• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

খোলো খোলো দ্বার, রাখিয়ো না আর বাহিরে আমায় দাঁড়ায়ে

  রহমান মৃধা

০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭:১৭
খোলো খোলো দ্বার, রাখিয়ো না আর বাহিরে আমায় দাঁড়ায়ে
ফাইজারের প্রোডাকশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের সাবেক পরিচালক রহমান মৃধা ও মো. গোলাম সারোয়ার সাইমুম (ছবি : সংগৃহীত)

আমরা যদি বিশ্বের শুরু থেকে আজ অবধি ইতিহাস ঘেঁটে দেখি, তাহলে কী লক্ষণীয় হবে? সব পরিবর্তনে দরকার একজন নেতার। তবে ব্যক্তির পরিবর্তনে দরকার ব্যক্তির নৈতিকতার। এ পর্যন্ত যারা নেতা হয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের মধ্যে যে জিনিসটার মিল সেটা হলো, তারা সবাইকে মোটিভেট করতে পারদর্শী।

যেমন বাংলাদেশ স্বাধীন করতে কে না চেষ্টা করেছেন, কিন্তু নেতা হতে পেরেছেন সামান্য কয়জন। বাঙালি জাতি এবং বাংলাদেশ স্বাধীন করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা অপরিসীম, ফলে তিনি হয়েছেন জাতির পিতা আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন বাংলাদেশ। তাহলে সহজ করে মনের আনন্দে রবী ঠাকুরের মত করে বলতে পারি –

‘আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে--- নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে?।

আমরা যা খুশি তাই করি, তবু তার খুশিতেই চলি, আমরা নই বাঁধা নই দাসের রাজার ত্রাসের দাসত্বে--- নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে?’

যত সহজে লাইনগুলো লিখতে পেরেছে, তত সহজে হয়ত বলতে বা অনুভব করতে পারছি না। কারণ কি? কারণ একটাই, সেটা হলো, ‘ওয়ার্ক এজ ইউ টক।’ কথার সঙ্গে যদি কাজের মিল না থাকে, হবে কি দেশকে সোনার বাংলা করা? ভবিষ্যতে যারা এ দায়িত্ব নিবে, তাদের যদি কোনো কমিটমেন্ট না থাকে এবং যদি ক্ষমতার অপব্যবহার করে- যখন যা খুশি তাই করা হয়, কি হবে নতুন প্রজন্মের, ভেবেছেন কি?

আমি নিয়মিত লিখে চলেছি শিক্ষা প্রশিক্ষণের উপর। স্বাভাবিক ভাবে নানা ভাবে নানা জনের থেকে ফিড ব্যাক পেয়ে থাকি। বর্তমানে যে বিষয়টি শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের বেশি হতাশ করে তুলেছে সেটা হলো শিক্ষার ক্রান্তি লগ্নে অ্যাসাইনমেন্ট পদ্ধতি চালু করা। অনেকে এখনও জানে না অ্যাসাইনমেন্ট কি, কেন এবং কি জন্য? যাই হোক বিষয়টি নিয়ে সত্বর ফিরব তবে নতুন প্রজন্মের একটি ভাবনা আমাকে বেশ ভাবনায় ফেলেছে। আমি তার পুরো লিখাটি শেয়ার করলাম, শেয়ার ভ্যালুর কনসেপ্ট থেকে।

জানতে হলে পড়তে হবে।

‘স্যার,

আমি ২০২১ সালের এইসএসসি পরীক্ষার্থী। সব কিছু স্বাভাবিক থাকলে এতদিনে হয়তো এইসএসসি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাও হয়ে যেত। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে অধিকাংশ মানুষের অধিকাংশ পূর্ব পরিকল্পনা নষ্ট বা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এটাই স্বাভাবিক এবং আমরা যে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না এটাই তার অন্যতম প্রমাণ। এই দিকে আর কিছুদিন গেলেই বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের দেড় বছর পূর্ণ হবে হয়তো। বর্তমানে যে কোনো বন্ধু বা শিক্ষার্থীর সাথে কথা বললেই শুধু নিরাশার কথা শোনা যায়। আবার আমাদের বাবা মা চিন্তা করতে করতে যেনো কপালে ভাঁজ ফেলেছেন। অনেকে আবার আল্লাহর উপর ভরসা করে দুশ্চিন্তা করা ছেড়ে দিয়েছেন। এখানে মূলত আমার একান্ত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরার চেষ্টা করবো। এইসএসসি পরীক্ষার্থী হিসেবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার অ্যাসাইনমেন্ট ও অন্যান্য প্রক্রিয়াগুলোকে আমি কীভাবে দেখছি সেগুলো উল্লেখ করার চেষ্টা করবো। অন্য কারো সাথে আমার মতামত নাও মিলতে পারে। আশা করি ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখবেন।

আরও পড়ুন : আমি সেই নহাটারই ছেলে

আমাদের ২০১৯-২০২০ ব্যাচের ক্লাস শুরু হয় ২০১৯ সালের জুলাই মাসে আর করোনা মহামারির কারণে স্থগিত হয় ২০২০ সালের মার্চ মাসে। বলা চলে ৮ মাসের মতো শিক্ষাগ্রহণ করতে পেরেছি। কলেজ দূরে থাকায় মেসে থেকে লেখাপড়া করতে হয়েছে। মহামারির সময় প্রতিনিয়ত কলেজ খোলার আশ্বাসের কারণে মেসের একটা বিশাল সংখ্যার বিল পরিশোধ করার পর মেস ছেড়ে দিতে হয়েছে।

প্রতিনিয়ত কলেজ খোলার আশ্বাসের কারণে আবার মাঝখানে ভাড়া বাসায় উঠেছিলাম। এর আরেক কারণ হতে পারে বাড়িতে থাকলে পড়াশুনা বেশি একটা হয়ে ওঠে না বা করতে পারি না বা এটাকে অজুহাত হিসেবেও দেখতে পারেন। পড়াশুনার চর্চা যাতে হারিয়ে না যায় সেটার কারণেই শহরে বাসা ভাড়া নেওয়ার ওই ব্যবস্থা করা। কিন্তু আবার করোনা বাড়ল, আবার করোনা ধোঁকা দিল এবং কলেজ খুলল না কারণ অনেক ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে আবার বাসায় থাকাও অনেক দিক দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় আবার নিজের বাসায় চলে আসলাম। এত সব ঝামেলায় আর ধীরে ধীরে বন্ধ বাড়ানোর কারণে অনেক বিষয়ের উপর চর্চা হারিয়ে যায়। সেগুলো এখন নতুন করে আলাদাভাবে পড়তে হচ্ছে বড় ভাইদের কাছে। শেষ কথা এক দিকে শিখছি আরেক দিকে চর্চা না থাকার কারণে ভুলে যাচ্ছি। এই দীর্ঘ বন্ধে এটাই স্বাভাবিক নয় কি?

আবার আমি বড় ভাইয়ের কাছে পড়াগুলো দেখিয়ে নিতে পারছি বলেই কী অন্য সবাই দেখিয়ে নিতে পারছে এমনটাও নয়। আমাকেও অনেকদূর যেতে হয় ওই বড় ভাইয়ের কাছে পড়া দেখিয়ে আনার জন্য। ফেসবুকভিত্তিক অনেক কোচিং বা প্রাইভেট কোর্স কিনে রেখে দিয়েছি। প্রয়োজনীয় উপকরণ (ভালো গতির ইন্টারনেট, মোবাইল/ল্যাপটপ/ট্যাবলেটসহ আরও অনেক বিষয়) বা ভালো সুযোগ সুবিধা না থাকার কারণে ওগুলো আর করা হয় না। বলা চলে টাকা গুলো নষ্ট। এ জন্যই মূলত অনেক দূরে থাকা ওই বড় ভাইয়ের কাছে যেতে হয়। এ ঘটনার মূল কথা বা শিক্ষা হলো অনেক প্রক্রিয়া আছে পড়াশুনা ভালোভাবে চালিয়ে যাওয়ার কিন্তু সবার সেই সুযোগ সুবিধা নেই।

এখন আমাদের বর্তমানে অ্যাসাইনমেন্ট লিখে জমা দিতে হচ্ছে তিন বিষয়ের উপর। এগুলোর উপরই নাকি এইসএসসি পরীক্ষাও নেওয়া হবে। এই অ্যাসাইনমেন্ট একটা বিশাল চাপ। নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে লিখতে প্রচুর সময় লাগে। এর ফলে অন্যান্য পড়াশুনা করতে পারছি না। প্রতি সপ্তাহে দুইটা অ্যাসাইনমেন্টের পড়াশুনা করতেই সপ্তাহ কেটে যায়। একটা বিশাল ধাঁধার মধ্যে পরে গিয়েছি এবং বুঝতে পারছি না এর থেকে কিভাবে বের হবো।

দীর্ঘদিন চর্চা না থাকার কারণে পড়ালেখার অনেক বিষয়েই দুর্বল হয়ে গিয়েছি। বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে বর্তমানে আমাদের দুইটা লক্ষ্য। এক হচ্ছে এইসএসসি পরীক্ষা আর আরেক হচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা। অ্যাসাইনমেন্টের আগে অন্যান্য পড়া পড়তাম। মূল কথা হলো ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতাম। বর্তমানে এইসএসসি পরীক্ষার কমিয়ে দেওয়া সিলেবাসের উপর অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে গিয়ে আবার অন্যান্য পড়াশুনার উপর চর্চা হারিয়ে যাচ্ছে।

আমাদের সিলেবাস তো কমিয়ে দেওয়া হয়েছে মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের ভর্তি পরীক্ষায় কী করা হবে? ভর্তি পরীক্ষাও কী কমিয়ে দেওয়া সিলেবাস এর উপরে হবে? সেটা এখনো স্পষ্ট নয় আমাদের কাছে। ভাবতে খুবই অবাক লাগে যে এই মাত্র কয়েকটি বিষয় অথচ এগুলোই লাগে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের উপর প্রভাব রাখবে। সামনে মূল বিষয়েই যেনো ভর্তি পরীক্ষা।

ভর্তি পরীক্ষায় ভালো কোথাও না টিকলে সামনে না করুক কিন্তু পিছনে হলেও হেও করার লোকের অভাব থাকবে না। অথচ তাদের অধিকাংশই পরিস্থিতি বিবেচনা করবে না অথবা বর্তমানে পাশে এসে কীভাবে এই পরিস্থিতিতেও ভালো করা যায় সেটার জন্য তারা কোনো রকম সাহায্য করার ইচ্ছাও প্রকাশ করে না। কিন্তু এই যে বাংলাদেশে প্রেক্ষাপটে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় অথচ এটা নিয়ে কোনো সঠিক দিক নির্দেশনার অভাবে ভুগছি।

আবার আমাদের যদি এইসএসসি তে পড়াশুনার ভিত্তি ভালোভাবে গড়ে না ওঠে তাহলে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠাটা কিরকম হবে বা ভবিষ্যতে এর কিরূপ প্রভাব পড়তে পারে? এটাও চিন্তার বিষয়। এ জন্য এখন উত্তম হতে পারে এই মুহূর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে আবার ভালোভাবে ক্লাস নিয়ে তারপর এইসএসসি বা অন্যান্য পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তা করা। কারণ ভিত্তি ঠিক রাখতে হবে তো।

আরও পড়ুন : বাবা-মা এবং ভালোবাসা

ফেসবুক অ্যাপ এ ঢুকে অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিখে সার্চ করে দেখতে পারেন। কোনো কোনো অ্যাসাইনমেন্টের সলিউশন দেওয়ার গ্রুপ এ দুই লক্ষেরও বেশি মেম্বার রয়েছে। তাহলে বুঝতেই পারছেন কীভাবে অ্যাসাইনমেন্ট লেখা হচ্ছে। শুধু যে ফেসবুক সেটাও না। আরো অনেক মাধ্যমে আছে শুনেছি। আর এগুলো কতটুকু কাজে লাগবে সেটার পরিমাপও নিশ্চয়ই আন্দাজ করতে পারছেন।

সমস্যা তো অনেক উল্লেখ করলাম এবার আমার দৃষ্টিতে কিছু সমাধান উল্লেখ করার চেষ্টা করি। সমাধান গুলো অদ্ভুত, ঝুঁকিপূর্ণ, "বর্তমান" বাস্তবতার সাথে মিল নেই। তবুও উল্লেখ করতেই হচ্ছে। তার আগে একটা উদাহরণ দেই। আমেরিকা আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে। বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় বছরের হিসেবে আমরা আমেরিকার থেকে গড়ে সর্বনিম্ন ২৩-২৯ বছর পিছিয়ে আছি। (আবার অনেক বিষয় আছে যেগুলোতে আমরা আমেরিকার থেকে ৭০-১০০ বছর পিছিয়ে আছি যেমন : মহাকাশ গবেষণা।

কিন্তু এই ছোট্ট পৃথিবীতে সবাই সব বিষয়ে এগিয়ে যেতে চাইলে ধ্বংসযজ্ঞ লেগে যাবে বা যেতে পারে। তাই এগুলো বাধ্যতামূলক নয় জন্যে সময়ের হিসেবে এই জাতীয় অনেক বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করিনি।) এই সময়গুলো কমিয়ে আনার জন্য মূলত লিপ ফ্রগ দেওয়া হয়। তাই আমি বলতে চাচ্ছি আমরা যদি আমাদের দেশের বিভিন্ন বিষয়ে লিপ ফ্রগ দিতে থাকি আমেরিকার পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য তাহলেও এখন থেকে ৪২ বছর বা তার চেয়ে কিছু কম বা বেশি সময় লেগে যেতে পারে। কিন্তু সেটার জন্য আগে তো লিপ ফ্রগ দেওয়া শুরু করতে হবে। কিন্তু আমি বললাম আর কেউ এখনই সেগুলোর উপর কাজ করা শুরু করলো এমনও তো কোনো কথা নেই।

আমাদের দেশ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং এর প্রয়োগে অন্যান্য দেশের থেকে অনেক বেশি পিছিয়ে আছে। আমি নিজে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে উন্নত দেশের প্রযুক্তিগত সুযোগ সুবিধা পর্যবেক্ষণ করে বলছি আমরা এসব দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছি যেগুলোর সহজেই উন্নতি করা সম্ভব। আমরা প্রযুক্তির সুযোগ সুবিধাগুলো পুরোপুরি গ্রহণ করতে পারছি না। আবার আমাদের দেশ থেকে বিদেশে কোটি কোটি টাকা চলে যাচ্ছে হ্যাক হওয়ার মাধ্যমে বা অন্যান্য কারণে।

মূল কথা আমাদের তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিশাল পরিবর্তন আনার প্রয়োজন। এ জন্য দক্ষ জনবলের প্রয়োজন। এখন আমার কল্পনায় বলতে পারি যে আমাদের এইসএসসি-২১ ব্যাচের লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের স্ব-ইচ্ছায় নিয়ে সম্পূর্ণ আলাদা কোর্সের ব্যবস্থা করে তাদেরকে দক্ষ করে তুলে দেশের সেবায় নিয়জিত করে আমাদের প্রযুক্তি খাতের উন্নতি করা হোক। তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে কম করে হলেও ২০-৩০টা আলাদা আলাদা বিষয়ের উপর কোর্স সিস্টেম শুরু করা যেতে পারে এবং এর মাধ্যমে আমাদের দক্ষ জনবলের সৃষ্টি হতে পারে। আর এই কোর্স সিস্টেম বলতেই মূলত কোনো বিষয়ের উপর দক্ষতা বাড়ানোর কোর্স।

যতদূর জানি, আমেরিকা তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে অনেকাংশে ভারতীয় দক্ষ জনবলের উপর নির্ভরশীল হচ্ছে। তারা আসলে কীভাবে এটা সম্ভব করে দেখাচ্ছে সেটা জানতে হবে? আর আমরা কেনো পারব না বা পারছি না? আমরা আসলে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে কী পেলাম এতদিন বা পাচ্ছি? এটা আগে বিবেচনা করা প্রয়োজন এবং প্রয়োজন হলে অবশ্যই পরিবর্তন নিয়ে আসা প্রয়োজন।

তথ্য প্রযুক্তির বিষয়টি এখানে শুধু মাত্র একটি উদাহরণ। মূল কথা হচ্ছে আমাদের কী প্রয়োজন? সেই প্রয়োজন অনুসারে শিক্ষার কোর্স শুরু করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দ মত কোর্স বেছে নিতে পারে এবং পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারে। এভাবে আমরা আমাদের এই করুন অবস্থার পরিবর্তন আনতে পারি। ধ্বংস হতে থাকা প্রজন্মগুলোকে আবার সুন্দর করে তোলার চেষ্টা করতে পারি। ধ্বংসের কথা কেনো বললাম? করোনা মহামারির ধাক্কা, বর্তমান অনলাইন গেম, আসক্তি সৃষ্টিকারী এবং নৈতিকতা ধ্বংসকারী অ্যাপ, মাদক সহ অন্যান্য বিষয়গুলো তো উল্লেখ করার সুযোগই পেলাম না। তাই আশা করি বুঝে নিবেন যে ধ্বংসের কথা কেনো বললাম।

এভাবে নতুন কোনো প্রক্রিয়া অবলম্বন করে আমরা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর এই মহামারীর ধাক্কা সামলে নেওয়ার চেষ্টা করতে পারি। আবার আমাদের সেকালের শিক্ষাকে আপডেট করতে পারি। তার সাথে পারি শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটানোর।

আরও পড়ুন : দেখা হয়েছিল পূর্ণিমা রাতে

আমার দৃষ্টিতে শেষ কথা হচ্ছে যে, সু-শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড কিন্তু আমাদের এই মেরুদণ্ডে পচন ধরতে শুরু করেছে। এই পচনকে এই মুহূর্তে কোনো ভাবে বা যে কোনো উপায় অবলম্বন করে আটকাতে না পারলে জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো তো দূরের কথা কোমর সোজা করে চলতেও পারবে না। সেজন্য সুন্দরভাবে ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং সেটা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। আর প্রয়োজনীয় পরিবর্তন নিয়ে আসার জন্য এই মহামারীর দীর্ঘ বন্ধের চেয়ে উত্তম সুযোগ আর হয়তো আসবে না।

মো. গোলাম সারোয়ার সাইমুম, রংপুর সরকারি কলেজে অধ্যয়নরত।

“দাও সাড়া দাও, এই দিকে চাও

এসো দুই বাহু বাড়ায়ে।”

যাগো বাংলাদেশ যাগো নতুন করে ভাব।

লেখক : রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক (প্রোডাকশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট), ফাইজার, সুইডেন।

[email protected]

ওডি/কেএইচআর

চলমান আলোচিত ঘটনা বা দৃষ্টি আকর্ষণযোগ্য সমসাময়িক বিষয়ে আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড