রহমান মৃথা
সাত সকালে ঘুম থেকে উঠে একটু টিভি দেখতে বসেছি। প্রথমেই যে জিনিসটি চোখে পড়ল তা হলো নেতাদের মিথ্যা বকবকানি। ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়, সুইডেনের। সুইডিশ টেলিভিশনে কভিড-১৯ এর ওপর চলছে আলোচনা।
আজ সুইডেনের তৃতীয় বৃহত্তম মোডারেট পার্টির নেতাকে খবরে হাজির করা হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে। বিষয় কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারের কাজকর্মের ওপর বিরোধী দলের মতামত কী এবং কেমন চলছে সুইডেন।
সাংবাদিক দক্ষতার সঙ্গে একের পর এক প্রশ্ন করে চলেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় নেতাদের তেমন কোন গ্রহণযোগ্য উত্তর নেই। স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশের পরিকাঠামো অনুযায়ী সমস্ত দায়ভার অন্যের ওপর চাপিয়ে তার নিজের দায়িত্বকে এড়িয়ে গেলেন কোভিড-১৯ বিষয়ক সব ব্যর্থতা।
অন্যদিকে বিরোধী দলের নেতাকে প্রশ্ন করে তার কাছ থেকে কোন সমাধান বা যুক্তিযুক্ত উপদেশ নেই। অথচ খবরের এক তৃতীয়াংশ সময় চলে গেল তাদের পেছনে। একটি জিনিস শুধু দেখলাম সাংবাদিকদের বাকস্বাধীনতা এখনও ক্ষুণ্ণ হয়নি।
তবে দুই নেতার পারফরমেন্স দেখে মনে পড়ে গেল খালি কলস বাজে বেশি প্রবাদ বাক্যটি। সুইডেনের নেতারা দুর্নীতি করে না, কারণ তেমন কোন সুযোগ নেই। তবে নেতৃত্ব দিতে না পারলেও তাদের নেতা হবার বেশ শখ দেখা যায়।
আরও পড়ুন : স্বার্থ ছাড়া ভালোবাসা নেই
তা নাহলে সারাজীবন দলের হয়ে কাজ করবে কেন? তাছাড়া পার্লামেন্টের মেম্বার হয়ে ভালো বেতনের সঙ্গে সুযোগ সুবিধাগুলো পেয়ে থাকেন। এসব নেতাদের বেশির ভাগের যে যোগ্যতা তাতে তারা সুইডেনে নিম্নমানের কাজ করার যোগ্য।
তবে সুইডেন গণতন্ত্রের দেশ, সবার সব ধরণের সুযোগ রয়েছে। যদি কেউ রাজনীতি করতে চায়, করতে পারে। ভালো সিস্টেম, ধনী দেশ, কম লোকের বাস, জনগণ সৎ এবং কর্মঠ যে কারণে যারা রাজনীতি করেন তাদের তেমন কঠিন সময় পার করতে হয় না।
এই যেমন বর্তমানে অনেক বয়স্ক লোক মারা যাচ্ছে কিন্তু জনগণের থেকে তেমন কোন প্রতিবাদ নেই, দিব্বি চলছে। তবে এবারের কোভিড-১৯ এ রাজনীতিবিদদের নিষ্ক্রিয়তা জনগণ ভালো দৃষ্টিতে দেখছে না।
যেমন একটি উদাহরণ দেই। মার্চ মাসে সরকার বলেছে কমপক্ষে এক লক্ষ নাগরিককে প্রতি সপ্তাহে কোভিড-১৯ টেস্ট করা হবে। আজ মে মাসের ২৭ তারিখ অথচ মাত্র আঠাশ হাজার মানুষের টেস্ট করা হয়েছে।
এত বড় একটি ডেভিয়েশন স্বত্বেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী দিব্বি তার পজিশন ধরে রেখেছেন। বিরোধী দলের নেতার কোন অল্টারনেটিভ সাজেশন নেই। মুচকি হাসি আর ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কথা শুনছে।
দেখে মনটা বেশ খারাপ হয়েছে, ভাবছি বাংলাদেশ সতেরো কোটি মানুষ, তাদের হাজারও সমস্যা, তেল আনতে নুন শেষ, বন্যা, মহামারী, দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার স্বত্বেও ম্যানেজ হয়ে যাচ্ছে।
তবে এভাবে ম্যানেজ করে বেঁচে থাকার জন্যই কি আমাদের জন্ম? আরেকটু ভালো থাকার জন্য কিছুই কি করার নেই? এটা ভাবতে ভাবতেই আজকের দিনটি শুরু হলো, জানি না দিনটির শেষ হবে কীভাবে!
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড