সাইদুর রহমান
বর্তমান বিশ্বটাই একটা অ্যাটম বোমা। বিশ্বায়নের ফলে প্রযুক্তির অযৌক্তিক ব্যবহারে পরিবেশ আজ সংকটাপন্ন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর শিল্পায়নের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। শিল্পে অধিক পরিমাণে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ফলে পরিবেশের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। এই পরিবেশ যদি আমাদের অবহেলার কারণে বাসের অযোগ্য হয়। যেকোনো প্রযুক্তিনির্ভর বোমার মরণ ছোবলে সমস্ত প্রাণীকূল ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে, রক্তপাতহীন অর্থনেতিক যুদ্ধ করে কি লাভ হবে? প্রতিটি প্রাণীকুল বেঁচে থাকার জন্য, বাসযোগ্য পরিবেশের দাবি কোনো সৌখিন দাবি নয়।
বর্তমানে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো সামরিক অস্ত্রে শক্তিশালী হওয়ার একটা অদম্য প্রতিযোগিতায় মেতেছে। কেউ তৈরি করেছে পারমাণবিক বোমা, কেউ নিউক্লিয়ার বোমা, কেউ বা পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীকুল এক সাথে ধ্বংসের জন্য তৈরি করেছে জীবাণু অস্ত্র। পৃথিবীতে লাখ লাখ মানুষ অনাহারে মারা যাচ্ছে সেদিকে নজর নেই। অথচ জীবন বিনাশকারী বোমা তৈরিতে উন্নত রাষ্ট্রগুলোর আগ্রহের কোনো কমতি নেই।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। যার ফলে ক্ষতিকর জীবাণু অথবা ক্ষতিকর অতি বেগুনি রশ্মিগুলো বায়ুমণ্ডলে স্বাধীনভাবে বিচরণ করছে। বায়ুমণ্ডল পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতার কারণে অতি বেগুনি রশ্মিগুলোকে শোষণ বা শাসনে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারছে না। পরিবেশ তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে অনেক ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাসকে ধ্বংস করতে পারে কিন্তু বর্তমানে পরিবেশের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বিনষ্ট হওয়ার কারণে তা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। যার ফলে নতুন নতুন রোগ সৃষ্টকারী ভাইরাসের আধিক্য পৃথিবীতে আতঙ্কের নতুন মাত্রা দিচ্ছে।
১৭২০ সালে বিশ্বজুড়ে প্লেগ আতঙ্ক, ১৮২০ সালে এশিয়াতে কলেরা আতঙ্ক, ১৯২০ সালে সারা বিশ্বে ফ্লু আতঙ্ক। ২০২০ সালে করোনার মহামারি আতঙ্ক। মানুষের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিত করা বর্তমানে সবচেয়ে দামি দাবি।
পৃথিবীর প্রতিটি রাষ্ট্রকে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে এই মর্মে, আমরা মরণাস্ত্র বর্জন করব। নতুবা যুগে যুগে লাশের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘায়িত হবে। বিশ্বের সকল রাষ্ট্র মিলে জলবায়ু তহবিলকে শক্তিশালী করতে হবে।
বর্তমান বিশ্বে প্রাণঘাতী আতঙ্কের আরেক নাম করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯)। বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলো ক্ষমতার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য জীবাণু অস্ত্র নামে মরণাস্ত্র তৈরির সামান্যতম রাসায়নিক বিরূপ বিক্রিয়ায় বিশ্বে আজ করোনা ভাইরাসের মহামারি। চীনের অর্থনৈতিক গরম হাওয়ায় ছোবলে আজ করোনা ভাইরাস বিশ্বের হাওয়াকে করেছে দূষিত। চীনের জীবাণু অস্ত্র তৈরির কারখানা ওহান থেকে করোনার সৃষ্টি। এখন সারাবিশ্ব করোনাকে মোকাবিলায় দিশেহারায় লাশের মিছিল দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
সারাবিশ্বে করোনার মহামারি পরিস্হিতির জন্য উন্নত রাষ্ট্রগুলো এককভাবে দায়ী। উন্নত রাষ্ট্রগুলোর চিন্তাচেতনা কোভিড-১৯ এর চেয়েও খবিশ। আজ পর্যন্ত বিশ্বের ১৮২টি দেশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনার ছোবলে মৃত্যুবরণ করেছে। জীবাণু অস্ত্রের সামান্যতম লিক যদি সারাবিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যায়। তাহলে যুদ্ধক্ষেত্রে জীবাণু অস্ত্রের ব্যবহার অথবা যে কোনো কারণে জীবাণু অস্ত্রের বিস্ফারণ ঘটলে কি হতে পারে?
পারমাণবিক অস্ত্র, রাসায়নিক অস্ত্র, জীবাণু অস্ত্র, উৎপাদনকারী দেশগুলোকে গলাটিপে ধরার সময় এসেছে। উন্নত দেশগুলোর মরণাস্ত্র খেলায়, দায়হীন দেশগুলো কেন নীরব দর্শক হবে?
মরণাস্ত্রবাজ রাষ্ট্রগুলোর রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে বলতে হবে ‘হয় মানব ধ্বংসকারী মরণাস্ত্র থাকবে, না হয় মানব থাকবে’। প্রাণীকুলের জন্য পৃথিবী হলে প্রাণীকুল থাকবে, সকল প্রকার মরণাস্ত্র ধ্বংস করতে হবে। তাই করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত দায়হীন দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে, মরণাস্ত্র উৎপাদনকারী দেশগুলোর সাথে পঙ্গপালের মতো আচরণ করতে হবে। একমাত্র ঐক্যবদ্ধতাই মরণাস্ত্র উৎপাদনকারী রাষ্ট্রের দৌরাত্ম্যকে রুখে দিতে পারে।
পরিবেশগত ইকো ব্যালেন্স করতে না পারলে, মরণাস্ত্র উৎপাদনকারী দেশগুলো মুখে প্রতিবাদের থুথু ফেলে, মরণাস্ত্র উৎপাদন বন্ধ করতে না পারলে। বিশ্ববাসীর ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে সকল প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হবে। কারণ কত লাখ ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার করবে বিশ্ব বিজ্ঞানীরা।
‘আমরা মানবিক বিশ্ব চাই, মরণাস্ত্রবাজদের বিশ্ব চাই না।’
ওডি/নূর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড