• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

চৈনিক ভাইরাস ও ব্যবসাতন্ত্র!

  মাহবুব নাহিদ

২৮ এপ্রিল ২০২০, ১৮:৩২
মাহবুব নাহিদ
মাহবুব নাহিদ

করোনার কারণে পুরো পৃথিবী স্থবির হয়ে গেছে। পুরো বিশ্ব লকডাউন হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে অর্থনীতির চাকা। সামনে আসছে ঈদের সময়। এই সময়ে সকলের ব্যবসা রমরমা হবার কথা কিন্তু তা না হয়ে সবাই থাকছে ঘরে বসে। ব্যবসায়িকভাবে উন্নত দেশগুলো আফসোস করছে তাদের অর্থনৈতিক ক্ষতির জন্য। আর যারা এমনিতেই গরীব তারা হাহাকার করছে খাবার কিংবা অন্যান্য সুযোগ সুবিধার জন্য।

এর আগেও দুইটি ভাইরাসে উৎপত্তি চীন থেকে হয়েছে। এই করোনা নিয়ে তৃতীয়বারের মতো চীন থেকে কোনো ভাইরাসের উৎপত্তি। অর্থাৎ খুবই পরিষ্কার যে চীনে কোনো একটা বিষয় আছে। এটা হতে পারে চীন নিজেই ভাইরাস তৈরি করছে আর হতে পারে চীনের খাদ্যাভাসের কারণে এমন সব ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। খুবই সুক্ষ্ণভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় বিভিন্ন পশুদের শরীর থেকেই এসেছে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ভাইরাস। ইঁদুর, বাদুড়, বিড়াল, মুরগী, গরু কিছুই বাকি নেই। সবকিছুই এখন পর্যন্ত কোনো বা কোনো ভাইরাসের উৎপত্তি ঘটিয়েছে। এখন বাদুড় খাওয়া যদি দোষের হয় তাহলে মুরগী খাওয়া কি দোষের না? আমরা তো গরু, মুরগী সবই খায়। কথা হচ্ছে চীনের বিতর্কিত খাদ্যাভ্যাস যদি বলি তাহলে আমাদের সবারই এক অবস্থা। কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে সবাইকে।

এখন কথা হচ্ছে হালাল, হারামের একটা বড় বিষয় থাকে। সাধারণত ক্ষতিকর পশুদের খাওয়া হারাম করা হয়েছে। কিন্তু চীনারা সেসব মানবে না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে বাদুড়ের মধ্যে ওরা এমন কি পায় যা খাওয়ার জন্য পাগল হয়ে যায়? যেহেতু উহানের মাছের বাজার থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে চীনের দাবী সেহেতু আমাদের খাদ্যাভ্যাসকে দায়ী করা দোষের কিছুই না। কিন্তু দাবী তো আবার ভিন্নও আছে। অনেকের তো দাবী চীন নিজেই ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তো একদম আটসাট বেঁধে নেমেছে যে চীনকে সায়েস্তা করেই ছাড়বে। তাদের দাবী চীন নিজেই ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। এমনকি উহানের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেছে এফবিআইয়ের সদস্যরা। গ্রেপ্তার করলেই যদিও প্রমাণ হয়ে যায় না যে চীন দোষী। কিন্তু গন্ধ কিন্তু ঠিকই থেকে যায়। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বিশ্ব অর্থনৈতিক বাজারে একে অপরের বিরাট প্রতিদন্দ্বী। সেক্ষেত্রে উভয়েই দাবী করতে পারে যে তাদের ক্ষতি করার জন্য অপরপক্ষ এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। আর বর্তমানে ক্ষতির মাত্রা যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের বেশি, তাই পাল্লাটা চীনের দিকেই ভারী হয়। আর চীনে ভাইরাস একদম বিলীন হয়ে যাওয়ার খবরটাও সবাইকে অবাক করে দেওয়ার মতো। আর চীনের বড় বড় শহরে না ছড়ানোর ব্যাপারটাও মনে সন্দেহ জাগানোর মতোই খবর। আর মৃতের সংখ্যা নিয়ে চীনের লুকোচুরি খেলা তো একদম সবার নাকে পানি দেওয়ায় মতো অবস্থা। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবী করেন, চীন মৃতের সংখ্যা লুকিয়েছে। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও মৃতের সংখ্যা খতিয়ে দেখতে চায়। যদিও তাদের দাবী করোনা ল্যাবরেটরিতে সৃষ্ট কোনো ভাইরাস নয়। এটা তারা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানও করে ফেলেছে যে এটা প্রাকৃতিক একটি ভাইরাস। তাহলে চীন কীভাবে ভাইরাসটাকে ছড়াল? আর ছড়িয়ে চীনের লাভ হবে কী? বিশ্ব অর্থনীতির গুরু হচ্ছে চীন। চীনের পণ্য ছাড়া পুরো পৃথিবী অচল। তাই চীন নিজেদের ব্যবসাকে পোক্ত করার জন্য আমেরিকাকে পর্যদুস্ত করতে পারে। কিন্তু তাদের নিজেদেরও তো ৬ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে। নিজেরাই কেন নিজেদের ক্ষতি ডেকে আনবে? আর এখন তো সব ব্যবসা বন্ধও হয়ে আছে। করোনা না থাকলে এতদিনে অনেক ব্যবসাই তারা করতে পারতো। কিন্তু সেসবের কিছুই হচ্ছে না। খাল কেটে কেন তারা কুমির আনতে যাবে?

চীন ১৯৮০ সাল থেকে ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করছে এমন তথ্য অনেকের জানা। আমেরিকা নিউক্লিয়ার উইপন আর চীন বায়ো উইপন। এরা দুজন যদি এভাবে করে পিছিয়ে পড়ে তাহলে ফাঁকা মাঠে গোল দিবে ভারত। এটা হচ্ছে বিশাল বড় ব্যবসাতন্ত্র।

অবশ্য ব্যবসায়িক খেলাটা শুরু হবে করোনা চলে যাওয়ার পর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মন্দায় পড়ে যাবে। তখন দেখা যাবে সকলের ত্রাতা হয়ে উঠেছে চীন। কাউকে সাহায্য দিচ্ছে আবার ব্যবসাও করে নিচ্ছে। আর আমেরিকা যেভাবে পরাস্ত হয়েছে তাতে চীনের হয়ে যাবে একক আধিপত্য। চীন তো এখনই অনেক দেশকে সাহায্য সহযোগিতা করছে। অনেক জায়গায় ব্যবসাও শুরু করে দিয়েছে। পিপিই, টেস্টিং কিট, মাস্ক বানিয়ে সারাবিশ্বে সরবরাহ করছে তারা। যদি তারা দানও করে থাকে তাহলে তার মধ্যেও থাকতে পারে ব্যবসার গন্ধ। উপরে মহামারী আর ভিতরে টাকার ঝড়ঝড়ি। বিশ্ব একটা অর্থনৈতিক যুদ্ধের সামনে বসে আছে। করোনা যখন চলে যাবে তখন সবাই হাহাকার শুরু করবে। এখন সব কারখানা বন্ধ হয়ে আছে। অনেকেই কাঁচামাল পাচ্ছে না। করোনা চলে গেলেই এসব জিনিসের প্রয়োজন পড়বে তখন সবাই খুঁজে বেড়াবে কার কাছে কী আছে। খুব স্বভাবতই চালকের আসনে বসবে চীন। কারণ অন্যরা সবাই তো নিজেরাই নিজেদের সামলাতে ব্যস্ত থাকবে। বিশ্বের তাবড়-তাবড় দেশগুলো যারা আছে যাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভালো তারা হাহাকার করছে তাহলে চীন কীভাবে নির্মুল করল? নাকি চীন গোপনে ঔষধ বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে? যদিও এখন পর্যন্ত তেমন কোনো খবর চীন থেকে আসেনি। সুপার ভ্যাকসিন আবিষ্কারের খবর দিয়েছে যুক্তরাজ্য। কার্যকর ঔষধের খবর দিয়েছে জাপান। তাহলে চীন কোথায় ফায়দা লুটবে? কিসের মাধ্যমে তারা ব্যবসাটা করবে? নাকি ভ্যাকসিন কিংবা ঔষধের কথা তারা গোপন করে রেখেছে?

আসলে চীন থেকে ভাইরাস এসেছে মানেই যে চীন ইচ্ছাকৃতভাবে ভাইরাস ছড়িয়েছে তা নয়। তবে কিছু কিছু কারণে সন্দেহের দিকে তীর আসছে তাদের দিকে। এসব নিয়ে এখন কারোই মাথা ঘামানোর সময় নেই। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২ লাখ। এখন আগে খুঁজতে হবে এর প্রতিকার কিংবা প্রতিরোধ। তবে এই লড়াইয়ে জিতে গেলে অবশ্যই এটাও খোঁজ করতে হবে যে এটা কী প্রাকৃতিক ভাইরাস নাকি কোনো ব্যবসাতন্ত্রের ফলাফল বা হাতিয়ার!

চলমান আলোচিত ঘটনা বা দৃষ্টি আকর্ষণযোগ্য সমসাময়িক বিষয়ে আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড