটকাম। যতদিন পর্যন্ত এটা সঠিকভাবে নির্ধারণ করা না হবে ততদিন দেশের পরিকাঠামো সঠিকভাবে গড়ে উঠবে না এবং সবাই যার যার জায়গা থেকে দায়ভার এড়িয়ে চলবে।

দেশের পুরো শিক্ষা পদ্ধতিতে একজন প্রসেস ওনার থাকতে হবে এবং সেই ব্যক্তি কাগজে কলমে এবং বেতনে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী। তিনি সব ভোগ করছেন সত্য তবে দেশের মানুষের কাছে তার জবাবদিহিতা নেই, দরকার বা প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন না। কারণ তিনি নিজেই জানেন না তার সঠিক দায়িত্ব এবং কর্তব্য কি।

আমার এ লেখা কাউকে দোষারোপ করার জন্য নয় শুধু একটি কেস স্টাডি মাত্র। একইভাবে প্রতিটি সেক্টরকে আমরা তুলে ধরতে পারি। এই তুলে ধরা এবং ভুলকে শোধরানোর নাম গুড টু বেটার এবং একত্রিত হয়ে সহযোগিতা করা মানে দুর্নীতি মুক্ত সোনার বাংলা গড়া।

আরও পড়ুন : দেখা হয়েছিল পূর্ণিমা রাতে

সোনার বাংলা গড়ার স্বার্থে দলবল নির্বিশেষে দেহ থেকে মেদ, মাথা থেকে জেদ আর মন থেকে ভেদাভেদ দূর করতে হবে, তা নাহলে হবে না সোনার বাংলা গড়া। Together we can make it happen and remember building trust means building growth, so please let us help Bangladesh to make a better place to live in.

লেখক : রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক (প্রোডাকশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট), ফাইজার, সুইডেন।

[email protected]

ওডি/কেএইচআর

চলমান আলোচিত ঘটনা বা দৃষ্টি আকর্ষণযোগ্য সমসাময়িক বিষয়ে আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড