মোশারফ হোসাইন
যতোই দিন যাচ্ছে দেশের করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) ততোই অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে জীবন যেখানে অনিশ্চিত তখন জীবনের সাথে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাও। গত ১৬ মার্চ কোচিং সেন্টারসহ সকল ধরণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে পাঠদানের ব্যবস্থা করলেও এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছেনা; এমনটি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মুহা. আখতারুজ্জামান।
সদ্য এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, পরীক্ষার ফল পাওয়া নিয়ে অনেক দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম, এক দুঃশ্চিন্তার অবসান হলো ঠিকি তবে নতুন দুঃশ্চিন্তা জেকে বসেছে আবার, এই ভয়ানক পরিস্থিতি কবে শেষ হবে; কবে কলেজে ভর্তি হবো আর কবে ক্লাস করতে যাবো।
তবে বন্ধ হয়ে যাওয়া এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে বেশী দুঃশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছে বলে জানান পরীক্ষার্থীরা। এইচএসসি পরীক্ষার্থী তাসমিয়া আক্তার বলেন, পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে ঠিকি তবে আগের মতো নয়, মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে পারছিনা, পরীক্ষা আদৌ কি হবে; আবার মনেহয় অনেকের মতো এই দুর্যোগের মধ্যে আমিও হারিয়ে যাবো নাতো।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সাথে হলে তারা বলেন, অনিশ্চিত জীবনের পাশাপাশি এমন এক পরিস্থিতির মুখে দাড়িয়ে আছি, সৃষ্টিকর্তার কৃপায় যদি বেচেঁ যায়- পড়াশোনা শেষ হবে কবে আর চাকুরীই বা পাবো কবে, এছাড়াও এই দূর্যোগ আদৌ র্নিমূল হবে কিনা এনিয়েও সংশয় আছে; আগামী দু’চার বছরের মধ্যে পড়াশোনা শেষ করে হয়তো ভালো একটা জায়গাতে পৌছাঁতে পারতাম জীবনের ঝুঁকির সাথে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে দাড়িয়ে আছি এখন।
রাজধানীর ‘বাংলাদেশ অক্সফোর্ড স্কুল’ এর শিক্ষিকা ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী- নুসরাত জাহান মিম বলেন, অনলাইনে ক্লাসের ফলে অনেক শিক্ষার্থীরা বিপদে পরবে, কারণ সবার অনলাইনে ক্লাস করার মতো মানসিকতা, ডিভাইস, ইন্টারনেট নাও থাকতে পারে, শহরের বেশীরভাগ শিক্ষার্থীরা থাকেন ঢাকার বাইরে, গ্রামে যারা থাকে ক্লাস করার মতো পর্যাপ্ত নেটওয়ার্ক নাও পেতে পারে তারা। তিনি আরও বলেন এই সময়টায় অভিভাবকদের বেশী সচেতন হতে হবে, স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের গেইমস এর প্রতি আগ্রহটা প্রবল, তাই নির্দিষ্ট একটা সময় বেধে অভিভাবকরা যেন তাদের পড়ান এই পরামর্শ তার।
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অতিথি শিক্ষক লাবনী আক্তার বলেন, সবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে হয়ত রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের উচিৎ শিক্ষকদের সহযোগিতা করা, এই গৃহবন্দী জীবনে তারা ঘরে থেকে পাঠগ্রহণের জন্য নিজেদের নির্ধারিত সিলেবাস শেষ করতে পারে, এতে বরং তাদেরই লাভ বেশি হবে। আসলে সরকারের সিদ্ধান্তের উপর আমরা যেতে পারি না। সরকার যা করবে বা করছে সবার ভালর জন্যই হয়তো করছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘরে থেকেই পড়াটা সম্পূর্ণ করা উচিত, এতে করে করোনার ভয়নক থাবা থেকেও বেঁচে যাবে প্রাণ, বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী ঘরে থাকাটাই সবচেয়ে নিরাপদ। তবে আজীবন তো আর ঘরে বসে কাটানো সম্ভব নয়, তাই যতদূর সম্ভব আমাদের সচেতন হয়ে থাকা উচিত, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাহিরে বের হওয়া উচিৎ।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড