মাহবুব নাহিদ
আসলে দুর্নীতি আমাদের রক্তে মিশে গেছে। আমাদের দেশটা অনিয়ম অসংগতিতে একদম ভরে গেছে। মানুষ অন্যায় করতে করতে এখন ন্যায়ের কথা ভুলেই গেছে৷ এখন অন্যায় করাটাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে। যারা এই সমস্ত কাজ করে তাদের চরিত্রের সাথে, জীবন জীবিকার সাথে মিশে গেছে এসব। মানুষের মৌলিক চাহিদা নিয়েও অনিয়ম করতে বাঁধে না তাদের৷ অথচ কথায় কিন্তু তারা অনেক এগিয়ে থাকে। মুখ দিয়ে তারা পৃথিবী বিজয় করে দেয়। মুখের কথায় চিড়া ভিজুক বা না ভিজুক ভেজানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা তারা ঠিকই করে। সমাজের মানুষের কাছে ভালো মানুষের একটা মুখোশ পরিধান করে থাকে তারা। সেই মুখোশটা যখন টেনে হিচড়ে খুলে ফেলা হয় তখন দেখা যায় তাদের আসল রূপ কতটা জঘন্য। কতটা নিষ্ঠুর তাদের মন তখন তা বোঝা যায়।
করোনা ভাইরাস নিয়ে নতুন করে আর কিছুই বলার নেই। করোনা ভাইরাস এখন পৃথিবীতে চালকের আসনে বসে গেছে। পুরো পৃথিবীকে নাকে রশি লাগিয়ে ঘুরাচ্ছে ভয়াল করোনা ভাইরাস। পুরো বিশ্বকে ইতিমধ্যেই এক মৃত্যুপুরী বানিয়ে ছেড়েছে করোনা ভাইরাস। প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিলে যোগ দিচ্ছে অসংখ্য মানুষ। চারিদিকে শুধুই মৃত্যুর সুর। এই সুর করে যে কেটে যাবে তা কারো জানা নেই। সকলেই এই মহা সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বেড়াচ্ছে। কিন্তু পথ খুঁজে পাওয়া তো এতটা সহজ কাজ নয়। এতটা সহজে এই বিপদ থেকে হয়তো আমরা মুক্তি পাচ্ছি না। ভ্যাকসিন হোক কিংবা কোনো ঔষধ, কিছু একটা আবিষ্কার হতে তো হবেই। পৃথিবী এইভাবে চলতে পারে না। এভাবে আসলে চলা সম্ভব না। কোনো একটা উপায় বের করে আনতে হবেই। কিন্তু সেই উপায় কারো জানা নেই। কারো কিছু জানা না থাকলেও সবাই কিন্তু এই বিষয়ে একমত যে এই সংকট থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে। পুরো পৃথিবী যখন সমাধানের উপায় হাতড়ে বেড়াচ্ছে তখন পৃথিবীর একটি স্বাধীন ভূখণ্ডে মানুষ নামের কিছু অমানুষেরা তাদের খড়গ চালিয়ে যাচ্ছে।
অনিয়ম, দুর্নীতি আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে গেছে। কিছু মানুষ তাদের ধ্যান, জ্ঞান, খেয়াল সকল কিছু দিয়ে সর্বদা শুধু মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। মানুষের ক্ষতি করে নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিলের নির্মম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এই করোনাকালীন মহা সংকটের মাঝেও বসে নেই তারা। তারা তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে নির্বিগ্নে। কারো বিষয় আলোচনায় আসছে বলে মানুষ জানতে পারছে আর অনেকের তো আলোচনায়ই আসছে না। তবে আলোচনায় আসার চেয়ে আলোচনায় না আসার সংখ্যাই বোধ করি বেশি হবে।
লকডাউন শুরু হয় যখন, গরীব দুঃখী খেটে খাওয়া মানুষেরা বিরাট বিপদে পড়ে যায়। যারা দিন আনে দিন খায় তাদের উপার্জনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। সেজন্য সরকার তাদের সাহায্য করার জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে যাদের হাতে এই ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া হয় তারা তো এই ত্রাণের অপেক্ষায় বছরের পর বছর বসে থাকে। কখন আসবে ত্রাণ আর কখন তা নিয়ে নিজের পকেট ভারী করবে এটা দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকে তারা। ত্রাণ চুরির জন্য অনেক জনপ্রতিনিধি তাদের পদ পর্যন্ত হারিয়েছে।
বিভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তরসমূহ ওয়েবসাইট বানানোর জন্য, এপ বানানোর জন্য কিংবা ভিডিও বানানোর জন্য যা বিল দেখিয়েছে তা আসলেই মর্মান্তিক। ঢাকা মেডিকেল কলেজের করোনা ইউনিটের খাবার খরচ দেখে আৎকে উঠেছে পুরো দেশ। মানুষ এতটা মর্মান্তিক কীভাবে হতে পারে!
আর বর্তমানে চলছে করোনার রিপোর্ট জালিয়াতী নিয়ে। রিজেন্ট হাসপাতাল কিংবা জিকেজি হাসপাতাল শুরু নয়, খোঁজ নিলে এমন৷ আরো অনেক প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া যাবে। এই অপরাধীদের সংখ্যা আমাদের দেশে কম নয়।
করোনার জন্য থেমে নেই ধর্ষণ, থেমে নেই পারিবারিক নির্যাতন, থেমে নেই হত্যা-খুন কিছুই। যারা অপরাধী তারা আজীবনই অপরাধী। এদের কোনো নির্দিষ্ট সময়কাল নেই। এরা যখন যেমন তখনই একই রকম। নিজেদের হিসাব এরা খুব সুন্দর করে বোঝে। তবে মানুষের এই বিপদের সময় মানুষের মৌলিক অধিকার নিয়ে যারা অনিয়ম করে তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন। একজনকে অন্তত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়াই উচিত। কারণ বিচারহীনতা কিন্তু অপরাধ বাড়ায়। তাই এই সমস্ত অপরাধীরা যেন পার না পেয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এদেরকে ধরার জন্য সচেষ্ট থাকতে হবে আমাদের সবাইকে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড