আবু হানিফ
গত ফেব্রুয়ারি মাসেই অসামাজিক নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে যুব মহিলা লীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে যুবলীগ এবং কৃষকলীগের বেশ কয়েকজন নেতা গ্রেফতার হোন।
সেখানে দেখা যায় সাংবাদিকের নাম এসেছে, পুলিশের নাম এসেছে, গোয়েন্দাদের নাম এসেছে। প্রশ্ন, কার নাম আসেনি? নেতার নাম আসছে। যাদের নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিলেই এই অবস্থার আর পুনরাবৃত্তি হবে না।
যাদের ধরা হয়েছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সবার তালিকা করা হোক। যারা পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন, যারা অর্থায়ন করেছেন, যারা সুবিধা নিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক, অচিরেই। কিন্ত কারও বিরুদ্ধেই তেমন ব্যবস্থা নিতে পারেনি সরকার।
বর্তমান সময়ে আলোচিত নাম হলো রিজেন্ট হাসপাতালের পরিচালক সাহেদ এবং জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা। এরা করোনা মহামারির মাঝেও মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করেছে। ভুয়া টেস্টের নামে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। মানুষের জীবনকে ফেলেছে হুমকির মুখে।
প্রশ্ন উঠেছে- কাদের পৃষ্ঠপোষকতায় কিংবা ছত্রছায়ায় তারা এই প্রতারণা করেছে। অভিযোগ রয়েছে, সরকারের অনেক প্রভাবশালী লোকের সাথে তাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। তাদের কে ব্যবহার করে তারা এসব অপকর্ম করে বেড়াতো।
এদিকে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে রিজেন্ট হাসপাতালের পরিচালক সাহেদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে। ছবি থাকতেই পারে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে সাহেদ এসব ছবিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতো।
কিন্তু এসব ঘটনার পিছনে গডফাদার কিংবা প্রভাবশালী লোকের সম্পর্ক রয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সেই সব লোকের নাম সামনে আসেনি, অতীতেও যেমন আসেনি। তারা সব সময় আড়ালেই থেকে যায়। এখন প্রশ্ন হলো- তারা কী সরকারের ঘনিষ্ঠ লোক? নাকি সরকারের চাইতেও শক্তিশালী? যার কারণে তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় সব সময়।
মানুষ জানতে চায় এসব প্রভাবশালী কারা? কেনো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না সরকার? এসব বিষয় সামনে আসলে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা শোনা গেলেও বাস্তবে তা দেখা যায় না।
তাহলে কী সরকারের আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে নাকি সরকার তাদের আইনের আওতায় আনতে চায় না? করোনা ভুয়া রিপোর্ট নিয়ে বিপাকে পড়েছে অনেক প্রবাসী। যার ফলে ইতালিতে বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশিদের প্রবেশ। বর্হিবিশ্বে ইমেজ সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলছে ডিজির অনুরোধে রিজেন্টের চুক্তির অনুষ্ঠানে গিয়েছে। আর ডিজি বলছেন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই চুক্তি। এখন পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে নিজেরা। কারণ দায় নিতে চাচ্ছে না কেউই।
অথচ ডা. সাবরিনা কিংবা সাহেদকে আটকের বিষয়ে অনেক বিলম্ব করতে দেখা গেছে। মানুষের সমালোচনার মুখে অনেকটা বাধ্য হয়েই আটক করে তাদের। তবে তাদের সঠিক বিচার হবে কী না তা নিয়েও জনমনে রয়েছে সংশয়। জেকেজি এবং রিজেন্ট হাসপাতালের এই অনিয়মের বিষয়ে নাকি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানতেন, তাহলে অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কেনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না- এটা মানুষের প্রশ্ন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড