• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

প্রাণহীন ক্যাম্পাসে একদিন

  আর এম রিফাত

২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:০০
ইবি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মূল ফটক। ছবি : সংগৃহীত

‘হারিয়ে খুঁজি নতুন করে উল্টিয়ে স্মৃতির পাতা, আজ বারে বারে শুধু মনে পড়ে পুরনো দিনের কথা’। বহুদিন পর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাসে ঘুরতে গিয়ে অনির্বাণ মিত্র চৌধুরীর ‘পুরনো দিনের কথা’ কবিতার শেষ দুই লাইন মনে পড়ে গেল। করোনাকালীন দুর্যোগের কারণে প্রায় দুই বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। দীর্ঘদিনের এই বন্ধাবস্থায় শিক্ষার্থীদের কাছে ধীরে ধীরে অপরিচিত হতে চলেছে চিরচেনা একটি মিনার।

আজ বারবার মনে পড়ছে চায়ের কাপের সেই আড্ডা, ডিম খিচুড়ির নাস্তা, গানে গানে জমে ওঠা ক্যাফে, প্রশস্ত সিঁড়ির দুপাশে বন্ধুদের খুনসুটি। এসব মনে পড়তেই পুরনো দিনের স্মৃতি আজ নতুন করে ভেসে আসে চোখের কোনে।

বলছি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (টিএসসিসি) কথা। নান্দনিক ডিজাইন আর নজরকাড়া রঙের বিশাল ভবন। বিস্তীর্ণ সবুজ ফুটবল মাঠের প্রান্ত থেকে তাকালে মনে হতে পারে, এ যেন মুঘল সাম্রাজ্যের কোনো রাজবাড়ির অংশ। সামনেই একপায়ে দাঁড়িয়ে অতিথিদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছে লাল সবুজের কৃষ্ণচূড়া গাছ।

ক্যাম্পাস চলমান অবস্থায় টিএসসিসির বুকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদচারণা থাকে সার্বক্ষণিক। বিকাল হলেই সিঁড়িতে জমে আড্ডা। হয় বিভিন্ন বিষয়ে যুক্তিতর্ক-আলাপ, সমাজ-সাহিত্য ও রাজনীতির কথা। আর সন্ধ্যা নামলেই বাতাসে ভাসতে থাকে গিটারের সুর। নিত্যদিনের মতো চলে গল্প-কবিতার আসর। রাতের বেলা সিঁড়িতে বসলে মৃদু বাতাসের ছোঁয়া হৃদয়ে প্রশান্তি বয়ে আনে। সে বাতাস আজও আছে, শুধু নেই প্রাণের মেলা। এ যেন দাঁড়িয়ে থাকা এক প্রাণহীন বৃক্ষ।

ক্যাম্পাসে যত ধরনের আয়োজন তার সিংহভাগ টিএসসিসিকে ঘিরেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সেমিনার, কর্মশালা, সামাজিক সংগঠনের বিভিন্ন প্রোগ্রাম এই টিএসসিসিতেই হয়ে থাকে। এখানে রয়েছে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত সুসজ্জিত বিশাল অডিটোরিয়াম। যেখানে একসাথে বসে প্রায় দেড় হাজার দর্শক অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারেন। আরও আছে অ্যাস্টেট অফিস, প্রেস কর্নার, ডিবেটিং সোসাইটি, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়, রোভার স্কাউটসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের অফিস।

আরও পড়ুন : ঘুম ভেঙে যায় বারবার

কিন্তু টিএসসিসির বর্তমান অবস্থা দেখলে মনে হতে পারে এটি কোনো পরিত্যক্ত ভবনের অংশ। চারপাশে আগাছা, ঝোপঝাড়, ধুলোয় ধূসরিত আসবাবপত্র, অপরিচ্ছন্ন শৌচাগার, অপরিকল্পিত আবর্জনার ভাগাড়। সিঁড়িগুলো স্যাঁতস্যাঁতে, যা বসার অনুপযোগী। এ ছাড়া অপরিকল্পিত বৃক্ষরোপণ চারদিক থেকে নান্দনিক এই ভবনটির আসল রূপ যেন ঢেকে ফেলেছে। টিএসসিসির ছবি তুলতে গেলে একগুচ্ছ গাছের ছবি উঠে যায়। তবে সম্প্রতি টিএসসিসির ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শুরু হয়েছে। যা সম্পন্ন হলে এই স্থানটির চেহারাই পাল্টে যাবে। ২০০০ সালে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) অর্থায়নে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে টিএসসিসি নির্মাণ করা হয়েছিল।

ওডি/নিলয়

চলমান আলোচিত ঘটনা বা দৃষ্টি আকর্ষণযোগ্য সমসাময়িক বিষয়ে আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড