• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সাংবাদিক পেটানো খুবই সহজ কাজ!

  আবু হানিফ

০৪ জুলাই ২০২০, ১৫:৫৬
সাংবাদিক পেটানোর দৃশ্য
সাংবাদিক পেটানোর দৃশ্য (ইনসেটে লেখক)

গণমাধ্যম হলো সমাজের দর্পণ। সমাজের প্রকৃত চিত্র উঠে আসে গণমাধ্যমে, যা আমরা সহজেই জানতে পারি। দেশের যেকোনো পরিস্থিতির খবর সাংবাদিকরা সংগ্রহ করে মানুষ কে জানানোর জন্য।

সঠিক তথ্য সংগ্রহ জানা সকলের অধিকার। আর গণমাধ্যম কর্মীরা সে তথ্যই সংগ্রহ করেন।তবে এই তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় হামলা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয় বিভিন্ন সময়।

সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২২ বছরে বাংলাদেশে ৩৫ জন সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

শুধু এ বছরে গত চার মাসে ৮৫ সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

নানা নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশের সাংবাদিকরা৷ প্রশাসন ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন৷ আরও আছে মামলার ভয়৷ সবসময় পাশে থাকে না প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনগুলো৷

পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, নির্যাতন ও হয়রানির ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে সাংবাদিক নির্যাতনের এসব ঘটনা ঘটছে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাকের ডগায়। সাংবাদিকরা যে শুধু সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ঘটনাস্থলে প্রকাশ্যে এমন হামলার শিকার হচ্ছেন তা নয়; দেশের বিভিন্ন স্থানে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সাংবাদিকদের ওপর চোরাগোপ্তা হামলা চালানোর বহু ঘটনা ঘটেছে।

ঢাকাসহ সারা দেশে বিগত বছরগুলোতে এ ধরনের নানা হামলায় বহু সাংবাদিক নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক। আরও উদ্বেগজনক হলো সাংবাদিকদের ওপর হামলা-নির্যাতনের বেশিরভাগ ঘটনারই সুষ্ঠু বিচার হচ্ছে না। সাংবাদিক নির্যাতন ও সাংবাদিক হত্যার যথাযথ বিচার না হওয়া স্পষ্টতই অপরাধীদের দায়মুক্তি দিচ্ছে। ফলে সাংবাদিক নির্যাতন বাড়ছে।

শুক্রবার (০৩ জুলাই) করোনা পরীক্ষার নমুনা দিতে লাইনে দাঁড়ানো রোগীকে মারধরের ছবি তুলতে যাওয়ায় মুগদা জেনারেল হাসপাতালে দুই ফটো সাংবাদিকের ওপর হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হামলার শিকার হওয়া দুই ফটো সাংবাদিকেরা হলেন দেশ রূপান্তরের রুবেল রশীদ ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের জয়িতা রায়।

কিছু দিন আগে কুড়িগ্রামের ডিসির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক আরিফুল কে নির্যাতন করা হয় এবং তাকে পুলিশে দেয়া হয়।

ভোলায় ত্রাণ চুরির সংবাদ প্রকাশ করার কারণে ক্ষমতাসীন দলের নেতার নির্যাতনের শিকার হয় এক সাংবাদিক।

ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয় সময় টিভির সাংবাদিক। এর আগে জাতীয় নির্বাচনের সময় ঢাকার দোহারে হামলা করা হয় সাংবাদিকদের ওপর।

সিরাজগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল ছবি তোলার সময় গুলি খেয়ে মারা যান৷ কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন যে, তাঁকে ইচ্ছে করেই গুলি করা হয়েছিল, যদিও বিষয়টি পুরোপুরি প্রমাণিত হয়নি৷

এসব ঘটনার কোন বিচার না হওয়ার ফলে, সাংবাদিকদের ওপর এধরনের নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। এসব ঘটনা স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য অন্যতম বাধা। এসব সমস্যা সমাধানে রাষ্ট্র কে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে।

লেখক : যুগ্ম আহ্বায়ক, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।
চলমান আলোচিত ঘটনা বা দৃষ্টি আকর্ষণযোগ্য সমসাময়িক বিষয়ে আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড