• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

এখনও বিশ্বাস করছি, আমাদের তেমন কিছুই হবে না

  আদিত্য শাহীন

০৭ এপ্রিল ২০২০, ১৮:৪৫
আদিত্য শাহীন
আদিত্য শাহীন

আমাদের তেমন কিছুই হবে না। পৃথিবীর অন্যদেশ যেভাবে ভাববে আমাদের সেভাবে ভাবলে চলবে না। আমেরিকার উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। ইউরোপের ভেঙে পড়ার বিষয়টিও অমূলক নয়। বহু অপচয়, বহু অনাচার আর ধ্বংসের পেছনে তাদের নেতৃত্ব রয়েছে। একইভাবে রয়েছে অদ্ভুত বিলাসিতায় ভোগবাদের ষোলকলা পূরণ করে পৃথিবীকে চূড়ান্তভাবে উসকে দেয়ার ভূমিকা। বিশ্বায়নকে স্বাগত জানাতে পৃথিবীর অন্যদেশগুলোও যেভাবে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে জীবন চালিয়েছে, এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে তাদের বেগ পেতে হবে। কিন্তু নগর সভ্যতার বিকশিত অংশটুকু বাদ দিলে বাঙালি ভীষণ সহনক্ষমতা সম্পন্ন গ্রামপ্রধান কৃষিনির্ভর এক জাতি। আমাদের জীবনের নিত্যচাহিদা পৃথিবীর অন্য জাতিগোষ্ঠির তুলনায় অনেক কম। আমরা বিপদে ভেঙে পড়ি না। আমরা ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পারি। ঊনপঞ্চাশ বছর আগে এই জাতি জীবন বাজি রেখেছিল। প্রতিটি সন্তান মাতৃভূমির অধিকার আদায়ের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত হয়েছিল। অকাতরে জীবনও দিয়েছিল। নয়মাস টানা জনযুদ্ধ, আত্মাহুতি আর অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার করার পর যে দেশটি তারা হাতে পেয়েছিল, সেই স্বাধীন ভূমিতে দাঁড়িয়ে উল্লাস উচ্ছ্বাসে সব হারানোর ব্যথা ভুলে গিয়ে দেশটাকে বুকে আগলে আবার উঠে দাঁড়িয়েছিল সবাই। সেটি ছিল অনেক বড় এক সংগ্রামী অধ্যায়। এ ছাড়াও স্বাধীনতার আগে পরে বহু প্রাকৃতিক ও মানুষসৃষ্ট যুদ্ধে আমাদের অংশ নিতে হয়েছে। একের পর এক যুদ্ধ জয় করাই আমাদের ঐতিহ্য। শত বিপদে টিকে থাকাই আমাদের প্রধান বৈশিষ্ট্য।

আমার মায়ের বয়স সত্তরের কাছাকাছি। পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা নিয়ে বয়স্ক মানুষ বেশি উদ্বিগ্ন। আমার মা অতি সাধারণ এক মানুষ হলেও তিনি মোটেই উদ্বিগ্ন নন বরং তার কাছে সময়টির ব্যতিক্রম ব্যঞ্জনা আছে। তার বিস্ময়ের জায়গাটি হচ্ছে অন্যরা কেন আমাদের ওপর আতঙ্ক চাপিয়ে দেবে! পৃথিবীতে সবদেশ আলাদা। প্রত্যেক জাতির জীবন-যাপন ভিন্ন। যার কর্মফল সে পাবে। তাহলে অন্যরা কেন আমাদের ওপর আতঙ্ক চাপিয়ে দেয়। জানি আমার মা বিশ্বায়ন বোঝেন না। বিশ্বায়ন মানেনও না। তার সহজ চিন্তা, এই বিশাল পৃথিবীতে কত কারণেই তো কত মানুষ প্রতি সেকেন্ডে মরছে। তাহলে এই করোনা ভাইরাস নিয়ে কেন এত ভয় ছড়ানোর প্রতিযোগিতা! বিন্দুমাত্র দ্বিধা সংশয় ছাড়াই মা এভাবে ভাবছেন। বিষয়টি আমাকে সাহসী করেছে। কিন্তু সারা পৃথিবীতে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার প্রাত্যহিক চিত্র, সাবধানতা, কোয়ারেন্টাইন, প্রবাসীদের ঝাঁকবেধে দেশে ফেরা, লক ডাউনের পর লাখো মানুষের ঢল নামিয়ে বাড়ি ফেরার দঙ্গল. আবার মধ্যবর্তি ছুটি শেষে কর্মকেন্দ্রে ঢল নামিয়ে ফেরা দেখে ভয়ের একেকটা ঢেউ খেলে যাচ্ছে। মানুষ এখন ঘরে ঘরে করোনাবন্দী। রাস্তায় শ্মশানের নিস্তব্ধতা। টিভিতে টিভিতে ব্রেকিং। মানুষের গায়ে সুইঁ ফুটিয়ে দেয়ার জন্য নানা শব্দ ও বাক্যের ব্যবহার। অসংখ্যবার করোনা, কোয়ারেন্টাইন, পিপিই, আইসোলেশন, লকডাউন শুনতে শুনতে মানুষ সবকিছু থেকে ইস্তফা দিয়েছে। শক্তি খর্ব করে এসব তথ্যের মধ্যে ঢুকে কল্পনার জাল বিস্তার করে চলেছে। মহাদুর্যোগের সময় এমন হয়। যুদ্ধের সময় এমন হয়। এমন দুর্যোগ, এমন যুদ্ধ দেখিনি বলে, এখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী মানুষের জীবনচিন্তা ও ভাবনার জায়গাগুলো প্রথমবারের মতো দেখছি। তারপরও মনে হচ্ছে, আমাদের তেমন কিছু হবে না। আমরা এ যাত্রাতেও পার পেয়ে যাবো। প্রভু পার করো আমাদের!

আমার এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলাম, দেশি বিদেশি করোনাে তথ্যের দঙ্গলের মধ্যে ঢুকে আছেন। বাসায় বসে অফিস করছেন। কথায় কথায় বললেন, গোটা পৃথিবীই আক্রান্ত। চীনের পর ইতালি, স্পেন হয়ে করোনার তীব্র ভয়াবহতা এখন আমেরিকায়। সেখানে বিশ্রি অবস্থা। মৃত্যুর হার সাংঘাতিক হারে বাড়ছে। ট্রাম্প বলেছেন, লাখো মানুষ মরলে, সেটিও আমাদের আয়ত্বের মধ্যেই ধরা হবে। তার চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা আড়াই লাখ। এখন পরিস্থিতি যা বলছে, তাতে আড়াই লাখেও হয়তো শেষ নামবে না। আমেরিকার মতো দেশে বহু সংকট ফুঁসে উঠেছে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে যেসব নেই নেই শোনা যায়, আমেরিকায় তার চেয়ে জোরালো শব্দে শোনা যাচ্ছে, হসপিটালে জায়গা নেই, বেড নেই, করোনা পরীক্ষার কীট নেই, পর্যাপ্ত ডাক্তার নেই, অনেক কিছুই নেই। এমনকি মানুষের সচেতনতাও নেই। এই জায়গাটিতে এসেই পৃথিবী এক হয়ে যাচ্ছে। ধনী গরীব অহংকারি, নিরহংকারি সব এক।

বন্ধুটি বললেন, আমাদের যত মানুষ গ্রামে চলে গেলেন, আবার গ্রাম থেকে লাখো মানুষ ভীড় জমিয়ে ঢাকায় ফিরে এলেন। এই চিত্রগুলো বলে দেয়, ইতালি, স্পেন ও আমেরিকা যে ভুল করেছিল, আমরা করছি তার চেয়ে অনেক বেশি। আমাদের এখানে সাংগঠনিক ব্যর্থতা রয়েছে, যথার্থ সিদ্ধান্ত গ্রহণের মতো দৃঢ়তা নেই। আমাদের এখানে করোনা সংক্রমণের সবচেয়ে অনুকুল পরিস্থিতি। ব্যাপক হারে আক্রান্ত হতে শুরু করলে আর কূল-কিনারা করা যাবে না। আমি আমার জায়গাতেই থাকলাম। বললাম, আমাদের তেমন কিছু হবে না। আমি আমাদের উচ্চ তাপমাত্রা, রৌদ্রালোক, গ্রামের স্বাস্থ্যকর বাতাসের অপরিসীম শক্তি বিশ্বাস করি। বললাম, আমাদের দেশে করোনা বেশি ছড়াবে না। বন্ধুটি বললো, ভারত তো আমাদেরই মতো। ওদের অবস্থাও খারাপের দিকে যাচ্ছে। আমি বললাম, ভারত আমাদের মতো নয়। ওরা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতায় আমাদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে। করোনার শুরুতেই ওদের ওখানে গোমুত্র উৎসব শুরু হয়েছে। এখনও শেষ হয়নি। গোবরের স্তুপের নীচে মানুষকে শুইয়ে শোধনযজ্ঞও দেখেছি। এখনও রাজ্যে রাজ্যে নানা কায়কারবার চলছে। ওখানে কুসংস্কারের দাপট অনেক বেশি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার আধুনিক কৌশলগুলো অনুসরণের চেষ্টা করছেন। বিশাল ভারতে বহুমত প্রচলিত। এই অভিঘাত মোকাবিলায় গোটা ভারতের পক্ষে একটি সিদ্ধান্তে একাট্টা হওয়াটা কঠিন। তবে লকডাউন নামের ‘করোনাবন্দী’ জনজীবন বাস্তবায়নে সেখানেও তৎপরতা চলছে। তুমুল মারপিটও রয়েছে রাজ্যে রাজ্যে। ভারত ‍জুড়ে রোববার রাত নয়টায় নয় মিনিটের দ্বিপাবলী করা হয়েছে। সেটি করোনা মোকাবিলায় একাত্ম হওয়ার পক্ষে কাজ করবে, আশা সরকারের। তারপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হচ্ছে না।

আমাদের এখানকার চিত্রটি একটু ভিন্ন। আমাদের এখানে প্রশাসনিক তৎপরতার ভেতর মানবিকতাচ্যুতির দুয়েকটি উদাহরণ দেখা গেছে। একজন এসি ল্যান্ড দাপ্তরিক সাজা পেয়েছেন দরিদ্র সাধারণ মানুষ নিয়ে মজা করার অপরাধে। বিজিএমইএর বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্তের কারণে করোনা আতঙ্ক বড় করে ধাক্কা দিয়েছে মানুষকে। কিন্তু আমাদের সাফল্যের জায়গাটি হচ্ছে, অল্প সময়ে সিংহভাগ মানুষকে ঘরে তোলার মতো কঠিন উদ্যোগ। আমাদের মতো হুজুগ ও গুজবপূর্ণ দেশে আঠারো কোটি মানুষের কমপক্ষে পনের ষোলো কোটিকে এত অল্প সময়ে ঘরে ঢুকিয়ে দেয়া সহজতর কোনো ব্যাপার নয়। মানুষের গোঁড়া আবেগের জায়গা ছিল মসজিদ। জামাতে নামাজ পড়ার চিরাচরিত ধর্মীয় অভ্যস্থতা থেকে বেরিয়ে আসা্র বিপক্ষে ছিলেন অগণিত মানুষ। সেসব মানুষও মসজিদে যাওয়া থেকে বিরত হয়ে গেলেন। এটিও একরকমের সাহসী দৃষ্টান্ত। মানুষ বোঝালে বোঝে। ঘরে নিজেকে বেঁধে আটকে থাকার মতো স্থির ছিল না মানুষ। এখন স্থির হয়েছে। রাজধানী নয় শুধু, জেলা উপজেলা ইউনিয়ন ও গ্রামে ঘরে থাকার ব্যাপারে মানুষ আন্তরিক ও উদ্যোগী। কিছু ব্যতিক্রম আছে। কিন্তু মানুষ আত্মবিশ্বাস নিয়েই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে চাইছে। মানুষ কৃচ্ছতা সাধন করছে। পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে ভেবে যথেচ্ছাচার ও অপচয় থেকে বিরত থাকছে। বাজারে কাঁচা পণ্যের দাম কমেছে, কিন্তু মানুষের মধ্যে তেমন হাহাকার নেই। ত্রাণ তৎপরতা শুরু হয়েছে। যাদের খুব অভাব, তার চেয়ে যারা ত্রাণ নেয়ার অভিযানে এগিয়ে থাকে, এখনও তাদের বেশিরভাগই মাঠে। এখনও সাধারণ মানুষ নিজের মনের জোর দিয়েই সবকিছু মোকাবিলা করতে চাইছে। মনের জোরেই বাঙালি বরাবর পার পেয়েছে, জয়ী হয়েছে। পৃথিবীর সব দেশ যেখানে মনোবল ভেঙে ফেলে বাংলাদেশের মানুষ সেখানে সর্বোচ্চ মনোবলে এগিয়ে যায়। দেশের বড় অংশের মানুষের স্বচ্ছলতা এসেছে। কিছু নীতিহীন মানুষ বাদে সাধারণ মানুষ এখনও প্রতিকুল ও অভাবী জীবন যাপনের অভ্যস্থতা ভুলে যায়নি।

আমাদের দেশের প্রত্যন্ত গ্রামগুলো এখনও প্রাকৃতিক প্রাচুর্য বিবেচনায় একেকটি আরোগ্যালয়। সেসব জায়গায় মানুষ দুর্বিসহ কোনো পরিস্থিতিতে পড়বে না। সাধারণ মানুষ এখনও বিজ্ঞানসম্মত, কর্পোরেট কিংবা সুর্নির্দিষ্ট নিয়মনীতি অনুসরণের তুলনায় চূড়ান্ত জায়গাটিতে নিজস্ব বিবেক-বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে চায়। যখন চারদিকে হতাশা তখন হৃদয় দিয়ে পুরনো ঐতিহ্যে ফিরে যায়। পুরনো মানুষের জীবনাচারের পরীক্ষিত ও ভালো নজিরগুলো অনুসরণ করতে চায়। এর ভেতর দিয়ে যাদুকরি কিছু পেয়ে যায়। এবার এমন সম্ভাবনার বিশ্বাসও রয়ে গেছে। আমরাও দেখি ডাক্তার হাসপাতাল ব্যর্থ হবার পরও অনেক মানুষ গ্রামের সাধারণ মানুষের অপ্রচলিত চিকিৎসায় বেঁচে ওঠেন। সুস্থ হয়ে যান। এমন সমাধানের পথও খুলে যেতে পারে।

বন্ধুটি বললেন, করোনায় আমরা না মরলেও খেতে না পেয়ে বহু মানুষ মরার বড় একটা আশঙ্কা আছে। আমি এখানেও কড়া দ্বিমত পোষণ করলাম। বললাম, বাঙালির উঠতি আধুনিকতা, উচ্চাভিলাস, পশ্চিমা দেশগুলোর অনুসরণ ইত্যাদি ছেঁটে ফেললে, যে নিখাদ ও খাঁটি অংশটি রয়েছে, সেখানে আছে পরমৎসহিষ্ণুতা, আছে অসামান্য উদারতা, নিজে না খেয়ে বিপদগ্রস্তকে রক্ষা করার মানসিকতা। বাঙালি সংস্কৃতিগতভাবেই দারিদ্রকে মেনে নিয়ে পথ চলতে অভ্যস্ত। এই দারিদ্র হতে পারে ক্ষুধার, হতে পারে টাকা পয়সার। বাঙালি তার চিন্তা-চেতনার বৈভব ও প্রাচুর্য্যের কাছে পৌঁছে গেলে কোনো অভিঘাতই তাকে কাবু করতে পারবে না। শুধু প্রয়োজন আমাদের চেতনার বাইরের যে আবরণটি গড়ে উঠেছে বিশ্বায়ণের ধাক্কায়, সেটির অপসারণ। সেখান থেকে মুক্তি লাভ। তাহলে দুয়েকবেলা না খেয়েও জীবন চলে যাবে।

আমার বন্ধুটি আমার সঙ্গে একমত হলেন না হয়তো। কিন্তু কথায় আর এগোলেন না। আমি এখনও বিশ্বাস করছি, আমাদের তেমন কিছুই হবে না। আমরা সাবধানী আর আত্মবিশ্বাসী থেকেই এই পরিস্থিতিতে টিকে গিয়ে পৃথিবীর সামনে নতুন এক দৃষ্টান্ত গড়বো। সত্যিই, মহাদুর্যোগে বাঙালিই পারে টিকে থাকতে।

লেখক: সিনিয়র নিউজ এডিটর, চ্যানেল আই।

চলমান আলোচিত ঘটনা বা দৃষ্টি আকর্ষণযোগ্য সমসাময়িক বিষয়ে আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড