• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বাংলাকে বিশ্বভাষা করতে কী করণীয়

  রহমান মৃধা

০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২২:০১
রহমান মৃধা
সুইডেন প্রবাসী রহমান মৃধা

বাংলা আমাদের প্রিয় মাতৃভাষা। এ ভাষা রক্ষার জন্য আমরা প্রাণ দিয়েছি। আমাদের স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা অর্জন। চলছে এখন সারাবিশ্বে মাতৃভাষার প্রচলন। ফেব্রুয়ারি মাস চলছে দেশে বইমেলা অনুষ্ঠান।

১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে একটি বিশাল জাতীয় সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

এবারের মেলায় নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বিজয় বায়ান্ন থেকে একাত্তর’ সেই সঙ্গে ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ এবং ২০২১ সালে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উৎযাপন যাত্রাও শুরু হবে এ মেলা থেকে। বাংলা ভাষায় কথা বলে এখন গোটা বিশ্বে প্রায় ৩২ কোটি কিন্তু শুদ্ধ বানানে কত মানুষ এই ভাষা লিখতে পারে? বানান নিয়ে অনেক পণ্ডিতের রয়েছে নানা পরামর্শও।

ভাষা হচ্ছে বহতা নদীর মত। এর মুখে বাঁধ দিলে তা হ্রদে পরিণত হয়, বহমানতা থাকে না। বাংলা ভাষা সংস্কৃতের গর্ভ থেকে উৎপত্তি হয়ে বহু বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে বর্তমানে এই পর্যায়ে এসেছে।

ভাষা বিজ্ঞানী ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ (১৮৮৫-১৯৬৯) বলেছিলেন তার সময়ে, ‘পাঁচ কোটি বাঙালির অধিকাংশই বানান ভুল করে।’

সেই আমল থেকে এখন পৃথিবীতে আমাদের সংখ্যা বেড়েছে অনেক। বর্তমানে আমরা পৃথিবীর মধ্যে এক বৃহত্তম নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী। আমাদের সংখ্যা বর্তমান বিশ্বে প্রায় ৩২ কোটি হলেও আমরা কিন্তু আমাদের ভাষার শব্দগুলোর বানান সম্পর্কে এখনও একমত হতে পারিনি।

ইংরেজি ভাষার বর্ণমালা মাত্র ২৬ টা। তাই দিয়ে ইংরেজিতে সবকিছু লেখা যায়। সেই তুলনায় বাংলা ভাষার বর্ণমালা বেশ বড়। স্বরবর্ণ ১১ টা, ব্যঞ্জনবর্ণ ৩৯ টা, মোট ৫০ টা। এরপর আছে কার চিহ্ন, যুক্তবর্ণ ইত্যাদি নানা বিষয়।

আমরা এখনও ভাষার লিখিত রূপ বা বানান নিয়ে বিভ্রান্ত। ই,ঈ, হ্রস্ব-ইকার, দীর্ঘ-ঈ-কার উ,ঊ, হ্রস্ব-উ-কার,দীর্ঘ-ঊ-কার, ন,ণ, স,শ,ষ, জ,য ইত্যাদি বর্ণ, কার চিহ্ন নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ে বহু মানুষ। অনেকে বানান ভুলের আশঙ্কায় বাংলা লেখে না। অনেকে ইংরেজি হরফে বাংলা ভাষা লিখে মনের ভাব প্রকাশ করে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ও বাংলা ভাষাকে গণমানুষের ভাষা হিসেবে গ্রহণযোগ্য ও বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বাংলা ভাষার লৈখিক রূপের কিছু পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি।

বাংলাভাষা লেখ্য রূপ যদি বাঙালিদের কাছেই স্বাচ্ছন্দপূর্ণ না হয় তাহলে বিদেশীদের কাছে তা কিভাবে জনপ্রিয়তা পাবে? স,শ,ষ এর যেকোনো একটা, ই,ঈ এর মধ্যে যে কোনো একটা, হ্রস্ব-ইকার, দীর্ঘ-ঈ-কার এর মধ্যে যে কোনো একটা উ,ঊ এর যে কোনো একটা, হ্রস্ব-উ-কার,দীর্ঘ-ঊ-কার এর যে কোনো একটা, ন,ণ, এর যে কোনো একটা, জ,য এর মধ্যে একটা, ত, ৎ এর মধ্যে একটা হলে কি ক্ষতি?

একটু উদার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে আমরা নিশ্চিতভাবে বাংলা ভাষাকে আরও সহজভাবে লেখার ব্যবস্থা করতে পারি বৈকি।

ভাষার লিখিত রূপ সহজ সরল করতে পারলে আমরা সহজে বিশ্ব দরবারে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারব এবং সম্ভব হবে, ব্যবসা, বাণিজ্যসহ সকল বিষয়ে যোগাযোগ সহজতর করা।

নিচের দুটো বাক্য লক্ষ্য করা যেতে পারে:

১। আমরা একটি মহান জাতি।

২। আমরা জাতি দিয়ে সুপারি কাটি।

ওপরের বাক্য দুটোতে ‘জাতি’ শব্দটা একই বানানে দুটো ভিন্ন অর্থ বহন করে।‘যাতি’ এর স্থলে ‘জাতি’ দৃষ্টিকটু হলেও বুঝতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না কিন্তু।

ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা উদার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ভাষার লিখিত রূপ সংস্কারের জন্য উন্মুক্ত আলোচনার আয়োজন করি, বাঙালির প্রাণের ভাষায় বাঙালি পৌঁছে যাক বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের কাছে স্বচ্ছন্দে। মোদের গরব,মোদের আশা,আ’মরি বাংলা ভাষা।

চলমান আলোচিত ঘটনা বা দৃষ্টি আকর্ষণযোগ্য সমসাময়িক বিষয়ে আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড