আবু হানিফ
২০১৮ সালে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে গড়ে ওঠে কোটা সংস্কার আন্দোলন। শুরুতে তেমন সাড়া না পাওয়া গেলেও একটা সময় ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়। ফলে আন্দোলন ছড়িয়ে পরে সারাদেশে।
এক সময় সরকার বাধ্য হয়ে কোটা বাতিল ঘোষণা করে। যদিও আমাদের দাবি ছিল কোটা সংস্কার করা। এই আন্দোলনের সবচেয়ে বড় হামলা হয় বছরটির ৮ এপ্রিলে। এর পর অসংখ্য বার হামলা হয়েছে আন্দোলনের নেতাদের ওপর। নেতাদের বিরুদ্ধে প্রহসন মূলক মিথ্যা হয়েছে, জেল খাটতে হয়েছে।
২০১৮ সালের জুনে কোটা সংস্কার বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে একটা সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে। সেই সংবাদ সম্মেলনে আসা নুরুল হক নুরসহ অনেককেই নির্মম ভাবে পিটিয়ে আহত করা হয়। এর পর শুরু হয় অন্যরকম পরিবেশ। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তখন ভয়ে আন্দোলনে আসতো না এমনকি আন্দোলন সংক্রান্ত পোস্টগুলোতে লাইক দিতেও ভয় পেতো।
আন্দোলনের সামনের সারির অধিকাংশ নেতা জেলে আটক থাকলেও বাইরে থাকা নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন ভয়-ভীতি উপেক্ষা করেও আন্দোলন চালিয়ে গেছেন। ফলে এক সময় এই আন্দোলনের আংশিক হলেও সাফল্য অর্জিত হয়। তবে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সবচেয়ে বড় সফলতা হলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার একটা জায়গা তৈরি করে দেওয়া। ভয়ের যে দুঃশাসন চলছে তার বিরুদ্ধে সব সময় প্রতিবাদে মাঠে ছিল বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি হওয়ায় সেই পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এক সময় আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সেই ফলাফল বাতিল করে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে পুণরায় পরীক্ষা নেওয়া হয়।
দীর্ঘ ২৮ বছর পর ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন হয়। সেখানে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদও সেই নির্বাচনে অংশ নেয়। কারচুপির সেই ডাকসু নির্বাচনে, যেখানে বিকালেই ফলাফল দেওয়া সম্ভব ছিল কিন্তু সেই ফলাফল ঘোষণা করা হয় শেষ রাতে অর্থ্যাৎ উপর থেকে সিগন্যাল পাওয়ার পর।
সেখানে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বেশ কয়েকজন জয়লাভ করলেও মাত্র দুটি পদ দেওয়া হয়েছে এমন কথাও শোনা যায়। এতে ভিপি হিসেবে নুরুল হক নুর এবং সমাজসেবা সম্পাদক হিসেবে আখতার হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
ডাকসুতে বাকি ২৩ পদে জয়ী ঘোষণা করা হয় ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে অংশগ্রহণ করা প্রার্থীদের। যার ফলে ডাকসুতে কাজ করতে গিয়েও বারবার বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে ভিপি নুরকে। তারপরও ভিপি চেষ্টা করে গেছেন তার সাধ্যমতো এবং অনেক কাজও তিনি করেছেন।
সবশেষ গত বছরের ২২ ডিসেম্বর ডাকসু ভবনে ভিপির রুমে হামলার শিকার হোন ভিপি নুরসহ তার সংগঠনের ২৪ জন নেতাকর্মী। সেখানে প্রথমে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতারা হামলা করলেও পরবর্তীতে ছাত্রলীগের নেতারাও তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। অথচ এসব হামলার কোনো তদন্ত বা বিচার কোনটাই আলোর মুখ দেখেনি।
এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাঠে ছিল বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। গত ২২ জুন তারিখে ডাকসুর মেয়াদ শেষ হওয়ায় অনেকেই ভিপির সমালোচনায় ব্যস্ত আবার অনেকেই বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সামালোচনাও করছেন। তারা বলছেন- ভিপি কিছুই করেনি। তেমনি বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদও নাকি তেমন কিছু করে নাই।
আমার প্রশ্ন- যারা সমালোচনা করছেন তারা কী করেছেন? তাদের ভূমিকাই বা কী ছিল?
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড